আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
16 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
السلام عليكم و رحمة الله و بركاته

১. হিফজকৃত অংশ ফরজ স্বলাতে তিলাওয়াত করতে গিয়ে যদি আয়াত অর্ধেক পড়ে বাকিটা কোনোভাবেই মনে না পড়ে, তাহলে কি আয়াত অর্ধেক পড়েই রুকুতে চলে গেলে স্বলাত ভেঙে যাবে? এক্ষেত্রে করণীয় কি?

২. কুরবানি ইদের দিন আমার বিড়াল জানালা দিয়ে বেরিয়ে অন্য বাসায় ঢুকে পড়ে। আমি তাকে আনতে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়ি, হাত-মোজা না পরেই। সেই বাসায় নন-মাহরাম ছিল এবং আমার হাত মেহেদী রাঙা থাকায় হয়তো হাতের সৌন্দর্য প্রকাশ পেয়ে গিয়েছিল।
তার ২ দিন পর আমি স্বপ্নে দেখি, আমরা ৫ জন বান্ধবী (যাদের কাউকেই চিনি না) কোথাও মেজবানী খেতে গিয়েছিলাম। তাড়াহুড়ো করে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় সেখানে হাত মোজা পরে যেতে পারিনি। রিসিপশনের আংকেল আমাকে এই ব্যাপারে অনেক বকাঝকা করলেন। বললেন, "মানুষ মনে করে শুধু বোরকা হিজাব পরলেই পর্দা হয়ে যায়। হাত পা ঢাকতে হয় না? হাত মোজা না পরলে এগুলো আবার কিসের পর্দা?" আমার যতটুকু মনে পড়ে, স্বপ্নেও আমার হাত মেহেদী রাঙা ছিল। এই স্বপ্নের কি ব্যাখ্যা হতে পারে? আমাকে কি কোনোভাবে সতর্ক করা হয়েছে?

৩.কারো কার্যকলাপ আমার পছন্দ না হলে আমি যদি মনে মনে বলি "কেমন ঢং করে কথা বলে, কেমন ভাব দেখাচ্ছে! ইত্যাদি"। তাহলে কি এটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত?

৪. অনলাইনে কাইদা নুরানিয়্যা কোর্স এক ইন্সটিটিউটে ফি নিচ্ছে ৬১০/-, অন্য ইন্সটিটিউটে ফ্রি করাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমি যদি আপুর কাছে আফসোসের সুরে বলি, তারা কেন এত কোর্স ফি নিচ্ছে, সব কোর্সে টাকা নিতে হয় ইত্যাদি ইত্যাদি....। তাহলে কি এটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে?

৫. অনেক সময় দরকারি কাজের মাঝেও ফোনের স্ক্রিনে কিছু অপ্রীতিকর ছবি চলে আসে। সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিলেও মাঝে মাঝে মনে পড়ে যায়। আমি মাথা ঝাকিয়ে সেটা ভুলতে চেষ্টা করি। এক্ষেত্রে কি আমি গুনাহগার হবো?

৬. আমার ভাইয়ের মেয়ে মাত্রাতিরিক্ত দুষ্টামি করে। কথায় কথায় সবাই বলে, " তোর সাথে শয়তান কয়টা আছে?" এমন কথা বললে কি গুনাহ হবে? ওরা তো নিষ্পাপ, ওদের সাথে কি আসলেই শয়তানের দুষ্টু চেলাপেলা থাকে?

1 Answer

0 votes
ago by (633,150 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/17474/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
নামাজে কিরাআত পড়া মানে কোরআন শরিফ থেকে ন্যূনতম ছোট এক আয়াত পরিমাণ পড়া ফরজ।
ইহা ছাড়া নামাজই হবেনা।
,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
فَاقۡرَءُوۡا مَا تَیَسَّرَ مِنۡہُ ۙ 
কুরআন থেকে যতটুকু সহজ ততটুকু পড়।
(সুরা মুযযাম্মিল ২০)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَدَخَلَ رَجُلٌ فَصَلَّى ثُمَّ جَاءَ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ فَقَالَ " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . فَرَجَعَ الرَّجُلُ فَصَلَّى كَمَا كَانَ صَلَّى ثُمَّ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَرَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ارْجِعْ فَصَلِّ فَإِنَّكَ لَمْ تُصَلِّ " . حَتَّى فَعَلَ ذَلِكَ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أُحْسِنُ غَيْرَ هَذَا فَعَلِّمْنِي . فَقَالَ " إِذَا قُمْتَ إِلَى الصَّلاَةِ فَكَبِّرْ ثُمَّ اقْرَأْ بِمَا تَيَسَّرَ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ ثُمَّ ارْكَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ رَاكِعًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَعْتَدِلَ قَائِمًا ثُمَّ اسْجُدْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ سَاجِدًا ثُمَّ ارْفَعْ حَتَّى تَطْمَئِنَّ جَالِسًا وَافْعَلْ ذَلِكَ فِي صَلاَتِكَ كُلِّهَا " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ

আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাসজিদে গেলেন। এ সময় একটি লোক এসে নামায আদায় করল। (নামায শেষ করে) সে এসে নাবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাম করল। তিনি সালামের উত্তর দিয়ে তাকে বললেনঃ তুমি আবার গিয়ে নামায আদায় করে এসো, তোমার নামায হয়নি। এভাবে সে তিনবার নামায আদায় করল। তারপর লোকটি তাকে বলল, সেই সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন! আমি এর চেয়ে ভালভাবে নামায আদায় করতে পারছি না, আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ যখন তুমি নামায আদায় করতে দাড়াও তখন তাকবীর (তাহরীমা) বল, তারপর কুরআনের যে জায়গা হতে পাঠ করতে সহজ হয় তা পাঠ কর; তারপর রুকূতে যাও এবং রুকূর মধ্যে স্থির থাক; তারপর মাথা তুলে সোজা হয়ে দাড়াও; তারপর সাজদাহ কর এবং সাজদাহর মধ্যে স্থির থাক; তারপর মাথা তুলে আরামে বস। তোমার সমস্ত নামায এভাবে আদায় কর। —সহীহ। তিরমিজি ৩০৩ ইবনু মাজাহ– (১০৬০), বুখারী ও মুসলিম। 

আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। 


★ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে আর সুন্নাত নফলের প্রত্যেক রাকাতে  সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য একটি সুরা বা ছোট তিন আয়াত পরিমাণ মেলানো ওয়াজিব।
অন্যথায় সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الْكِتَابِ وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الْكِتَابِ، وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ، وَيُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مَا لاَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ، وَهَكَذَا فِي الْعَصْرِ وَهَكَذَا فِي الصُّبْحِ.

আবূ কাতাদাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’রাক‘আতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা ও দু’টি সূরাহ্ পড়তেন এবং শেষ দু’রাক‘আতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেন, আর তিনি প্রথম রাক‘আতে যত দীর্ঘ করতেন, দ্বিতীয় রাক‘আতে তত দীর্ঘ করতেন না। ‘আসরে এবং ফাজরেও এ রকম করতেন। (বুখারী ৭৭৬,৭৫৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৪০)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
নামাজে সুরা ফাতেহা ব্যাতিত কিরাআতের ওয়াজিব পরিমান হলো  ছোট তিন আয়াত বা একটি বড় আয়াত।
একটি বড় আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য  হলো যেটি তিনটি ছোট আয়াতের মতো হয়। 
যেমন
 ثُمَّ نَظَرَ․ ثُمَّ عَبَسَ وَبَسَرَ․ ثُمَّ اَدْبَرَ وَاسْتَکْبَرَ 
পরিমান কোনো আয়াত হলে অর্থাৎ যেনো কমপক্ষে ৩০ হরফ বিশিষ্ট হয়।
অন্যথায় সেজদায়ে সাহু আবশ্যক  হবে।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি উক্ত আয়াতের নুন্যতম ৩০ হরফ বিশিষ্ট অংশ তিলাওয়াত করে রুকুতে যায়,সেক্ষেত্রে সালাত হয়ে যাবে। অন্যথায় নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
এটি আপনার মনের কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন।
তবে পরবর্তীতে পরিপূর্ণ পর্দা করার ব্যাপারে যেন কোন অবহেলা না হয় সেদিকে সতর্ক থাকবেন।

(০৩)
বিষয়টি অন্যের সামনে বললে আর সেখানে উক্ত ব্যক্তিটি উপস্থিত না থাকলে এবং শ্রোতা যখন সেই ব্যাক্তিকে চিনতে পারে,সেক্ষেত্রে  এটি গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে।

(০৪)
এটা গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবেনা।

(০৫)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি গুনাহগার হবেননা।
তবে বিষয়টি মাথায় আসা মাত্র অন্যমনস্ক হয়ে যেতে হবে।

(০৬)
গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...