আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আস্সালামুআলাইকুম
আমার এই বছর জানুয়ারি থেকে মেডিসিন চলে। কারণ আমার পিরিয়ড এর সমস্যা আছে। মানে সারা মাস ই রক্ত যায়। সিস্ট এর প্রব্লেম আছে। ৬ মাস মেডিসিন এর কোর্স ছিল। কোর্স চলাকালীন পিরিয়ড ঠিক ৬
দিন করেই হতো।
কিন্তু মেডিসিন শেষ হওয়ার পর থেকে আবার আমার সমস্যা শুরু হলো। মেডিসিন শেষ হওয়ার পরের মাসে পিরিয়ড ৭ দিন ছিল( অগাস্ট মাসে )। সেপ্টেম্বর মাসে ৮ দিন। অক্টোবর মাসে শুরু হওয়ার পর থেকে ৮ দিন হয়ে থেমে যায় কিন্তু ২ দিন পরেই আবার সাদা স্রাব এর সাথে রক্ত মিশ্রিত ছিল। যেইটা প্রসাব এর সময়, বা যখন পরিষ্কার হয় তখন দেখতে পেতাম। যেহেতু পরিমান অনেক অল্প তাই আমি ইসতিহাযা ধরে নিজেকে পাক মনে করে নামাজ চালিয়ে যাই। আবার যেহেতু আগের মাসের অভ্যাস ৮ দিন ছিল তাই নিজেকে পাক হিসেবে ধরি। কিন্তু রক্ত অক্টোবর মাস এর ১০ তারিখ থেকে এখনো চলছেই। অল্প অল্প করে। কিন্তু আজকে মানে ২ নভেম্বর, অনেক বেশি পরিমানে হচ্ছে। থেমে থেমে নয় বরং সব সময় ই চলমান।
যেহেতু অক্টোবর ১০-১৮ তারিখ পর্যন্ত হয়েজ গণ্য করেছি, তারপর ১৫ দিন পর আজকে অনেক রক্ত যাচ্ছে। তাহলে এইবার কি এইটা আমার পিরিয়ড হিসেবে গণ্য হবে নাকি ইসতিহাযা?
উল্লেখ, মেডিসিন শুরুর আগে আমার সারা মাস রক্ত যেত। তখন আমি ১৫ দিন পাক ধরতাম নিজেকে রক্তের ধরণ দেখে। যেই ৫-৬ বেশি থাকতো, পিরিয়ড ধরতাম আর বাকি দিন গুলো ইসতিহাজা।

1 Answer

0 votes
by (704,100 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।    
হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]
,
আরো জানুনঃ   

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বনিম্ন সময়সীমা হলো ৩ তিন,আর সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হাদীস শরীফে এসেছে   
أقل الحیض للجاریۃ البکر والثیب ثلاثۃ أیام ولیالیہا وأکثرہ عشرۃ أیام
دار قطني، السنن، 1: 219، رقم: 61
রাসুল সাঃ বলেন  মহিলাদের হায়েজের সর্বনিম্ন সীমা হলো ৩ দিন ৩ রাত,সর্বোচ্চ সীমা হলো ১০ দিন ১০ রাত।

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার যদি সারা মাস ব্লিডিং হয়, সেক্ষেত্রে আপনি প্রথম দশ দিন হায়েজ হিসেবে ধরবেন, এরপর ১৫ দিন পবিত্রতার দিন ধরবেন, সে দিনগুলোর ব্লিডিংকে ইস্তেহাজা ধরবেন।

আবার ১০ দিন হায়েজ ধরবেন। তারপরে ১৫ দিন পবিত্রতার দিন ধরবেন, সে দিনগুলোর ব্লিডিংকে ইস্তেহাজা ধরবেন।

এভাবে আপনি হিসাব করতেই থাকবেন

★আর যদি এমনটি না হয়,অর্থাৎ আপনার ব্লিডিং সারা মাস না চলে,অল্প কিছুদিন পরেই পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে ৩ নভেম্বর থেকে ন্যূনতম তিনদিনও যদি আপনার ব্লিডিং হয়, সেক্ষেত্রে সেটিকে আপনি হায়েজ হিসেবে ধরবেন।

আপনার যদি প্রবল ধারণা হয় যে এটি তিন নভেম্বর হতে ন্যূনতম তিন দিন অব্যাহত থাকবেই, সেক্ষেত্রে আপনি এখন থেকেই (৩ তারিখ হতেই) এটিকে আপনি হায়েজ হিসেবে ধরবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
কিন্তু আমার তো সারা মাস ব্লিডিং হয়। মাসের কোই দিন যেমন ধরেন ৭-৮ দিন বেশি থাকে। আমি ওই ৭-৮ দিন কেই হয়েজ এর দিন ধরি। আপনি মাত্র তিন দিন ধরতে বলছেন কোন হাদিস এর রেফারেন্স এ। Please জানাবেন 
by (704,100 points)
প্রশ্নের জবাব পুনরায় পড়ার পরামর্শ রইলো  

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...