আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমাদের পারিবারিক বিভিন্ন জটিলতার কারণে এক মাদ্রাসার অভিজ্ঞ হুজুর এর কাছে পরামর্শ এবং চিকিৎসা/রুকাইয়া নেওয়ার চেষ্টা করি আমরা। বিষয় গুলো ছিলো এইরকম।

১. আমার বোনের বিয়ে হচ্ছিল না অনেক বছর ধরে। তো তাকে কেউ কোনো সমস্যা করলো কিনা, জ্বীনের আছর বা কুফরি করলো কিনা এসব বিষয় জানার জন্য আমরা হুজুর কে বলি দেখতে। সেই হুজুর আমার বোনের নাম, বাবা মায়ের নাম নিয়ে দেখে তারপর জানায় যে জ্বীনের নজর আছে।  এরপর আমার বোনের বিয়ের জন্য যেই ছেলে দেখা হচ্ছিল সেই ছেলে টা আসলে কেমন,  এটা জানার জন্য ওই হুজুর কে উক্ত ছেলের নাম,  বাবা মায়ের নাম ছবিসহ তথ্য দেওয়া হয়েছিল।  পরবর্তী তে হুজুর জানালো যে ছেলের অতীতে সম্পর্ক ছিলো, মানুষ হিসেবে এমন এমন হবে এইসব বিষয় উনি আমাদের বললো। যদিও এখানে আমরা প্রত্যেকটা কথা পরিপূর্ণ ভাবে বিশ্বাস করিনি।
২. আমার স্বামী স্বভাবগত ভাবে একটু গান, সিগারেট এসব এর প্রতি আসক্ত। পুর্বে তার একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিলো, বিয়েও করেছিলোো তাকে।  তাই আমি আমার স্বামীর ব্যাপারে জানতে চাচ্ছিলাম যে ওকে কোনো জ্বীন আছড় করেছে কিনা, তাছাড়া তার ওই মেয়ের প্রতি কেমন আকর্ষণ আছে মনে এইসব জানার হালকা পাতলা আগ্রহ ছিলো আমার। বিশেষ করে তাকে কেউ জাদুটোনা বান বা আছড় করেছে কিনা এসব জানার জন্যই ওই হুজুর কে বলতাম। পরে হুজুর তার নাম বাবা মায়ের নাম কোমর পর্যন্ত ছবি নিয়ে কিছুদিন পর আমাকে জানায় যে জ্বীনের আছড় আছে, আর আমাকেই ভালোবাসে সে, কিন্তু ওই মেয়ের কথা মাঝে চিন্তা করে একা থাকলে। হুজুর এর বেশ কিছু কথা মিলেও যায়।
তবে আমি recently শায়খ আহমাদুল্লাহ'র ওয়াজে শুনলাম জ্বিন চালান করে খোঁজখবর নেওয়া টা শরীয়ত সম্মত পদ্ধতি নয়।  উল্লেখ্য যে আমি যখন খোঁজ টা নিয়েছিলাম, আমি জানতাম না এই বিষয় টা, যে শরীয়ত সম্মত নয়। ভাবতাম উনি তো মাদ্রাসার হুজুর, অনেক উচ্চশিক্ষিত।  অনেক ডিগ্রি উনার৷ তাই ভরসা করে এই কাজে আগিয়েছিলাম।
এখন আমার প্রশ্ন হোলো..

১.আমি কি এতে বড় গুনেহগার হয়ে গেছি..? এটা করা কি একদম ই ঠিক হয়নি..???

২. যদি এটা মারাত্মক গুনাহ হয়ে থাকে তবে আমি কি করবো এখন.?
আমাকে মেহেরবানি করে উত্তর দিয়ে সহযোগিতা করবেন। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুক।

1 Answer

0 votes
by (683,400 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/116613/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
জিন থেকে সাহায্য নেওয়া তাদেরকে কাজে লাগানো ইত্যাদি জায়েজ কিনা,এই বিষয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।       

কিছু কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেন জিন থেকে সাহায্য নেওয়া, তাদেরকে কাজে  লাগানো জায়েজ।

 জিনকে  নিজের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন মানুষকে সাহায্যকারী বা শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো যায়, তেমনি জিনকেও  শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো যাবে। কাজ করিয়ে  তার পাওনা দিয়ে দিতে হবে। এটি জায়েজ আছে।

সোলায়মান (আ.) জিনদের নিয়ে বাহিনী তৈরি করেছিলেন এবং তাদের দিয়ে নির্মাণকাজ করিয়েছেন। সুতরাং জিনদের সাহায্য নেওয়া নাজায়েজ নয়। তবে এটি বৈধ প্রক্রিয়ায় হতে হবে। জিনকে দিয়ে হারাম কাজ করা যাবে না, আবার জিনের কোনো শর্তও মানা যাবে না। তবে আরো অনেক উলামায়ে কেরামগন ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

তারা বলেন যে জিনদের সাহায্য চাওয়া কখনও শুধু হারাম, কখনও এর সাথে শিরক, কখনও কুফর। এটা কিভাবে সাহায্য চাইছে, কিভাবে সাহায্য করছে এর ওপর নির্ভর করে।”

সুরা জিনে আল্লাহ তায়ালা বলেন –

وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا

অনেক মানুষ অনেক জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জিনদের অহংকার বাড়িয়ে দিত। (সুরা জিন, আয়াত ৬)

সুতরাং “জিনদের সাহায্য চাওয়া হারাম”। তবে স্বাভাবিকভাবেই শয়তান/জিনরা তো এমনিতেই আমার কাজ করবে না। শয়তান বা জিনদের থেকে ফায়দা নিতে হলে, তাদের কথা অনুযায়ী স্যাটানিক রিচ্যুয়াল পালন করতে হয়, সেক্রিফাইস করতে হয়, আল্লাহর নামে না করে তাদের নামে পশু জবাই করতে হয়। ইত্যাদি ইত্যাদি।

অনেক কবিরাজকে দেখা যায়,তারা বলে- গরু লাগবে, মুরগি লাগবে, ছাগল লাগবে। তাদের অনেকে নিজে এসব শয়তানের নামে বলি দেয়, আর অনেকে বলে “জবাই করার পর রক্তটা আমাকে দিয়েন।” তাঁরা এই রক্ত শয়তানের উপাসনায় ব্যবহার করে। যাদুবিদ্যায় বিভিন্ন মৃত প্রাণীর রক্ত ব্যবহার করে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন

وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ جَمِيعًا يَا مَعْشَرَ الْجِنِّ قَدِ اسْتَكْثَرْتُم مِّنَ الْإِنسِ ۖ وَقَالَ أَوْلِيَاؤُهُم مِّنَ الْإِنسِ رَبَّنَا اسْتَمْتَعَ بَعْضُنَا بِبَعْضٍ وَبَلَغْنَا أَجَلَنَا الَّذِي أَجَّلْتَ لَنَا ۚ قَالَ النَّارُ مَثْوَاكُمْ خَالِدِينَ فِيهَا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۗ إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَلِيم.

যেদিন আল্লাহ সবাইকে একত্রিত করবেন, হে জিন সম্প্রদায়, তোমরা মানুষের মাঝে অনেককে তোমাদের অনুগামী করে নিয়েছ। মানুষদের মাঝে তাদের বন্ধুরা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, “আমরা পরস্পরে পরস্পরের মাধ্যমে উপকার লাভ করেছি।” আর এখন আপনি আমাদের জন্যে যে সময় নির্ধারণ করেছিলেন, আমরা তাতে উপনীত হয়েছি।

তখন তাদের বলা হবে “আগুন হল তোমাদের বাসস্থান। সেখানে তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে; আর আল্লাহ যেমন চাইবে..।” নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী। (সুরা আন’আম, আয়াত ১২৮)

সকাল-সন্ধ্যার আমল সম্পর্কে জানুন- https://ifatwa.info/45100/

★জিনকে  নিজের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন মানুষকে সাহায্যকারী বা শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো যায়, তেমনি জিনকেও  শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো যাবে। এটি জায়েজ আছে। সুতরাং খারাপ জিনকে তাড়ানোর জন্য নেককার জিনকে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এটি বৈধ প্রক্রিয়ায় হতে হবে। জিনকে দিয়ে হারাম কাজ করা যাবে না, আবার জিনের কোনো হারাম শর্তও মানা যাবে না।

শিরক করা ছাড়া শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে জীনের সাহায্য নেয়া জায়েজ হবে।

আল্লাহ সবকিছুর খালিক ও মালিক,জগতের সব কিছু উনার হুকুমেই সংগঠিত হয়,তাবিজ বা ঔষধের অদ্য কোনো ক্ষমতা নেই।এমন আক্বিদা পোষণ করে জায়েয ও বৈধ কালামের মাধ্যমে চিকিৎসা হিসেবে ঝাড়-ফুঁক,তাবিজ ব্যবহার ও জীনের সাহায্য নেয়া বৈধ আছে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

তবে ভবিষ্যতের কোনো বিষয় সম্পর্কে তার কথা বিশ্বাস করা যাবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত কাজ সাধারণত অনেকে শিরকি ভাবে করে থাকে,তাই আপনি সতর্কতা মূলক তওবা করে নিবেন।

এ ধরনের কথায় বিশ্বাস না করার পরামর্শ থাকবে। তাদের কাছে আর না যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...