আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته

শায়েখ আমি একজন নারী,বয়স ২০,অবিবাহিত।বর্তমানে আমি সর্বাবস্থায় নিজ গৃহে অবস্থান করার চেষ্টা করি অর্থাৎ পর্দার প্রথম স্তর পালনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে চাইছি আলহামদুলিল্লাহ।জীবনের এই পর্যায়ে এসে আমার বাহিরে যাওয়া বলতে ডাক্তার এবং খুবই নিকট আত্মীয়ের বাসায় কোনো দাওয়াতের আয়োজন হলে সেখানে যাওয়া হয়।এছাড়া কেনাকাটা,ঘুরাফেরা,পড়াশোনা ইত্যাদি কোনো কারনেই বাইরে যেতে হয় না আলহামদুলিল্লাহ।সবকিছু ভাই ব্যবস্হা করেন।

অতীত ও বর্তমানের অনিয়মিত লাইফস্টাইলের কারণে আমার আইডিয়াল ওয়েট থেকেও ওয়েট অনেক খানি বেশি।এই অতিরিক্ত ওজন আমার জন্য সমস্যার কারণ।বিভিন্ন রোগের উৎপত্তি হচ্ছে শরীরে সেকারণে ওজন কমাতে চাইছি।বাসায় কয়েক দফা চেষ্টা করেও সফল হইনি।এখন আমার ২ টি প্রশ্ন রয়েছে। একটু কষ্ট করে ২ টি প্রশ্নের আলাদাভাবে উত্তর দিয়ে যথাযথ দিকনির্দেশনার মাধ্যমে সহায়তা করুন মিন ফাদ্বলিক।

প্রশ্ন ১.আমার বাসা থেকে রিক্সায় ভাড়া ৬০(দূরত্ব বুঝাতে ভাড়া উল্লেখ করেছি) এমন অবস্হানে একটি লেডিস জিম রয়েছে,যেখানে ট্রেনার থেকে শুরু করে ম্যানেজার সবকিছুই মহিলা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাদের সাথে একাধিক বার কথা হয়েছে, তাদের ভাষ্যমতে তাদের জিমের সিড়িতে পর্যন্ত পুরুষ এলাউড না।এমন পর্দার নিরাপত্তা দেওয়া হলে আমার জন্য কি মাহরাম ছাড়া জিমে যাওয়া জায়েজ হবে?(দূরত্ব উল্লেখ করেছি)যদি জিমে যাওয়ায় কোনো সমস্যা না হয়,আমি জানতে চাই জিমে গেলেও কি আমি পর্দার প্রথম স্তর পালনকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবো শায়েখ?যেহেতু ১ম স্তর হলো অতীব প্রয়োজন ব্যতীত নিজ গৃহের বাহিরে যাওয়া যাবে না।জিম করে ওজন কমানো আমার জন্য বর্তমানে খুবই জরুরি(আমার প্রয়োজন অনুযায়ী বললাম জরুরি।ইসলামের দৃষ্টিতে কতটুক জরুরি সেই জ্ঞান আমার নেই,মাফ করবেন)

প্রশ্ন ২.জিমের ওয়েট লস প্রজেক্টে বিভিন্ন এক্সারসাইসের পাশাপাশি ২ টি এক্সট্রা সেশন থাকে। যা হলো কার্ডিও ও এরোবিকস।এই ২ টি সেশনে হাই ভলিউমে সাউন্ড ট্র্যাক ইউজ করা হয় এবং সেই সাউন্ডের তালে তালেই ট্রেনার সেশন করিয়ে থাকেন। আমাদের যেহেতু মিউজিক হারাম,সেহেতু এই সাউন্ডের মাধ্যমে ট্রেনার যা করান তা করা কোনো ভাবেই আমার জন্য জায়েজ হবে না তাই না?

(উল্লেখ্য,এই ২ টি সেশন স্কিপ করেও ওয়েট লস প্রজেক্টে জয়েন করতে পারবো,তবে ওজন দেরিতে কমবে)
আমি একটু অন্য রকম প্রশ্ন করেছি আখওয়ান।রব্ব আপনাদের এই শ্রম কবুল করে নিক।আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আপনাদের সকলকে তার দ্বীন ও দুনিয়ার পথে কবুলিয়াত ফরমান।আমিন সুম্মা আমিন।
কষ্ট করে উত্তর প্রদানের জন্য অগ্রিম জাযাকাল্লাহু খইরন কাসিরা ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ।

1 Answer

0 votes
ago by (634,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُوَرِّقٍ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ فَإِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহিলারা হচ্ছে আওরাত (আবরণীয় বস্তু)। সে বাইরে বের হলে শাইতান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়। 
(সহীহ, তিরমিযী ১১৭৩, ইরওয়া ২৭৩, সহীহ আল জামি‘ ৬৬৯০,মিশকাত (৩১০৯),  তা’লীক আলা ইবনি খুযাইমা (১৬৮৫))

এ হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান গারীব বলেছেন।

হাদীসটির ব্যাখ্যা: শায়ত্বনের তাশরীফের অর্থ হলো, নারীর কোনো অঙ্গের দিকে সে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে এবং পর্দার উপর তার হাত বিছিয়ে দেয়। এর অর্থ হলো, নারীর তার নিজকে প্রকাশ করাটা খুব নিকৃষ্ট কাজ। যখন সে বের হয় বাজে দৃষ্টি তাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে নেয়, ফলে সে অন্যের দিকে ধাবিত হয় এবং অন্য কেউ তার দিকে ধাবিত করে, ফলে উভয় কিংবা উভয়ের একজন ফিতনায় পতিত হয়। অথবা মানবরূপী পাপাচারী ব্যক্তি শায়ত্বনী কাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১১৭৩)

https://ifatwa.info/15986/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীরচর্চাকে ইসলাম সমর্থন করে এবং অনুমিত দিয়েছে শুধু তাই নয় বরং তার প্রতি মানুষকে উৎসাহিত ও করেছে।তবে শর্ত হচ্ছে  শরীয়তের গন্ডির ভিতরে থাকতে হবে।
হাদিসে বর্ণিত শরীরচর্চা "পানিতে সাতার কাটা,দৌর প্রতিযোগিতা, দূর সীমানায় নিক্ষেপণ নিপুণতা "ইত্যাদির প্রতি ঘরোয়া পরিবেশে মনোযোগী হতে হবে।

বিঃদ্রঃ
অহংকার বা লোক দেখানোর জন্য জিম করা বা বডি ফিট করা ইত্যাদি কখনো বৈধ হবে না। কেননা এতে বেহুদা সময় নষ্ট হচ্ছে। তবে যদি শরিরকে সুস্থ রেখে প্রশান্তির সাথে আল্লাহর ইবাদত করার ইচ্ছা থাকে,এবং হারাম থেকে বেচে থাকার দৃঢ়মনোভাব থাকে এবং ফরজ-ওয়াজিব বিধান পালনে কোন সমস্যা না হয়, তাহলে জীমের অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।

আর নারীদের জন্য ঘরের ভিতরেই শরীর চর্চা করতে হবে।এটাই তার জন্য নিরাপদ।বাহিরে গিয়ে শরীরচর্চা করা কখনো জায়েয হবে না।কেননা জিমখানায় এমন মহিলাও থাকবে,যারা বেপর্দা।তারা গিয়ে তাদের পুরুষ সঙ্গীদের সাথে ঐ মহিলার গোপনাঙ্গের বর্ণনা দিতে পারে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2461 

যদি কাউকে শরীরচর্চা করতেই হয়,তবে তাকে হাদীসে বর্ণিত শরীরচর্চা করতে হবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/673 

নারীদের জন্য ঘরের ভিতরেই শরীর চর্চা করতে হবে।এটাই তার জন্য নিরাপদ।বাহিরে গিয়ে শরীরচর্চা করা কখনো জায়েয হবে না।কেননা জিমখানায় এমন মহিলাও থাকবে,যারা বেপর্দা।তারা গিয়ে তাদের পুরুষ সঙ্গীদের সাথে ঐ মহিলার গোপনাঙ্গের বর্ণনা দিতে পারে।
তাই পূর্ণ পর্দার সহিত নারীদের জিমে যাওয়া জায়েজ হলেও সতর্কতা মূলক না যাওয়াই উচিত।  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
বিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মতে জিম করা যদি আপনার জন্য অতি জরুরী হয়,ইহা ছাড়া যদি আর কোনো উপায় না থাকে,সেক্ষেত্রে ফিতনার বিন্দুমাত্র আশংকা না থাকলে পরিপূর্ণ পর্দা করে ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করে আপনি সেখানে গিয়ে জিম করতে পারবেন।

তবে যেহেতু লেডিস জিম খানায় সকল প্রকার মহিলার যাতায়াত রয়েছে,নেককার বদকার সবাই যেতে পারে,তাই জিমখানায় গিয়ে হেজাব খুলা কখনো উচিৎ হবে না।
টাইট জামা পরিধান জায়েজ হবেনা।
ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে।

বিশেষ করে বর্তমান ফিতনার সময়ে জিমখানায় গিয়ে ছোট কাপড় পরিধান করা কখনো উচিৎ হবে না।এটা কোনো নেককার মহিলার কাজ হতে পারে না।শরীরচর্চাকে ইসলাম বাধা দেয় না,তবে শরীয়ত সম্মত পথেই শরীরচর্চা করতে হবে।

আরো জানুনঃ 

(০২)
এক্ষেত্রে বাদ্য-বাজনা শোনার গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...