আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
444 views
in সাওম (Fasting) by (2 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।রমাদান ও ইত্তেকাফ নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন।

১)বর্তমানে বাসায় বাবা সব ওয়াক্তের নামাজ জামাতে পড়ান বাসার সবাইকে নিয়ে।এখন সে বাসার একজন মেয়ে ইত্তেকাফে বসবে।সে কি জামাতে নামাজ পড়ার, সময়টুকু তার রুম থেকে বের হয়ে জামাতে নামাজ পড়তে পারবে সবার সাথে? না কি ব্যক্তিগত ভাবে নামাজ পড়াই উত্তম হবে?
২) ইত্তেকাফ করা কালীন সময় ফোনে বা অনলাইন ম্যাসেঞ্জারে কি জরুরি দরকারে কথা বলা বা টেক্সট করতে পারবে?

৩)ইফতারের সময় ব্যক্তিগত ভাবে মোনাজাত করলে বেশি ভাল নাকি পরিবারের সবাই এক সাথে মোনাজাত করলে বেশি ভাল হবে?

৪)রমাদানে বাসায় জামাতে নামাজ পড়ান বাবা।এখন আমাদেরর বাসায় আমাদের এক দূরসম্পর্কের ভাগ্নি আছে।সেও আমাদের সাথে দাড়িয়ে নামাজ পড়ে।এতে কি কোন সমস্যা আছে?

1 Answer

0 votes
by (696,320 points)

বিসমিহি তা'আলা

জবাবঃ-
(১)
গ্রহণযোগ্য ফেকহী কিতাবে উক্ত বিষয় সম্পর্কিত কিছু আলোচনা প্রথমে জেনে নিলে  প্রশ্নের উত্তর বুঝাটা আমাদের জন্য সহজ হবে।
وَلَيْسَ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تَعْتَكِفَ فِي غَيْرِ مَوْضِعِ صَلاَتِهَا مِنْ بَيْتِهَا.
وَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهَا فِي الْبَيْتِ مَكَانٌ مُتَّخَذٌ لِلصَّلاَةِ لاَ يَجُوزُ لَهَا الاِعْتِكَافُ فِي بَيْتِهَا، وَلَيْسَ لَهَا أَنْ تَخْرُجَ مِنْ بَيْتِهَا الَّذِي اعْتَكَفَتْ فِيهِ اعْتِكَافًا وَاجِبًا عَلَيْهَا
ঘরের মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে এ'তেক্বাফ করা নারীদের জন্য জায়েয নয়।যদি ঘরে নামায পড়ার মত কোনো কামরা বা পরিবেশ না থাকে,তাহলে এ'তেক্বাফ করা নারীদের জন্য বৈধ হবে না।নারী যে ঘরে এ'তেক্বাফ শুরু করবে,সেই ঘর থেকে সে বের হতে পারবেন না।
মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-৫/২১২

وليس لها أن تعتكف في غير موضع صلاتها من بيتها وإن لم يكن فيه مسجد لا يجوز لها الاعتكاف فيه ولا تخرج من بيتها إذا اعتكف فيه قال - رحمه الله - (ولا يخرج منه إلا لحاجة شرعية كالجمعة أو طبيعية كالبول والغائط) لما روينا من الأثر عن عائشة - رضي الله عنها - ولما روي عنها أنها قالت «كان النبي - صلى الله عليه وسلم - لا يدخل البيت إلا لحاجة الإنسان إذا كان معتكفا» متفق عليه تريد البول والغائط هكذا فسره الزهري
ঘরের মসজিদ ব্যতীত অন্যত্র এ'তেক্বাফ করা নারীদের জন্য জায়েয নয়।যদি ঘরে কোনো মসজিদ না থাকে তথা নামাযের জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকে।তাহলে উক্ত ঘরে এ'তেক্বাফ করা জায়েয  হবে না। যখন মহিলা কোনো কামরায় এ'তেকাফ শুরু করে দিবে তখন সে মহিলা আর ঐ কামরা থেকে বাহিরে যেতে পারবে না।তবে শরয়ী প্রয়োজনে যেমনঃ জুম্মার সালাত(এটা তখনকার বিধান যখন ফিৎনা ছিলনা), এবং প্রকৃতিগত প্রয়োজন যেমন প্রস্রাব পায়খানা ইত্যাদির জন্য ঐ কামরা থেকে বাহিরে যাওয়া যাবে।
যেমন হয়রত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে-
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এ'তেক্বাফ অবস্থায় জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত মসজিদ থেকে ঘরে আসতেন না।জরুরী প্রয়োজন বলতে প্রস্রাব-পায়খানা উদ্দেশ্য।
তাবয়ীনুল হাক্বাঈক্ব-১/৩৫০

وأما الصمت فالمراد به صمت يعتقده عبادة وهو منهي عنه وعن علي عن النبي - صلى الله عليه وسلم - أنه قال «لا يتم بعد احتلام ولا صمات يوم إلى الليل» رواه أبو داود وهو صوم أهل الكتاب فنسخ ويلازم قراءة القرآن والحديث والعلم والتدريس وسير النبي - صلى الله عليه وسلم - وقصص الأنبياء - عليهم الصلاة والسلام - وحكايات الصالحين وكتابة أمور الدين وأما التكلم بغير الخير فإنه يكره لغير المعتكف فما ظنك بالمعتكف
এ'তেক্বাফ অবস্থায় চুপ থাকা মানে এমন চুপ নয় যা নিষিদ্ধ। যেমন হযরত আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।তিরি বলেন,বালিগ হওয়ার পর কেউ ইয়াতিম থাকেনা।এবং পূর্ণ একদিন চুপ থাকার কোনো নিয়মও ইসলামে নেই।(সুনানু আবি-দাউদ)পূর্ণ একদিন চুপ থেকে রোযা রাখা মূলত আহলে কিতাবদের নিয়ম।এটা আমাদের জন্য মানসূখ হয়ে গেছে।
এ'তেক্বাফকারী ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত,হাদীস পাঠ,জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেওয়া, এবং নবীজী সাঃ এর জীবনী, আম্বিয়ায়ে কেরামদের ঘটনাবলি, হেকায়াতে ছাহাবা ও হেকায়তে সালেহীন সহ বিভিন্ন দ্বীনী বই কিতাব এ'তেক্বাফে বসে অধ্যায়ন করা হবে।
অযথা বেহুদা বকওয়াস সবার জনই মাকরুহ।সুতরাং বেহুদা কথাবার্তা এ'তেক্বাফ কারীর জন্য উত্তমরূপে মাকরুহ হবে।(তাবয়ীনুল হাক্বাঈক্ব-১/৩৫১)

قَالَ قَاضِي خَانْ فِي فَصْلِ الْمَسْجِدِ وَيُكْرَهُ أَنْ يَخِيطَ فِي الْمَسْجِدِ لِأَنَّ الْمَسْجِدَ أُعِدَّ لِلْعِبَادَةِ دُونَ الِاكْتِسَاب وَكَذَا الْوَرَّاقُ وَالْفَقِيهُ إذَا كَتَبَ بِأَجْرٍ أَوْ الْمُعَلِّمُ إذَا عَلَّمَ الصِّبْيَانَ بِأَجْرٍ وَإِنْ فَعَلُوا بِغَيْرِ أَجْرٍ فَلَا بَأْسَ بِهِ وَعَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سَلَمَةَ إذَا قَعَدَ الرَّجُلُ فِي الْمَسْجِدِ خَيَّاطًا يَخِيطُ فِيهِ وَيَحْفَظُ الْمَسْجِدَ عَنْ الصِّبْيَانِ وَالدَّوَابِّ لَا بَأْسَ بِهِ. اهـ.
কাযীখান রাহ মসজিদের ফযিলত সম্পর্কে বলেন,
মসজিদে সিলাই কাজ করা মাকরুহ।কেননা মসজিদকে কাজের জন্য বানানো হয়নি।বরং ইবাদতের জন্য বানানো হয়েছে।যদি হস্তলিপি লিখক বা কোনো ফকিহ মসজিদে বসে বিনা পারিশ্রমিকে মুসহাফ লিখেন বা শিক্ষাপ্রদান করেন তাহলে জায়েয,নতুবা সেটা মাকরুহ হবে।
(হাশিয়াতুশ শিলবি-তাবয়ীনুল হাক্বাঈক্ব-১/৩৫২)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
যে মহিলা এ'তেক্বাফে বসতে চাচ্ছেন, উনি মূলত ঘরের মসজিদ তথা বাড়ীর যে কামরায় সাধারণত নামায আদায় করা হয়,সে কামরাতেই এ'তেক্বাফে বসবেন।তাহলে আর নামাযের জন্য অন্য কোথাও যেতে হবে না।

(২)
এ'তেক্বাফে বসে মসজিদ থেকে বেরিয়ে বাহিরে এক মূহুর্ত অবস্থান করলে ইমাম আবু-হানিফা রাহ এর মাযহাব মতে এ'তেক্বাফ নষ্ট হয়ে যায়।আর অন্যান্য উলামাদের মতে দিনের অধিকাংশ সময় মসজিদের বাহিরে অবস্থান করলে এ'তেক্বাফ নষ্ট হয়ে যায়।

এ'তেক্বাফে বসে দ্বীনী আলোচনা করা জায়েয।এবং প্রয়োজনে দুনিয়াবি ভালো আলোচনা করাও জায়েয রয়েছে।

এ'তেক্বাফে বসে মুবাইল কল বা মেসেঞ্জার চ্যাটে কথা বলা কি জায়েয?

এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে,

এভাবে কথা বললে যদিও এ'তেক্বাফ নষ্ট হবে না।কেননা উনি তো আর মসজিদ থেকে বাহিরে চলে যাচ্ছেন না।তবে এ ভাবে কথা বলা এ'তেক্বাফের উদ্দেশ্যর পরিপন্থী। কেননা এ'তেক্বাফের উদ্দেশ্যই হল,দুনিয়াবি সকল বিষয় থেকে নিজেকে ফারিগ করে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনে নিয়োজিত করা।

সুতরাং মকবুল এ'তেক্বাফের জন্য করণীয় হল,মুবাইল, মেসেঞ্জার সুইচ অফ সহ যাবতীয় দুনিয়াবি জিনিষ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা।

(৩)

হাদীসে বর্ণিত ইফতার সম্পর্কীয় দু'আয়ে মা'ছুরা সমূহ মূলত একাকিভাবেই পড়া উচিৎ।

ইফতারের দু'আ সমূহ জানতে ভিজিট করুন-  1254

তবে চাইলে ইফতারের সময় সম্মিলিত ভাবে মুনাজাতও করতে পারবেন।

একবার মুসা আঃ দু'আ করেছিলেন,হারুন আঃ সাথে সাথে আমীন বলেছিলেন।

যেমন সূরায় ইউনুসে এসেছে-
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺁﺗَﻴْﺖَ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ ﻭَﻣَﻸﻩُ ﺯِﻳﻨَﺔً ﻭَﺃَﻣْﻮَﺍﻻً ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻟِﻴُﻀِﻠُّﻮﺍْ ﻋَﻦ ﺳَﺒِﻴﻠِﻚَ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻃْﻤِﺲْ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟِﻬِﻢْ ﻭَﺍﺷْﺪُﺩْ ﻋَﻠَﻰ ﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻢْ ﻓَﻼَ ﻳُﺆْﻣِﻨُﻮﺍْ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺮَﻭُﺍْ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏَ ﺍﻷَﻟِﻴﻢَ
মূসা বলল, হে আমার পরওয়ারদেগার, তুমি ফেরাউনকে এবং তার সর্দারদেরকে পার্থব জীবনের আড়ম্বর দান করেছ, এবং সম্পদ দান করেছ-হে আমার পরওয়ারদেগার, এ জন্যই যে তারা তোমার পথ থেকে বিপথগামী করব! হে আমার পরওয়ারদেগার, তাদের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দাও এবং তাদের অন্তরগুলোকে কাঠোর করে দাও যাতে করে তারা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান না আনে যতক্ষণ না বেদনাদায়ক আযাব প্রত্যক্ষ করে নেয়।

আল্লাহ তা'আলা এই দু'আর জবাবে বলেন,
ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺪْ ﺃُﺟِﻴﺒَﺖ ﺩَّﻋْﻮَﺗُﻜُﻤَﺎ ﻓَﺎﺳْﺘَﻘِﻴﻤَﺎ ﻭَﻻَ ﺗَﺘَّﺒِﻌَﺂﻥِّ ﺳَﺒِﻴﻞَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻻَ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ
বললেন, তোমাদের দু'জনের দোয়া মঞ্জুর হয়েছে। অতএব তোমরা দুজন অটল থাকো এবং তাদের পথে চলো না যারা অজ্ঞ।(সূরা ইউনুস-৮৮-৮৯দেখুন এই আয়াতে মুসা আঃ এবং হারুন আঃ এক সাথে দু'আ করেছিলেন।

তাই ইফতারের সময় আপনি চাইলে সম্মিলিত দু'আও করতে পারবেন।এবং চাইলে একাকিও পড়তে পারেন।তবে যতগুলো দু'আয়ে মা'ছুরা বর্ণিত রয়েছে,ততগুলো দু'আ একা একা পড়াই সুন্নত।

(৪)
জ্বী, সেও আপনাদের সাথে শরীক হতে পারবে।তবে নামাযের কাতার এভাবে রাখবেন,
যে ইমামের পিছনে প্রথম কাতার পুরুষদের।তারপর বাচ্ছাদের।তারপর মহিলাদের।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
জাযাকাল্লাহ খাইরান।আসলে আমাদের যে ব্যক্তিগত কক্ষ সেখানেই নামাজ পড়া হয়।কিন্ত এ বছর যেহেতু লক ডাওনে বাবা বাসায় তাই তিনি জামাতে নামাজ ড্রয়িং রুমে পড়ান।ইত্তেকাফ চলাকালীন এই জন্যই সে রুমে যাওয়া যাবে কিনা নামাজ পড়তে তা জানতে চেয়েছিলাম।কারণ ড্রয়িং রুমে ইত্তেকাফ করা যাবেনা কারণ সেখানে তো মেহমান আসে মাঝে মাঝে।তবে যে রুমে ইত্তেকাফে বসা হবে সে রুমে ব্যক্তিগত ইবাদত করা সম্ভব আলহামদুলিল্লা। তাহলে সে ক্ষেত্রে কোন টা উত্তম হবে?যে রুমেই বসবে সেখানেই নামাজ পড়ে নেয়া নাকি রুম থেকে পাশের রুমে জামাতে যাওয়া?জাযাকাল্লাহ খাইরান।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 176 views
0 votes
1 answer 139 views
...