আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
43 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited by

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ। আমার বয়স যখন ১৬ তখন এক দূর্ঘটনার কারণে আমি আমার পরিবার থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ি। এক্সিডেন্ট ছিলো আর এই কারণে আমার ডিমেনশিয়া দেখা দেয়। এর ফলে আমার তখন কিছুই মনে ছিল নাহ। তখন আমি যে পরিবারে ছিলাম (তারা আমার আসল পরিবার নয়,আমাকে তারা কোনোভাবে খুঁজে পেয়েছিল। তাদের আমি বোঝানোর জন্য "ক" পরিবার বলবো) তারা আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো ছিলো,অনেক যত্ন করতো৷ আমি তখনও জানতাম না যে, আমি "ক" পরিবারের সদস্য নই। যেহেতু ডিমেনশিয়ায় ভুগছিলাম তেমন কিছুই মনে থাকতো না। তারা আমাকে বলেছিল আমার রোগের কারণেই তাদের আমি চিনতে পারিনি।তো তখন আমি অলওয়েজ চিকিৎসা নিতাম আমার ডিমেনশিয়ার জন্য। আর তার কারণে এটা কিছুটা কমে আসে,মানে চিকিৎসার অধীনে থাকার ফলে আমার ডিমেনশিয়া ধীরে ধীরে কমতে থাকে যেহেতু এটা ট্রমাটিক ব্রেন ইনজুরির পরের ডিমেনশিয়া ছিলো। সেখানে তারা যৌথ পরিবারে থাকতো,পর্দা করা হতো নাহ। আমিও করতাম না। কিন্তু তাদের সাথে ৮ মাসের মতো থাকার পরেই আমার আসল ফ্যামিলি যে, আমার হারানোর কেস ফাইল করেছিলো এবং খুঁজতেছিলো, তারা আমার খোঁজ পায়। "ক" পরিবারের সাথে কথা বলে আমার সাথেও কথা বলে কিন্তু কিভাবে কি হয়েছে তা বিস্তারিত জানায় না আামকে, আমার ডিমেনশিয়ার কারণে। তারপরে আমি আমার আসল পরিবারে এসে থাকলেও "ক" পরিবারের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করিনি মূলত তারা করতে দেয়নি! ৮ মাস তাদের এমন কোনো আচরণ আমি দেখেনি যেখানে তারা আমার উপর বিরক্ত ছিল। তাই আমিই চায়নি সম্পর্কটা ছিন্ন করতে মূলত আমি ওদেরকে আমার একটা পরিবারই মনে করি এখন। তাই ওই বাসায় গিয়েও থাকা হয় মাঝে মধ্যে। 

মূল সমস্যা হলো, আমার ফ্যামিলি দ্বীন মেনে চলে আলহামদুলিল্লাহ, আমিও তাদেরই মতো থাকার চেষ্টা করি। এখন আমার কথা হচ্ছে "ক" পরিবারেও কিন্তু আমার মা-বাবা ছিলো তখন। তাদের আমি মা-বাবাই ডাকি। কিন্তু যেহেতু এখন আমি জানি, তাদের সাথে আমার কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই তাহলে কি আমি আমার "ক" পরিবারের বাবা-চাচার সাথে দেখা দিতে পারবো? এখন "ক" পরিবারের অন্য পুরুষদের থেকে আমি পর্দা করেই চলি সেখানে গেলে, কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো আমি কি আব্বু-চাচ্চুর দেখা করতে পারবো?চাচ্চু না-হোক আব্বুর সাথে কি দেখা দিতে পারবো? (আমার আসল ফ্যামিলি আমার তাদের মা-বাবা ডাকা কিংবা গিয়ে সেখানে থাকা নিয়ে আপত্তি নেই, কারণ ওই পরিবারের উছিলায় আমি এখনো জীবিত।)

by
আপনি যে পরিবারে গিয়েছিলেন তাদের কি কোন সন্তান ছিল না এজন্য কি আপনাকে এতো স্নেহ করেছে? আমি অবশ্য এমন কোনো পরিবার চিনি না। তাই আপনাকে সেখান থেকে চিনব না। চাইলে আপনি উত্তর দিতে পারেন।
by (1 point)
সন্তান আছে আর এটাই অবাক করা যে,তারা এরপরও আমাকে কোনো প্রকার অবহেলা কিংবা খারাপ আচরণ করেনি। 

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/102883/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
সন্তান দত্তক নেওয়া মানে কোনো সন্তানের লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করা, অভিবাবকত্ব গ্রহণ করা ও জিম্মাদারি নেওয়া।তা ইসলামে সমর্থিত একটি বিষয়।

ইসলামে অন্য কারো সন্তান লালন-পালন ও তার অভিভাবকত্ব নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। যদি কোনো এতিম, গৃহহীন বা অবহেলিত শিশুকে নিজের সন্তানের ন্যায় অন্ন-বস্ত্র ও সব ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে লালন-পালন করে অথবা নিঃসন্তান দম্পতি কোনো শিশুকে স্নেহ করে লালন-পালন করে তাকে স্বেচ্ছায় কিছু দান করে, তাহলে শরিয়তে তা নিষিদ্ধ নয়। এতিম-অনাথ ও গরিব শিশুর অভিভাবকত্ব নিয়ে তার দেখাশোনার দায়িত্ব গ্রহণ করে তাকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাকে ইসলাম উত্সাহিত করে। ইসলাম এ ধরনের কাজকে অনেক বেশি সওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা করেছে। 

হাদীস শরীফে এসেছে
নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি ও এতিমের অভিভাবক জান্নাতে দুই আঙুলের ন্যায় অতি কাছাকাছি থাকব।’ (বুখারি : ৬০০৫)
নবী করিম (সা.) আরো ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি এতিমের খোরপোশ ও লালন-পালনের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাত দান করবেন।’ (তিরমিজি : ১৯১৭)

পালিত সন্তান কখনো নিজ সন্তান হবে না, পালিত সন্তান ওরাছতের মালিক ও হবে না।
সুতরাং পালিত মেয়ে সন্তান উক্ত ব্যক্তির গায়রে মাহরাম থাকবে।যাকে উক্ত ব্যক্তি প্রয়োজনে বিবাহ ও করতে পারবে।ঠিকতেমনিভাবে পালিত পুত্র সন্তান উক্ত ব্যক্তির স্ত্রী বা মেয়ের গায়রে মাহরাম।যাদের মধ্যকার বিবাহ বৈধ।সুতরাংতাদের মধ্যকার শরয়ী পর্দার বিধান আপতিত হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

বাচ্চা দত্তক নেয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু মাসয়ালা লক্ষ্য রাখতে হবে,তাহা হলোঃ-
 
★পিতৃপরিচয় ছিন্ন করা অবৈধ।
দত্তক নেওয়ার সময় স্মরণ রাখতে হবে, চুক্তিপত্রে সই করে সন্তানের পিতৃপরিচয়স্বত্ব ত্যাগ করে এমনভাবে দেওয়া যাবে না যে মা-বাবা আর কখনো ওই শিশুর মা-বাবা হিসেবে পরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না। ইসলাম এ কাজ কখনো সমর্থন করে না। কেননা ইসলাম সওয়াবের নিয়তে অসহায়ের পাশে দাঁড়াতে বলেছে, কিন্তু সন্তান দখল করা কিংবা তার প্রকৃত পরিচয় বিলুপ্ত করার অনুমতি দেয়নি। অনেক সময় দেখা যায়, টাকার বিনিময়ে গরিব মা-বাবা সন্তান দত্তক দেন। এটাকে এক ধরনের সন্তান বেচাকেনাও বলা যেতে পারে। এটি কেবল অমানবিকই নয়, ঘৃণ্যও বটে। ইসলামে এ ধরনের স্বাধীন মানুষ ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ হারাম। 
,
নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামতের দিন আমি তিন ব্যক্তির প্রতিপক্ষ হব—এক. ওই ব্যক্তি, যে কোনো কাজে আমার নামে কারো সঙ্গে কসম করার পর তা ভঙ্গ করেছে। দুই. যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন মানুষ বিক্রি করে সম্পদ অর্জন করেছে। তিন. আর যে ব্যক্তি কোনো লোক দিয়ে কাজ করিয়ে তার বিনিময় দেয়নি।’ (বুখারি : ২২২৭)
,
★লালন-পালনকারীর সঙ্গে পালিত সন্তান পর্দার ক্ষেত্রেও পুরোপুরি ইসলামের বিধান রক্ষা করে চলতে হবে। নিজ হাতে লালন-পালন করেছি বলে পর্দার বিধান লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। অর্থাত্ পালক নেওয়া শিশুটি ছেলে হলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাকে পালক নেওয়া মায়ের সঙ্গে পর্দা করতে হবে। অন্যদিকে পালক নেওয়া শিশুটি মেয়ে হলে তাকে পালক নেওয়া বাবার সঙ্গে পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। কেননা ইসলামী শরিয়ত মতে, দত্তকসংক্রান্ত সম্পর্ক কখনো বংশীয় সম্পর্কে পরিণত হয় না। এমনকি তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কও অন্য সাধারণ মানুষের ন্যায়ই বৈধ। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। (তুহফাতুল ফুকাহা : ২/১২৩)

বিস্তারিত জানুনঃ   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে "ক" পরিবারের সকল পুরুষদের থেকেই আপনার পূর্ণ পর্দা করে চলতে হবে।

তাদের মধ্যে থেকে যাকে আপনি আব্বু চাচ্চু বলে ডাকছেন,তাদের থেকেও আপনার পূর্ণ পর্দা করে চলতে হবে।

মূলত তারা সকলেই আপনার গায়রে মাহরাম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...