আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (27 points)
১।মোবাইলে বা মাইকে বা বাস্তবে কোরআন তিলাওয়াত আসলে যদি না শুনি  ইচ্ছে করে না বা অন্য কাজ আছে করলে  এজন্য কি গোনাহ হবে কি আল্লাহ পাক রাসুল সাঃ উনাদের মহব্বতে সমস্যা হবে কি ?
২।মনে আসলো কোনো  আমল করতে কিন্তু ইচ্ছে করে না এজন্য করিনা  যেমন কোরআন তিলাওয়াত,তাহাজ্জুদ, ইশরাক নামাজ, দান সদকা ইত্যাদি না করলে গোনাহ হবে কি আল্লাহ পাক রাসুল সাঃ উনাদের মহব্বতে সমস্যা হবে কি?
৩।একটা ইউটিউব চেনেলে জিনের ঘটনা শুনি  আফনান দ্যা হরর ওয়ার্ল্ড সেখানে তিনি জিনের ঘটনাতে ইসলামিক ব্যাখা দেওয়ার চেষ্টা করে সেখানে তিনি মানুষের পাঠানো  ঘটনা উনার কন্ঠে বলেন। সেখানে বলে তুলা রাশির মানুষের উপর জিন হাজির করে। আরেকটা গল্পের শিরোনাম ছিলো আরারাত দ্যা লর্ড অফ আন্ডার ওয়ার্ল্ড। লর্ড আল্লাহ পাক ছাড়া কাউকে বলা যাবে কি না। এসব ঘটনা শুনলে গুনাহ হবে কি না ইমানে সমস্যা হবে কি না?
৪।৩ণং প্রশ্নের ঘটনা যদি শুনা না যায় তাহলে এসব বিষয় আসলে যথাসাধ্য চেষ্টা করে শুনা বন্ধ করে টেনে শুনলে সমস্যা হবে কি?


৫।অনেক কবিরাজ বলে তুলা রাশির উপর জিন হাজির করে এ বিষয় টা কি রাশি বলতে কিছুই নাই তারা এরকম টা কেনো করে ?

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
কুরআন তিলাওয়াত হলে,সেই তিলাওয়াত শ্রবণ করা ওয়াজিব।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَإِذَا قُرِىءَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُواْ لَهُ وَأَنصِتُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়।(সূরা আরাফ-২০৪)

https://www.ifatwa.info/2265/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
কুরআন শ্রবণের বিধান সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে মাতবিরোধ রয়েছে।হানাফি মাযহাবের উলামায়ে কেরাম বলেন,ওয়াজিব।এবং বিধান কেফায়া পর্যায়ের বিধান। হাম্বলী মাযহাব মতে মুস্তাহাব।

সুতরাং যারা ওয়াজিব বলেন,তাদের মাযহাব অনুযায়ী কুরআন শ্রবণের সময় নিশ্চুপ থেকে শ্রবণ না করলে শ্রবণকারী গোনাহগার হবে।আর যারা মুস্তাহাব বলেন,তাদের মতে শ্রবণ না করলেও গোনাহ হবে না।

কর্মব্যস্ততায় কুরআন শ্রবণ না করলে কি গোনাহ হবে?
ويعذر المستمع بترك الاستماع لتلاوةالقرآن الكريم، ولا يكون آثما بذلك - بل الآثم هو التالي، على ما ذكره ابن عابدين - إذا وقعت التلاوة بصوت مرتفع في أماكن الاشتغال، والمستمع في حالة اشتغال، كالأسواق التي بنيت ليتعاطى فيها الناس أسباب الرزق، والبيوت في حالة تعاطي أهل البيت أعمالهم من كنس وطبخ ونحو ذلك وفي حضرة ناس يتدارسون الفقه، وفي المساجد، لأن المساجد إنما بنيت للصلاة، وقراءة القرآن تبع للصلاة، فلا تترك الصلاة لسماع القرآن فيه. وإنما سقط إثم ترك الاستماع للقرآن في حالات الاشتغال دفعا للحرج عن الناس. قال تعالى - {وما جعل عليكم في الدين من حرجvvb}  وإنما أثم القارئ بذلك، لأنه مضيع لحرمة القرآن.
যদি কেউ কাজে লিপ্ত থাকার ধরুণ কুরআন শ্রবণ করতে না পারে, তাহলে এমতাবস্থায় কুরআনের তেলাওয়াত শুনাকে তরক করার ব্যাপারে ঐ ব্যক্তি মা'যুর হিসেবে গণ্য হবে।সে গোনাহগার হবে না।বরং ইবনে আবেদীন শামী রাহ এর মতে এক্ষেত্রে তেলাওয়াত কারীই গোনাহগার হিসেবে গণ্য হবে।যদি কেউ ব্যস্ত এলাকায় উচ্ছস্বরে তেলাওয়াত করে,আর তথায় লেকজন কাজে মশগুল থাকে।যেমন বাজারে-যাকে লেনদেনের জন্যই তৈরী করা হয়েছে- এবং ঐ ঘরে -যাতে লোকজন রান্নাবান্না, ঝাড়ু সহ বিভিন্ন কাজে লিপ্ত- কিংবা এ এমন কোনো মজলিসে যেখানের লোকজন ফিকহ শিখায় ব্যস্ত অথবা মসজিদে -যা নামাযের জন্য তৈরী হয়েছে।(সুতরাং এমন স্থান সমূহে তেলাওয়াত না শুনলে শ্রবণকারী গোনাহগার হবে না)
তেলাওয়াতে কুরআন নামাযের তা'বে। সুতরাং তেলাওয়াতে কুরআনের জন্য নামাযকে পরিত্যাগ করা যাবে না।ব্যস্ততার সময়ে কুরআন শ্রবণ না করলে গোনাহ হবে না।এজন্য যে, যাতেকরে লোকজনের উপর সামর্থ্যর অধিক দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া না হয়।কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ 
তিনি তোমাদেরকে পছন্দ করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা রাখেননি। (সূরা হাজ্ব-৭৮)এক্ষেত্রে তেলাওয়াত কারীই গোনাহগার হবেন।(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-৪/৮৬)

শরীয়তের বিধান হলো মাইকে উচ্চস্বরে কুরআন তেলাওয়াত করা,(যেখানে আওয়াজ যতদুর পর্যন্ত পৌছে,সকলের  মনযোগ সহকারে না শোনার সম্ভাবনা রয়েছে) কুরআনের সাথে কঠিন বেয়াদবির শামিল। 
ইমাম সাহেবকে বুঝানোর পড়েও যদি সে এহেন কাজ থেকে বিরত না থাকে,তাহলে তার পিছনে নামাজ মাকরুহ থেকে খালি নয়। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১২/৪৩১)  

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কাজের ব্যস্ততার দরুন কেউ যদি তিলাওয়াত না শোনেন,সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।

তবে কাজের ব্যস্ততা না থাকলে সেই তিলাওয়াত না শুনলে গুনাহ হবে।

আল্লাহ পাক রাসুল সাঃ উনাদের মহব্বতে সমস্যা হবেনা।

(০২)
এগুলো যেহেতু নফল ইবাদত,সুতরাং এধরণের ইবাদত না করলে গুনাহ হবেনা।

আল্লাহ পাক রাসুল সাঃ উনাদের মহব্বতে সমস্যা হবেনা।

(০৩)
শরীয়াহ বিরোধী কিছু বললে সেগুলো শোনা যাবেনা। সহীহ আকীদা বিরোধী কিছু বললে সেক্ষেত্রে ঈমানের সমস্যা হবে।

(০৪)
না,সমস্যা হবেনা।

(০৫)
রাশির উপর বিশ্বাস করা ঈমানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। 

তুলা রাশির উপর জিন হাজির করা যায়,অন্যদের উপর একেবারেই করা যায়না,বিষয়টি সঠিক মনে হয়না।

সুতরাং রাশির উপর বিশ্বাস রাখা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...