আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১. মেয়েদের ক্ষেত্রে ক্বুরবানী কখন ওয়াজিব হয়? অবিবাহিত মেয়েদের উপর কী ক্বুরবানী ওয়াজিব হয় হলে কেমন সম্পদ থাকা লাগবে? বিস্তারিত জানতে চাই

২. আমি কয়েকদুন আগে স্বপ্নে দেখি আমি ঈদের জন্য কেনাকেটা করেছি কিছু অর্নামেটস এবং কসমেটিক। বাসায় এসে দেখি আমার বান্ধবী এবং তার সাথে একজন মেয়েকে নিয়ে আনাকে দেখতে এসেছে। ওরা যাওয়ার সময় আমি ওদেরকে আমার কেনা কসমেটিকস থেকে বান্ধবীর মেয়েকে হাদিয়া দেই। পরে ভাবছিলাম ওর সাথের মেয়েকে না দিলে হয়ত কষ্ট পাবে তাই ওকেও কিছু কসমেটিকস দেই।ওরা অনেক খুশি হয়ে চলে যায়। এরপর দেখি আমার মেজো বোন ঈদের জন্য কিছু কিনে নাই। তাই আমার কাছে অবশিষ্ট ২ টা কসমেটিকস ছিল। আমি ওকে দিব কী না ভাবতে ভাবতে বলি যাক দিয়েই দেই ও খুশি হোক ওর ঈদ ভালো কাটুক। এটা বলে দুইটাই ওকে দিয়ে দেই এবং বলি আপু ঈদ মুবারক।  ও অনেক খুশি হয় এতে। এরপরই আমার ঘুম ভেঙে যায়।

৩. আজকে দেখি আমার কাজিনের এনিভার্সারি। ওরা ওদের এনিভার্সারিতে আবার বিয়ের মতো আয়োজন করেছ এবার তাই করেছে। এরপর দেখি বাড়ির দরজায় অনুষ্ঠান সেখানে অনেকেই নাচে মিউজিক এর সাথে, আমি রাগ করে চলে আসি গান বাজায় এজন্য।
★ বাসায় এসে দেখি গেস্ট এসেছুল।মা বলে যে দেখ সকালে তুই রান্নায় হেল্প না করলে বাসা না গুছালে মেহৃানদের সামনে লজ্জা পেতে হতো। ভালো করছিস সব করে রেখেছিস। আরও দেখেছি মনে নাই

এ স্বপ্নগুলোর ব্যাখ্যা কী হবে উস্তায?

1 Answer

0 votes
by (683,400 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

কুরবানি দেওয়া ওয়াজিব।কার উপর ওয়াজিব? এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

مِنْهَا الْيَسَارُ وَهُوَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبِ صَدَقَةِ الْفِطْرِ دُونَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبُ الزَّكَاةِ،

এই পরিমাণ ধনবান ব্যক্তির উপর কুরবানি ওয়াজিব,যে পরিমাণ ধনসম্পত্তি থাকার কারণে কারো উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয়।যাকাত ওয়াজিব হওয়ার নেসাব পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হওয়া শর্ত নয়।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/২৯২, কিতাবুল-ফাতাওয়া-৪/১৩১)

★কুরবানির নেসাব পৃথক।এবং যাকাতের নেসাব পৃথক।কুরবানি ওয়াজিব হলেই যে যাকাত দিতে হবে,বিষয়টা মূলত এমন নয়।বরং যাকাত ওয়াজিব হলেই কুরবানিও ওয়াজিব হবে। কেননা যাকাতের জন্য ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত।কিন্তু কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ 

শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।

যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
পুরুষ হোক বা নারী হোক,বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত হোক,প্রাপ্তবয়স্ক যেকোনো ব্যাক্তি হোক,এক্ষেত্রে তার মালিকানায় যদি নেসাব পরিমান সম্পদ থাকে,সেক্ষেত্রে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
অর্থাৎ প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাব পত্র থাকে,বা প্রয়োজন অতিরিক্ত বাসা বাড়ি/ প্রয়োজন অতিরিক্ত জমি জমা থাকে,বা তার মালিকানায় যদি কোনো স্বর্ন বা রুপা থাকে, সেক্ষেত্রে সব কিছুর মূল্য মিলে যদি সাড়ে বাহান্ন ভড়ি রুপার সমমূল্যে পৌঁছে, সেক্ষেত্রে কুরবানী ওয়াজিব হবে।

অন্যথায় নয়।

(২-৩)
এটি আপনার মনের কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন বলেই মনে হচ্ছে। সুতরাং চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 30 views
0 votes
1 answer 159 views
0 votes
1 answer 127 views
0 votes
1 answer 234 views
0 votes
1 answer 337 views
...