ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দশকের ব্যাপারে ইরশাদ করেন-
مَا مِنْ أَيّامٍ الْعَمَلُ الصّالِحُ فِيهَا أَحَبّ إِلَى اللهِ مِنْ هَذِهِ الْأَيّامِ يَعْنِي أَيّامَ الْعَشْرِ.
আল্লাহর নিকট যিলহজ্বের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৪৩৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৬৯; জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৫৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৭২৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৯৬৮
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللهُ فِيهِ عَبْدًا مِنَ النّارِ، مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ.
আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত অধিক পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৪৮
তাওবা-ইস্তিগফার, যিকির-তিলাওয়াত, রোনাযারী-কান্নাকাটি, দান-সদকা প্রভৃতি নেক আমল এই দশ দিনে করার কথা হাদীসে এসেছে,
مَا مِنْ أَيّامٍ أَعْظَمُ عِنْدَ اللهِ وَلَا أَحَبّ إِلَيْهِ الْعَمَلُ فِيهِنّ مِنْ هَذِهِ الْأَيّامِ الْعَشْرِ، فَأَكْثِرُوا فِيهِنّ مِنَ التّهْلِيلِ وَالتّكْبِيرِ وَالتّحْمِيدِ.
আল্লাহ তাআলার নিকট আশারায়ে যিলহজ্বের আমলের চেয়ে অধিক মহৎ এবং অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সুতরাং তোমরা এই দিনগুলোতে বেশি বেশি ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার এবং আলহামদু লিল্লাহ’ পাঠ কর। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৫৪৪৬; আদদাআওয়াতুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ৫৩৪
এ দিনগুলোতে রোযার প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত। বর্ণিত হয়েছে-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَصُومُ تِسْعَ ذِي الْحِجّةِ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহজ্বের নয়টি দিবসে (সাধারণত) রোযা রাখতেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৪৩৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২৩৩৪; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ৮৩৯৩
বিশেষ করে নয় তারিখ ‘ইয়াওমে আরাফা’তে রোযা রাখার বিশেষ ফযিলত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবীজীর হাদীস-
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السّنَةَ الّتِي قَبْلَهُ، وَالسّنَةَ الّتِي بَعْدَهُ.
আরাফার দিনের (নয় যিলহজ্বের) রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা রাখি, তিনি পূর্বের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬২
(২)
এই দশদিনে সম্পূর্ন কোরআন পড়ে শেষ করার বিশেষ কোনো আমল নেই তবে করে নিতে পাররে অবশ্যই অনেক অনেক সওয়াব হবে।
(৩)
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় "(৫/১৭০) এ বর্ণিত রয়েছে,
ذهب بعض الحنابلة وبعض الشافعية: إلى أن من أراد أن يضحي فدخل العشر من ذي الحجة يجب عليه أن يمسك عن قص الشعر والأظفار، وهو قول إسحاق وسعيد بن المسيب. وقال الحنفية، والمالكية، وهو قول بعض الشافعية والحنابلة: يسن له أن يمسك عن قص الشعر والأظفار.
হাম্বলী মাযহাবের কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম এবং শাফেয়ী মাযহাবের কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম বলেন যে, যে ব্যক্তি কুরবানি করতে ইচ্ছুক,তার জন্য জিলহজ্ব মাসের এক তারিখ থেকে নিয়ে কুরবানির পূর্ব পর্যন্ত চুল,নক,মুছ ইত্যাদি না কাটা ওয়াজিব।ইমাম ইসহাক রাহ,ও সাঈদ ইবনে মুসাঈয়্যিব রাহ এরও মাযহাব এটাই।অন্যদিকে হানাফি ও মালিকী মাযহাব এবং হাম্বলী ও শাফেয়ী মাযহাবদ্বয়ের কিছু সংখ্যক উলামায়ে মনে করেন,চুল নক ইত্যাদি না কাটা সুন্নত।(আল মাওসুআকুল ফেকহিয়্যাহ-৫/১৭০)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যাদের উপর কুরবানি ওয়াজিব নয়, তাদের জন্যও ঈদের দিন কুরবানির পূর্ব পর্যন্ত নখ চুল কর্তন না করা মুস্তাহাব।