আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (18 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,

আমার স্বামী আমাকে তালাকে তাফবীজ এর অধিকার দিয়েছিলেন যে "সে যদি কখনো আমাকে জোড় জুলুম করে আমার গায়ে হাত তোলে তাহলে আমি তালাক গ্রহন করতে পারি"।

কিছুদিন আগে আমাদের মধ্যে অনেক বড় ঝামেলা হয়।এক পর্যায়ে একটা ঘটনায় আমার মনে হয় যে আমাদের তালাক হয়ে গিয়েছে।। কিন্তু সে কিছুতেই মানতে চাচ্ছিলো না যে আমাদের তালাক হয়ে গিয়েছে।  আমি বার বার তাকে বলছিলাম যে "আমাকে মুক্তি দাও,আমাকে যেতে দাও"।। কিন্তু সে জোড় করছিলো যে থাকতে হলে তার সাথেই থাকতে হবে তার সাথেই সংসার করতে হবে।।যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে হাত পা বেঁধে রাখবে।।। আমাকে জোড় করছিলো সে।।মারাত্মক জোড়।।তার জোড় করা আমার কাছে জোড় জুলুম আর অত্যাচার এর মতো ছিলো।কিছুতেই আমি তার সাথে থাকতে চাচ্ছিলাম না।। তারপর এই জোড় করার জন্য আমি তালাক গ্রহন করি কারন সে আমাকে জোড় করেছে এক্ষেত্রে তো অধিকার এর শর্ত এসেছে। পরবর্তীতে প্রমান হয় যে আমার স্বামী ই ঠিক আমাদের কোনো তালাক হয় নি।।।

প্রশ্ন:

১। আমি তাকে ছেড়ে যেতে চাচ্ছিলাম আর চাচ্ছিলাম সে মুখ দিয়ে ফাইনাল ৩ তালাক দেন কিন্তু সে আমাকে জোড় করে তার সাথে রেখেছে আমাকে ছাড়েনি।। এতে আমার স্বামী যে  তালাক এর অধিকার দিয়েছে তা প্রতিফলিত হয়েছে?? ( সে অনেক রাগান্বিত হয়ে জোড় করছিলো। যে পঙ্গু হয়ে হলেও তোর আমার সাথে থাকতে হবে)

২। সংসার টিকাতে সে জোড় করেছে।  কারন তার মনে হয়েছে তালাক হয়নি।।পরবর্তীতে একজন মুফতি ঘটনার বর্ণনা শুনে বলেন যে আমার স্বামী ই ঠিক।।এক্ষেত্রে ভালো কারনে সে জোড় করেছে।।।এখন কি আমি ধরে নিবো তালাক এর অধিকার এর  শর্ত প্রতিফলিত হয়েছে?? ( যা বলেছেন মুখ দিয়ে বলেছেন গায়ে হাত তোলেননি)
৩। সে জোড় করেছে তার সাথে থাকার জন্য তাই আমি  ভেবেছি আমার স্বামী আমায় জোড় করে রেখেছে তাহলে তো আমার তালাক এর অধিকার প্রতিফলিত হয়েছে এর জন্য আমি তালাক গ্রহন করেছি এখন কি আমাদের তালাক হয়ে গিয়েছে?? (সে আমাকে এমন জোড় করছিলো যে আমার কাছে তার জোরজবরদস্তি গুলো জোড় জুলুম এর মতোই ছিলো,আমার কাছে তার ব্যবহার মানসিক অত্যাচার এর মতো ছিলো।আমি অনেক বিরক্ত ছিলাম,অতিষ্ট ছিলাম।  কিন্তু  গায়ে হাত তোলেননি একবারও )
৪। আরেকটা বিষয় হলো, তখন আমি এটাও ভাবছিলাম যে তালাক হোক বা না হোক এই সম্পর্কে আমি আর থাকতে চাচ্ছি না।  আমার কাছে সম্পর্ক টা বোঝা মনে হচ্ছিলো।।কারন কোনো কারনে তালাক হয়ে গেলে সারাজীবন হারামে কিভাবে থাকবো?? কিন্তু  সে বারবার জোড় জুলুম করে আমাকে রেখেছে।।। (কিন্তু গায়ে হাত তোলেননি একবারও)

নোট: ঝগড়ার মধ্যে আমি যখন বলতাম আমাকে জোড় করে জুলুম করে রাখবা?? তখন সে বলত  হ্যা এভাবেই রাখবো।।। আমি তার কাছে আটকে ছিলাম কারন আমার মনে হচ্ছিলো যে ৩ তালাক দিলে আমি ক্লিয়ার হয়ে যেতে পারি।। কিন্তু সে দিচ্ছিলেন না ৩ তালাক কোনো ভাবেই।।  ( তবে সে একবারও গায়ে হাত তোলেননি)। আমি বারবার তার কাছে মুক্তি চাচ্ছিলাম তাই সে আমাকে জোড় জবরদস্তি  করেছেন।। ২ টা জীবনের প্রশ্ন তাই।।

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।

আরো জানুনঃ- 

★শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়,আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 

তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
 
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।    

সুতরাং  যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ 
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্বামী যেহেতু আপনার গায়ে হাত তোলেনি, আপনাকে প্রহার করেনি সুতরাং আপনি তালাকের অধিকার পাবেন না।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক এর অধিকার এর শর্ত প্রতিফলিত হয়নি।

(০৩)
না,তালাক হয়নি।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে তালাক পতিত হয়নি।

আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক আগের মতোই বহাল রয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...