গোনাহপূর্ণ বিবাহের অনুষ্ঠানে উপস্থিতি এবং পাত্রী দেখার মূলনীতি

Question

১. আমার এক কাছের আত্মীয় বিয়ে হবে।ওরা ধর্মীয় মত অনুযায়ী বিয়ে করবে না। সেখানে গান, বেপর্দা সব ই থাকবে। এদিকে কাছের আত্মীয় বিধায়  আমার বাড়ির সবাই কয়েকদিন আগেই ঐ বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হবে ।আর যারা বাকি থাকবে তারা বিয়ের দিন তো অবশ্যই উপস্থিত হবে। এই বিয়ে খাওয়া তো হারাম আমার জানামতে যা আমার বাড়ির সদস্যরা কিছু মনে করে না। কিন্তু বাড়িতে তো রান্না ও বন্ধ থাকবে বিয়ের দিন। । পর্দার দোহাই দিয়ে কয়েকদিন আগে না গেলেও মা বিয়ের দিন যাবো না এইটা কিছুতেই মেনে নিবে না।এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী ( যেহেতু বাড়িতে রান্না হবেনা)?-----ক) বিয়ের দিন যেয়ে খেয়ে চলে আসবো ( পর্দার খেয়াল রেখে)? খ)নাকি মা কে বলবো আমার জন্য খাবার নিয়ে আসতে ( মা এইটা করতে রাজি না হওয়ার চ্যান্স অনেক বেশি)?
২. ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী বিয়ের জন্য শুধু ছেলে দেখতে আসলে কতটুকু বেপর্দা হওয়ার বিধান আছে? বোরকা  সাথে হেজাব পড়ে যাওয়া যাবে ? কামিজ পড়লে ফুল হাতা কিংবা হাফ হাতা জামা পড়ে যাওয়া যাবে? চুল ও কি দেখাতে হবে? হাত ও পা কতটুকু অংশ দেখানো যাবে?
আর যদি ছেলের পক্ষ থেকে কয়েকজন মেয়ে দেখতে আসে সেক্ষেত্রে করণীয় কি? কতটুকু দেখাবো,কোন ধরনের ড্রেস পড়বো? একটু কষ্ট করে বিস্তারিত যদি বলতেন।

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
আপনি ঐ গোনাহপূর্ণ অনুষ্টান থেকে দূরে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। এরকম গোনাহপূর্ণ অনুষ্টানে শরীক না হলে, আত্মীয়তার সম্পর্ক চিহ্ন করার গোনাহ হবে না। ঐ অনুষ্টানের খাবার গ্রহণ নাজায়েজয নয়, তবে এরকম অনৈসলামিক অনুষ্টান থেকে দূরে থাকাই তাকওয়ার নিকটবর্তী। যদি আপনার ঘরে খাবার রান্না করা না হয়, তাহলে মাকে বলবেন খাবার নিয়ে আসতে। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে নিজে রান্না করে থাকবেন। যদি উপস্থিত হওয়া ব্যতিত কোনো অপশন না থাকে, তাহলে উপস্থিত হতে পারবেন। এবং অতিদ্রুত সেখান থেকে পরিত্রাণ করবেন।

(فإن قدر علی المنع فعل وإلا) یقدر (صبر إن لم یکن ممن یقتدی بہ فإن کان) مقتدی (ولم یقدر علی المنع خرج ولم یقعد) لأن فیہ شین الدین والمحکی عن الإمام کان قبل أن یصیر مقتدی بہ (وإن علم أولا) باللعب (لا یحضر أصلا) سواء کان ممن یقتدی بہ أو لا لأن حق الدعوة إنما یلزمہ بعد الحضور لا قبلہ۔ ( الدر المختار مع رد المحتار : ۳۴۸/۶، کتاب الحظر والاباحة، ط: دار الفکر، بیروت )
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2867

(২)
পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-
(১)খালওয়াত হতে পারবে না।
(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।
(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।
(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।
(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।
(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।
যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2898

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিয়ের জন্য শুধু ছেলে দেখতে আসলে বোরকা  সাথে হেজাব পড়ে যাওয়া যাবে। কামিজ পড়লে ফুল হাতা জামা পড়ে যেতে হবে।  চুল দেখানো যাবে না। কবজা পর্যন্ত হাত এবং টাখনু পর্যন্ত পা দেখানো যাবে। যদি ছেলের পক্ষ থেকে কয়েকজন মেয়ে দেখতে আসে, তাহলে সেক্ষেত্রে চুল ইত্যাদি দেখানো যাবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/572