আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু  আলাইকুম।  মহিলাদের  ফ্যাশনেবল  শীতের  সবুজ সাদা বিভিন্ন   রঙের   উলের  সুতা দিয়ে   বানানো  চাদর  বাসার  বাইরে  পড়ে  যাওয়া  যাবে কি ?  যদি  সম্পূর্ণ  কালো  বোরখা,  চোখের  নিকাব  পড়ে তারপর  চাদরটা  পড়ে  কলেজ  বা  বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া হয় তাহলে   কি  পর্দার   খেলাফ  হয়ে  যাবে?

1 Answer

0 votes
by (84,870 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/4492/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পোশাক বিষয়ক কিছু নীতিমালা আছে, এই নীতিমালা মেনে যেকোনো পোশাক পরিধান করা জায়েজ আছে।

সুতরাং অপ্রচলিত পোশাক যদি সেসব নীতিমালার আওতায় পরে, তাহলে তা জায়েজ আছে।

.

 ★★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত "বর্তমানে বাজারে আফগানী জিলবাব নামে একটি পর্দার পোষাক পাওয়া যাচ্ছে যা এদেশে প্রচলিত না।

শরীয়তের নীতিমালার বিরোধী না হলে মহিলাদের জন্য এটা পরিধান করা জায়েজ হবে। (যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে এটি এমন পোশাকঃ  যাতে এক কাপড়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা থাকে এবং চোখও দেখা যায় না। এটা যদি আঁটোসাটো না হয়) তাহলে এটাকে কোনোভাবেই অনুত্তম বলা যাবে না। এটাও সুন্নাহভিত্তিক পোশাক বলেই সাব্যস্ত হবে।

   .

ইসলামী শরীয়তে পোশাক বিষয়ক নীতিমালাঃ

পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদা। লজ্জাস্থান আবৃত রাখা এবং সুন্দর ও পরিপাটি থাকার চাহিদা মানুষের স্বভাবজাত। তদ্রূপ শীত-গ্রীষ্মের প্রকোপ ও বাইরের ধুলোবালি থেকে শরীরকে রক্ষার জন্য তা একটি প্রয়োজনীয় আবরণ। তাই পোশাক আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-

يا بني آدم قد انزلنا عليكم لباسا يوارى سوآتكم وريشا ولباس التقوى ذلك خير ذلك من آيت الله لعلهم يذكرون.

হে আদমের সন্তান্তসন্ততি! আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দুষণীয় তা ঢাকার জন্য এবং তা সৌন্দর্য্যেরও উপকরণ। বস’ত তাকওয়ার যে পোষাক সেটাই সর্বোত্তম। এসব আল্লাহর নির্দেশনাবলির অন্যতম। যাতে মানুষ উপদেশ গ্রহণ করে।-সূরা আরাফ : ২৬

.

স্বভাগতভাবেই মানুষের মাঝে সতর ঢেকে রাখার প্রেরণা রয়েছে। স্বভাব ও রুচির বিকৃতি না ঘটলে এর বিপরীত হয় না। এরপরও শরীয়ত ‘সতর’ ঢাকাকে রুচি ও স্বভাবের উপর ছেড়ে দেয়নি, দ্বীনের অপরিহার্য বিধান বানিয়ে দিয়েছে। কারণ মানুষের স্বাভাবিক রুচি ও শালীনতাবোধকে সংরক্ষণ করার জন্যও সুনির্দিষ্ট নীতি ও নির্দেশনার প্রয়োজন। অন্যথায় বিভিন্নভাবে তা বিনষ্ট হতে পারে। অর্থের লালসা, খ্যাতির মোহ, প্রদর্শন-প্রিয়তা ও নির্বিচার অনুকরণ মানুষের শালীনতাবোধকেও পরিবর্তন করে দেয়। বর্তমান সমাজ এর মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত।

.

পোষাক শুধু বাইরের বিষয় নয়, তা মনের গতিবিধিকেও নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো পোষাক মানুষকে অহংকারী করে। কোনো পোষাক বিনয় দান করে। কোনটা উশৃঙ্খল হওয়ার উসকানী দেয় আর কোনটা করে শান্ত সমাহিত। হৃদয় ও আত্মার পবিত্রতা এবং বাহ্যিক আচার-আচরণেও পোষাকের প্রভাব অনস্বীকার্য। এজন্য ইসলামী শরীয়তে লেবাস-পোষাকের কিছু নীতি রয়েছে, যা অনুসরণ করে মানুষ পোষাকের কল্যাণ লাভ করতে পারে এবং পোষাকের অকল্যাণ থেকে রক্ষা পেতে পারে।

.

এ ধরনের কিছু মূলনীতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল :

১. সতর আবৃত করা।

২. সৃষ্টি-প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া

৩. নারী-পুরুষ একে অন্যের সাদৃশ্য গ্রহণ নিষিদ্ধ

৪. ইসরাফ ও অপচয় থেকে বিরত থাকা উচিত

৫. অহংকার ও প্রদর্শনের মানসিকতা থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য

৬. পারিপাট্যের বিষয়ে সীমালঙ্ঘন করা যাবে না

৭. বিজাতির অন্ধ অনুকরণ থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য

৮. অগোছালোভাবে পোষাক পরিধান করা উচিত নয়

৯. পোষাক পরিষ্কার ও পরিপাটি হওয়া চাই

১০. পোষাক পরিধান করে আল্লাহর শোকরগোযারী করা চাই

আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/4492/

.

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

.

উপরোক্ত পোশাকের নীতি অনুযায়ী যদি হয় তাহলে তা বোরকার উপরে পরিধান করাতে কোনো সমস্যা নেই ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...