একজন বাড়ির বউ আমি,,আমার স্বামীর পরিবারে থাকি। আমাদের পরিবারে সদস্যসংখ্যা চারজন এবং একসাথে মিলে-মিশে থাকার চেষ্টা করি। আমি নিজেও সবসময় চেষ্টা করি ভালো ব্যবহার করতে, সবার সাথে সম্মান বজায় রেখে চলতে। কিন্তু আমার শাশুড়ির আচরণ নিয়ে অনেকদিন ধরে মানসিকভাবে ভুগছি, পরামর্শের আশায় এই প্রশ্ন করছি।
আমার শাশুড়ি অনেকটা সংকীর্ণ মনের। উনি খুব কমই কাউকে কিছু দিতে চান। পরিবারের জন্য যদি ফলমূল বা অন্যান্য খাবার আনা হয়, সেগুলো সব উনি নিজের কাছে রেখে দেন। আমি লক্ষ্য করেছি, উনি যদি ২০টা আম পান, তার মধ্যে ১৫-১৬টা নিজে খেয়ে ফেলেন, বাকি ২-৩টা হয়তো কোনো রকমে পরিবারের অন্যদের দেন। কিন্তু সবচেয়ে কম দেন আমাকে—শুধু পুত্রবধূ হওয়ার কারণে। অনেক সময় আমি কিছু চাইতেও পারি না, কারণ উনি মন থেকে কখনো দিতে চান না। মনে হয় যেন আমি এই পরিবারের কেউ না, বরং বাইরের একজন। আমার স্বামী বা আমার শশুর আমাকে ভালবেসে যদি ভালো জিনিসটা দিতে চান বা ভালো খাবারটা দিতে চান এটাতে আমার শাশুড়ি মন খারাপ করেন । যদি আমার শাশুড়ি কোন জিনিস চারজনের মধ্যে ভাগ করবেন সবচেয়ে খারাপটা আমাকে দিবেন ।
এই ধরনের অবস্থা প্রায়ই হয়। এমনকি খাওয়ার সময়েও আমি বুঝে শুনে খুব কম নিই, যেন কেউ কিছু বলে না। কিন্তু মাঝে মাঝে খুব ক্ষুধার্ত থাকলেও নিজের ঘর থেকে কিছু না নিয়ে খেতে পারি না, শুধু অনুমতির জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হয়। এতে মানসিক কষ্টও হয়, অপমানবোধও হয়। এখন একই পরিবারের থাকি বেশিরভাগ জিনিস আমার শাশুড়ির অধীনে থাকে, তাহলে এখানে আমি যদি তার অনুমতি ছাড়া খাবার নেই বা কোন জিনিস নেই আমার প্রয়োজন তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?
আমি জানি যে কোনো খাবার বা ফলমূল পুরো পরিবারের জন্যই আনা হয়েছে, তাহলে আমি কি শাশুড়ির অনুমতি ছাড়া ৪-৫টা আম খেতে পারব? ইসলাম কি আমাকে এটা করতে অনুমতি দেয়, নাকি এটা গুনাহের মধ্যে পড়ে যাবে? বাসার একটা কাজ থেকে আমপারা হয়েছে পুরোটাই আমার শাশুড়ি রেখে দিয়েছে সেখান থেকে কি আমি নিতে পারবো? উনি নিজ ইচ্ছায় আমাকে কখনো দেবে না। সম্ভব হলে একটাও‌‌ খেতে দেবে না।
আমি আল্লাহর সামনে গুনাহগার হতে চাই না। আমি কারো হক নষ্ট করতে চাই না। শুধু জানতে চাই, আমার নিজের সীমা কতটুকু? একজন পুত্রবধূ হিসেবে আমার কি কোনো অধিকার নেই এসব সাধারণ পারিবারিক বিষয়ে?
আপনার কুরআন-সুন্নাহর আলোকে দিকনির্দেশনা পেলে আমি খুব উপকৃত হব।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।