আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
in সালাত(Prayer) by (57 points)
১.বাবার বাসা মাহরামের দূরত্বে। সেখানে যাবার সময় ওখানে অবস্থানের নিয়ত ছিল। কিন্তু এখন স্বামীর বাড়িতে যেতে হবে। ১৫ দিনের কম সময়ের মধ্যে। এখন যেকদিন বাবার বাসায় থাকবো একদিন পূর্ণ সালাত আদায় করব নাকি কসর করব? হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার...

২.ক্ষতস্থানে পানি লাগালে সমস্যা হবে। সেজন্য সে জায়গা সহ শরীরের আরো কিছু অংশ জুড়ে ব্যান্ডেজ দেয়া আছে। এমতাবস্থায় ওযু করার ক্ষেত্রে ক্ষতস্থানের চারপাশে মুছে দেয়া হয় যাতে কোনোভাবেই পানি না পৌঁছায়। এ পদ্ধতি কি সঠিক আছে?

1 Answer

0 votes
ago by (633,150 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

সেক্ষেত্রে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কসর করতে হবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ

‘আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোনো দোষ নেই।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১০১]

হাদিস শরীফে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

আরো জানুনঃ 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার স্থায়ী বাসা কোনটা?

আপনি যদি স্থায়ী ভাবে আপনার স্বামীর বাসাতেই স্বামী ও সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত করেন,নিজের বাবার বাসায় সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত না করে, অর্থাৎ স্থায়ীভাবে আপনার স্বামীর বাসাতেই থাকার নিয়ত করেন, সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেদিন আপনি নিয়ত চেঞ্জ করেছেন,সেদিন হতে কসরের নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি আপনি নিজের স্বামীর বাসাকে স্থায়ী বাসা হিসেবে গণ্য না করেন বরং নিজের বাবার বাসাকেই স্থায়ী বাসা হিসেবে গণ্য করেন, নিজের বাবার বাসাতেই স্বামী সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত করেন, সেক্ষেত্রে আপনার স্থায়ী বাসা আপনার বাবার বাসা।

আর কোন ব্যক্তি নিজের আসল বাড়িতে আসলে সে মুসাফির হয় না, তাই এমতাবস্থায় আপনি নিজের বাবার বাসায় আসলে মুসাফির হবেননা। বাবার বাসায় আপনি কসরের নামাজ আদায় করতে পারবেন না।

এমতাবস্থায় আপনাকে সর্বক্ষেত্রে বাবার বাসায় পূর্ণ নামাজই আদায় করতে হব।

فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)
সারমর্মঃ ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং  পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা। 
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।   

আরো জানুনঃ

فی الفقه الإسلامي وأدلته: إذا دخل المسافر بلده أي محل إقامته الدائمة، أتم الصلاة، وإن لم ينو الإقامة فيه، كأن دخله لقضاء حاجة؛ لأنه معين للإقامة، وقد زال سبب الرخصة وهو السفر. هذا إن سار مدة السفر (3 أيام بلياليها)، وإلا بأن رجع إلى بلده قبل قطع مسافة السفر، أتم بمجرد نية العودة، لعدم تحقق السفر المجيز للقصر. وإذن فيجب عليه الإتمام في هاتين الحالتين: العودة للوطن، ونية العودة قبل قطع مسافة القصر، فإن عاد بعد قطع مسافة القصر، يقصر حتى يعود لبلده بالفعل. (2/ 1364)۔

وفی الدر المختار: يبطل (وطن الإقامة بمثله و) بالوطن (الأصلي و) بإنشاء (السفر) والأصل أن الشيء يبطل بمثله، وبما فوقه لا بما دونه اھ وفی رد المحتار: (قوله والأصل أن الشيء يبطل بمثله) كما يبطل الوطن الأصلي بالوطن الأصلي ووطن الإقامة بوطن الإقامة ووطن السكنى بوطن السكنى، وقوله: وبما فوقه أي كما يبطل وطن الإقامة بالوطن الأصلي وكما يبطل وطن السكنى بالوطن الأصلي وبوطن الإقامة، وينبغي أن يزيد وبضده كبطلان وطن الإقامة أو السكنى بالسفر فإنه في البحر علل لذلك بقوله لأنه ضده اھ (2/ 132)۔

(০২)
এক্ষেত্রে যদি শরীরের অন্যান্য অঙ্গ ধোয়ার মতো ক্ষতস্থানের জায়গা ধোয়া না যায়,তাহলে শুধু পানি প্রবাহিত করে দিবেন। যদি পানি প্রবাহিত করে দেওয়া ক্ষতিকর হয়,তাহলে মাসাহ করে নিবেন,অর্থাৎ সামান্য ভেজা আঙ্গুল হালকা ভাবে যখমের স্থানের উপর/ব্যান্ডেজের উপর ফিরিয়ে নিবেন।
,
যদি মাসেহ করাটাও ক্ষতিকর হয়,কঠিন হয়,তাহলে সেই অঙ্গ আপন অবস্থায় ছেড়ে দিবেন,বাকি অঙ্গ ধুয়ে ফেলবেন।
সেই স্থান এমতাবস্থায় শুকনো রাখা যাবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...