জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)
নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)
★দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক।
কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء
মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ
আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)
ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,
فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك
সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)
★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)
তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।
কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ
অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।
১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।
২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গের শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
(নারীদের চেহারা হাত পা সহ পূর্ণ শরীর পর্দা করতে হবে।)
(ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)
,
সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:
“পৃথিবীতে এমন কোনো প্রাণী নেই যার রিজিক আল্লাহর দায়িত্বে নেই।”
(সূরা হুদ ১১:৬)
অর্থাৎ —
রিজিক (যা তোমার ভাগ্যে লেখা) শুধুমাত্র আল্লাহর হাতে।
কেউ সেটা আপনার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে না, আর কেউ আপনার ভাগ্যে যা নেই সেটা দিতে পারে না।
---
“রিজিক নির্দিষ্ট” মানে হলো —
আল্লাহ তাআলা আপনার জীবনের প্রতিটি দিন ও অবস্থার জন্য কতটুকু রিজিক পৌঁছাবে, সেটি পূর্বনির্ধারিত করেছেন।
তবে মনে রাখতে হবে — রিজিক নির্ধারিত হলেও, তা অর্জনের মাধ্যম (চেষ্টা, কাজ, পরিশ্রম) আল্লাহর দেয়া নিয়মের অংশ।
অর্থাৎ —
বান্দা চেষ্টা করবে — চাকরি করবে, ব্যবসা করবে, দোয়া করবে — কিন্তু ফলাফল আল্লাহর ইচ্ছায় আসবে।
রিজিক “স্থির” — কিন্তু আপনি “কোন পথে” সেটা পাবেন, সেটা আপনার আমল ও সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।
★চাকরি করলে রিজিক বাড়ে না, বরং রিজিকের “মাধ্যম” বাড়ে
উদাহরণ,
ধরা যাক, আল্লাহ তাআলা আপনার জন্য নির্ধারণ করেছেন —
আপনি বছরে ৫ লাখ টাকা রিজিক পাবেন।
এখন আপনি যদি চাকরি করেন — আল্লাহ সেই রিজিক “চাকরির মাধ্যমে” পাঠাবেন।
যদি চাকরি না করেন — আল্লাহ হয়তো “স্বামীর আয়, উপহার, ব্যবসা, অন্য সাহায্য” ইত্যাদির মাধ্যমে একই পরিমাণ রিজিক পৌঁছে দেবেন।
অর্থাৎ —
আপনি কাজ করুন বা না করুন, আল্লাহ আপনার নির্ধারিত রিজিক পৌঁছাবেনই, শুধু মাধ্যম বদলে যাবে।
হাদীসে নবী ﷺ বলেন:
“যদি তোমরা আল্লাহর উপর প্রকৃত ভরসা করতে, তবে তোমাদের রিজিক পেতেও তাই দিতেন যেমন তিনি পাখিদের দেন — তারা সকালে ক্ষুধার্ত বের হয় এবং সন্ধ্যায় পেটভরে ফিরে আসে।”
(তিরমিজি ২৩৪৪)
অর্থাৎ পাখিও চেষ্টা করে (উড়ে যায়), কিন্তু রিজিক আল্লাহরই হাতে।
সুতরাং চাকরি করলে রিজিক বাড়বে না, বরং আল্লাহ সেই পথ দিয়েই নির্ধারিত রিজিক দেবেন।
না করলেও রিজিক কমবে না, বরং অন্য পথ দিয়ে আপনার নির্ধারিত রিজিক পৌঁছাবে।
তবে চাকরি করা বা না করা —
এর বৈধতা গুনাহ নির্ভর করে নিয়ত, পরিবেশ, ও শরীয়তের সীমা মানার ওপর।
আপনি যদি গায়রে মাহরাম পুরুষের সাথে বিনা প্রয়োজনে কথা বলেন, সেই গুনাহ আপনার হবে।
বিবাহের পর পাত্রের বাসায় গিয়ে পুর্ণ পর্দা ও পূর্ণ শরীয়ত মেনে চলার নিশ্চয়তা পেলে