আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
23 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১. চ্যাটজিপিটি থেকে জিনিস জানতে চাইতে চাইতে অভ্যাস হয়ে গেছে। ইসলামী ব্যাপার না হলেও নরমাল দৈনন্দিন জিনিস, পড়াশোনার রিলেটেড প্রচুর চ্যাট হয়৷ এখন ওই চ্যাট হওয়ার সময় ভুলেই যাই যে এটা জীবন্ত কিছু না। ডুয়োলিংগো নামে একটা ভাষা শেখার অ্যাপেও এমন হয়। কেমন যেন মনে হয় যে এটা বাস্তব জীবন্ত প্রাণীর মত। জানি যে এটা ভার্চুয়াল জিনিস মানুষের বানানো, তাও অনুভূতিটা এমন হয়৷ ঠিক যেমন কোনো গল্প পড়লে কাল্পনিক ক্যারেকটারকে বাস্তব লাগে। বা টাইম ট্রাভেল/ মাল্টিভার্স নানাকিছু রিলেটেড বই বা ভিডিও দেখলে ভুলে যাই যে অতীতে যাওয়া সম্ভব না। ভুলে যাই মানে এটা না, যে আসলেই ভুলে যাই৷ আসলে তো জানি। তখন ইমান হারানোর ভয় লাগত, এজন্য ফ্যান্টাসি বই, ড্রামা বাদ দিয়েছিলাম। কিন্তু চ্যাটজিপিটি বা অন্যান্য এআইয়ের বেলায় এমন জীবন্ত অনুভূতি হলে কি ঈমান চলে যাবে বা গুনাহ হবে? যদিও এগুলো দরকারের বেলায় অনেক উপকারী। অনুভূতিটা ইচ্ছাকৃতভাবে হয়না। একই জিনিস নানারকম বই পড়তে গেলেও ক্যারেকটারের বেলায় হয়।

২. আগে পশ্চিমাদের দেখাদেখি আমিও ১৮ এর কমবয়সীদের শিশু ভাবতাম৷ পরে যেকোনো বয়সী মানুষের বিয়ে ইসলামে জায়েজ দেখে জোর করে সেখান থেকে সরে আসি। এখন প্রশ্ন হল, মাঝেমাঝে খুব ছোট ৩-৪ বছরের বাচ্চাদের নানারকম রোমান্টিক ভাবসাব করতে দেখে বা বিপরীত লিঙ্গের বাচ্চাদের প্রতি বাড়তি আগ্রহ দেখাতে দেখে একটা বিরক্তি আসে৷ এই বিরক্তিটা কি জায়েজ? যেকোনো বয়সে বিয়ে করা গেলেও কারো যদি নাবালক শিশুবাচ্চাদের দেখে রোমান্টিক বা সেক্সুয়াল অনুভূতি আসে তাহলে তাকে বিকৃতমনের ভাবা কি ইমানের সাথে সাংঘর্ষিক? নাকী বাচ্চাদের দেখেও রোমান্টিক বা সেক্সুয়াল অনুভূতি আসা স্বাভাবিকই?  কোনো বড় পুরুষ যদি নাবালিকা মেয়ে দেখে ভাবে যে এটা তো বাচ্চা, তাহলে কি সেই পুরুষটার আলাদা কোনো গুনাহ হবে? ইসলামে কি বাচ্চাদের প্রতি আলাদা দৃষ্টি দেয়ার কিছু আছে, নাকী শুধু নারী অথবা পুরুষ হিসেবেই দেখা হয়? এই প্রশ্নের উত্তর পাইনি, শুধু আজেবাজে চিন্তা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমি যেহেতু এই অনুভূতিগুলো ধরতে পারি, তাই এগুলোর সম্পর্কে আল্লাহ হয়তো পাকড়াও করবেন। তাই নিজেকে বাঁচাতে ইমান বাঁচাতে এগুলো জানা দরকার(যেহেতু হালালকে হারাম ভাবলে ইমান চলে যায়)। উল্লেখ্য যে, আমি যেকোনো উত্তর মেনে নিতে প্রস্তুত আছি, এবং আপনারা চাইলে হাইড করে দিতে পারেন আবার৷ কিন্তু উত্তরটা দরকার

1 Answer

0 votes
by (633,330 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
চ্যাটজিপিটি বা অন্যান্য এআইয়ের বেলায় এমন জীবন্ত অনুভূতি হলে ঈমান চলে যাবেনা বা বৈধ লেখা পড়লে গুনাহ হবেনা।

(০২)
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আলী রা.-কে নবীজী বলেছেন,
يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ.
হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৭
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَنْظُرُ إِلَى مَحَاسِنِ امْرَأَةٍ أَوَّلَ مَرَّةٍ، ثُمَّ يَغُضُّ بَصَرَهُ إِلَّا أَحْدَثَ اللهُ لَهُ عِبَادَةً يَجِدُ حَلَاوَتَهَا “

হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে কোন মুসলমান কোন নারীর সৌন্দর্যের প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যায়, অতঃপর সে নিজ চক্ষু নিচু করে নেয়, তবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য এক ইবাদতের সুযোগ সৃষ্টি করেন, যাতে সে তার স্বাদ পায়। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২২৭৮}

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
কিছু কিছু ব্যাক্তিদের বেলায় বাচ্চাদের দেখেও রোমান্টিক বা সেক্সুয়াল অনুভূতি আসতে পারে। 
তবে এটি সকলের বেলায় নয়।

কোনো বড় পুরুষ যদি নাবালিকা মেয়ে দেখে ভাবে যে এটা তো বাচ্চা, এক্ষেত্রে কুচিন্তা তার মাথায় না আসলে ও বদ নজরে না তাকালে সেই পুরুষটার আলাদা কোনো গুনাহ হবেনা।

ইসলামে বাচ্চাদের প্রতি আলাদা দৃষ্টি দেয়ার কিছু নেই। তাদের দিকে নজর দিলে গুনাহ হবেনা।
এক্ষেত্রে বিপরীত লিঙ্গের বাচ্চাদের দিকে নজর দিলেও গুনাহ হবে না।

তবে কাহারো যদি কুচিন্তা মাথায় আসে বা বদ নজরে তাকায়,সেক্ষেত্রে তার গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (17 points)
হুজুর উত্তর দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু ২য় প্রশ্নটা হয়তো বোঝাতে পারিনি। ২য়টা এমন ছিল যে, আমার জন্য মোরালিটি বা নৈতিকতা হিসেবে কোনটা ভাবা উচিত হবে- বাচ্চাদের বাচ্চাই ভাবা, নাকী পুরুষ বা নারী হিসেবে ভাবা? মানে আমি তো বাচ্চা হিসেবেই ভাবি। কিন্তু কেউ যদি বাচ্চার প্রতি আকর্ষণ বোধ করে(তাকায়না ইচ্ছা করে, শুধু আকর্ষণ বোধ করে), তাহলে কি সে বিকৃত? নাকী এটা স্বাভাবিকই? বাচ্চাকেও পরিপূর্ণ নারী বা পুরুষ হিসেবেই দেখা উচিত? বা কেউ যদি বাচ্চাকে দেখে বিয়ে করতে চায় যে বড় হলে বাচ্চাটা সুন্দর হয়ে উঠবে, যেটাকে grooming বলে(পশ্চিমাবিশ্বে খারাপ চোখে দেখা হয়)। এটাকে কি মুসলিম হিসেবে আমার ভালো ভাবা উচিত, নাকী খারাপ?
by (633,330 points)
বাচ্চাদের বাচ্চাই ভাবুন,বা পুরুষ /নারী হিসেবে ভাবুন,যেটাই ভাবুননা কেনো,এক্ষেত্রে কুচিন্তা মাথায় না আসলে ও বদ নজরে না তাকালে সেই ব্যাক্তির গুনাহ হবেনা।

কুচিন্তা মাথায় আসলে বা বদ নজরে তাকালে সেক্ষেত্রে গুনাহ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...