আল্লাহ তায়ালা সুরা ফাতেহায় নিজেকে “আর-রাহমান” ও “আর-রাহীম” বলে অবিহিত করেছেন।
বিশ্বের সর্বত্র আল্লাহ তা'আলার অপার অসীম দয়া ও অনুগ্রহ প্রতিনিয়ত পরিবেশিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক জগতে এই যে নিঃসীম শান্তি শৃংখলা ও সামঞ্জস্য-সুবিন্যাস বিরাজিত রয়েছে, এর একমাত্র কারণ এই যে, আল্লাহর রহমত সাধারণভাবে সব কিছুর উপর অজস্র ধারায় বর্ষিত হয়েছে। সকল শ্রেণীর সৃষ্টিই আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করেছে। কাফির, মুশরিক, আল্লাহ্দ্রোহী, নাস্তিক, মুনাফিক, কাউকেও আল্লাহ্ তাঁর রহমত হতে জীবন-জীবিকা ও সাধারণ নিয়মে বৈষয়িক উন্নতি কোন কিছু থেকেই– বঞ্চিত করেননি।
এমন কি, আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তার বিরোধিতা করতে চাইলেও আল্লাহ নিজ হতে কাউকেও বাধা প্রদান করেননি; বরং তিনি মানুষকে একটি সীমার মধ্যে যা ইচ্ছে তা করারই সুযোগ দিয়েছেন। এই জড় দুনিয়ার ব্যাপারে এটাই আল্লাহর নিয়ম।
এই জন্যই আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেছেন, “আর আমার রহমত সব কিছুকেই ব্যাপ্ত করে আছে।” [সূরা আল-আরাফ: ১৫৬]
আল্লাহ তাআলা কুরআনে বহু জায়গায় বলেছেন যে দুনিয়ার রিযিক, নিয়ামত, সম্পদ, সুযোগ–সুবিধা ইত্যাদি তিনি মুমিন ও কাফের সবাইকে দেন। এই বিষয়টি কুরআনের অনেক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
"كُلًّا نُّمِدُّ هَـٰٓؤُلَآءِ وَهَـٰٓؤُلَآءِ مِنْ عَطَآءِ رَبِّكَ ۚ وَمَا كَانَ عَطَآءُ رَبِّكَ مَحْظُورًا"
“তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ থেকে এই সকলকেই (মু’মিন ও কাফেরকে) আমি সাহায্য করি; আর তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ তো নিষিদ্ধ নয়।”
(সূরা বনী ইসরাঈল (১৭:২০)
এই আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, আল্লাহ কাফের ও মুমিন উভয়কেই দুনিয়ার দান দিয়ে থাকেন।
"فَلَا تُعْجِبْكَ أَمْوَٰلُهُمْ وَلَآ أَوْلَـٰدُهُمْ ۚ إِنَّمَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيُعَذِّبَهُم بِهَا فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا..."
“তাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততির প্রতি তোমার মোহিত হবার কিছু নেই। আল্লাহ চাচ্ছেন এইগুলো দিয়েই তাদেরকে দুনিয়াতে শাস্তি দিন।”
(সূরা তওবা (৯:৫৫)
দুনিয়াতে মূলত আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত মুসলিম কাফের নির্বিশেষে সকলের জন্যই হবে। তবে আখেরাতে মহান আল্লাহর নেয়ামত শুধুমাত্র মুমিনরাই প্রাপ্ত হবে কাফেররা প্রাপ্ত হবে না।
সুতরাং কাফের দেশেও বৃষ্টি হবে, সেখানকার মানুষও আল্লাহর দেওয়া রিজিক প্রাপ্ত হবে টাকা করি বাসা বাড়ি অন্যান্য নেয়ামত গুলোও পাবে।