আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (48 points)
প্রেক্ষাপট: এক ব্যাক্তি তার শালীর সাথে জিনা করেছে, এমনকি বাচ্চাও হয়েছে, এখন সে চাচ্ছে তার স্ত্রীর সাথে সংসার করতে।

১. এখন সে কি তার স্ত্রীর সাথে সংসার করতে পারবে, এবং তাতে কোন হুকুম আছে কিনা সংসার করার ক্ষেত্রে ?

২. তার শালীর হুকুম কী?

৩. ঐ বাচ্চার হুকুম কী?

৪. সে ঐ বাচ্চা পালক নিয়ে আগের স্ত্রীর সাথে সংসার করতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (704,100 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো যেনা করার কারনে গর্ভবতী হওয়ার পর যেনাকারীনির সাথে বিবাহ হওয়ার ছুরতে বিবাহ হওয়ার ছয় মাস পরে যদি সন্তান জন্ম হয়,তাহলে সেই সন্তানের বংশ প্রমানীত হবে,কিন্তু যদি বিবাহের ছয় মাসের আগেই সন্তান প্রসব করে,তাহলে তাহলে সেই বাচ্চা ঐ যেনাকারী থেকে বংশ প্রমানীত হবেনা।
এবং সেই বাচ্চাকে জারজ সন্তানই বলা হবে।
হ্যাঁ যদি এই ছুরতে যেনাকারী সেই সন্তানের বাবা হওয়ার দাবী করে,এবং যেনার আলোচনা না করে,তাহলে ঐ বাচ্চার বংশ তার থেকে সাব্যস্ত হবে।

হাদীস শরীফে  এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَمُسَدَّدٌ، قَالَا: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، اخْتَصَمَ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ، وَعَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ، فَقَالَ سَعْدٌ: أَوْصَانِي أَخِي عُتْبَةُ إِذَا قَدِمْتُ مَكَّةَ أَنْ أَنْظُرَ إِلَى ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ فَأَقْبِضَهُ فَإِنَّهُ ابْنُهُ، وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ: أَخِي ابْنُ أَمَةِ أَبِي، وُلِدَ عَلَى فِرَاشِ أَبِي، فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَبَهًا بَيِّنًا بِعُتْبَةَ، فَقَالَ: الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ، وَاحْتَجِبِي عَنْهُ يَا سَوْدَةُ،

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাযি.) ও ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাম‘আহর দাসীর এক সন্তানের বিষয়ে বিবাদ নিয়ে উপস্থিত হলো। সা‘দ (রাযি.) বললেন, আমার ভাই ‘উতবাহ আমার কাছে ওয়াসিয়াত করেছে, আমি মক্কায় এলে যেন যাম‘আহর দাসীর সন্তানকে আমার অধিকারে গ্রহণ করি। কারণ ওটা তার ছেলে। কিন্তু ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ বললেন, এটা আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর সন্তান, আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তানটির মধ্যে ‘উতবাহর সুস্পষ্ট সাদৃশ্য দেখতে পেয়ে বললেনঃ সন্তান তার বিছানা যার। আর যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। তিনি সাওদা (রাযি.) বললেনঃ তার থেকে পর্দা করো। যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। মুসাদ্দাদের বর্ণনায় রয়েছেঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘হে ‘আব্দ! সে তোমার ভাই।’
(আবু দাউদ ২২৭৩)

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ 

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (3/ 49):
"لو نكحها الزاني حل له وطؤها اتفاقاً، والولد له ولزمه النفقة.
 (قوله: والولد له) أي إن جاءت بعد النكاح لستة أشهر، مختارات النوازل، فلو لأقل من ستة أشهر من وقت النكاح لايثبت النسب، ولايرث منه إلا أن يقول: هذا الولد مني، ولايقول: من الزنى، خانية. والظاهر أن هذا من حيث القضاء، أما من حيث الديانة فلايجوز له أن يدعيه؛ لأن الشرع قطع نسبه منه، فلايحل له استلحاقه به، ولذا لو صرح بأنه من الزنى لايثبت قضاءً أيضاً، وإنما يثبت لو لم يصرح؛ لاحتمال كونه بعقد سابق أو بشبهة حملاً لحال المسلم على الصلاح، وكذا ثبوته مطلقاً إذا جاءت به لستة أشهر من النكاح؛ لاحتمال علوقه بعد العقد، وأن ما قبل العقد كان انتفاخاً لا حملاً، ويحتاط في إثبات النسب ما أمكن". 
সারমর্মঃ
যদি সেই মেয়েকে যেনাকারীই বিবাহ করে,তাহলে তার জন্য সহবাস হালাল,এবং সন্তান তার সাব্যস্ত হবে,ভরনপোষণ ওয়াজিব হবে।  
যদি বিবাহের ছয় মাসের মাথায় বাচ্চা প্রসব হয় তাহলে বংশ প্রমানীত হবে,যদি ছয়মাসের কম সময়েই বাচ্চা প্রসব হয়,তাহলে বংশ প্রমানীত হবেনা।
হ্যাঁ যদি সে বলে যে এটি তারই সন্তান,যেনার নয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَيُّمَا رَجُلٍ عَاهَرَ بِحُرَّةٍ أَوْ أَمَةٍ فَالْوَلَدُ وَلَدُ زِنَا لاَ يَرِثُ وَلاَ يُورَثُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رَوَى غَيْرُ ابْنِ لَهِيعَةَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ وَلَدَ الزِّنَا لاَ يَرِثُ مِنْ أَبِيهِ

কুতায়বা (রহঃ) .... আমর ইবন শুয়াইব তার পিতা তার পিতামহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি আযাদ মহিলা বা কোন বাদীর সাথে যিনা করে তবে সন্তান যিনাজনিত সন্তান বলে বিবেচ্য হবে। সেও ওয়ারিশ হবে না এবং তার থেকে সে সন্তান ওয়ারিছ হবে না। সহীহ, মিশকাত; তাহকিক ছানী ৩০৫৪, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২১১৬, ২১১৩ [আল মাদানী প্রকাশনী]

আরো জানুনঃ- 
,
যেনাকারীর সাথে বিবাহ সহীহ হবে।

এক্ষেত্রে যেনাকার যদি উক্ত সন্তান নিজের বলে দাবি করে, তাহলে এমতাবস্থায় সহবাস ও সহীহ হবে।

فتاوی عالمگیریہ:

"وفي مجموع النوازل إذا تزوج امرأة قد زنى هو بها وظهر بها حبل فالنكاح جائز عند الكل وله أن يطأها عند الكل وتستحق النفقة عند الكل، كذا في الذخيرة."

(كتاب النكاح، ج: 1، ص: 280، ط: رشيدية)

মর্মার্থঃ-
কেউ যদি এমন মহিলাকে বিবাহ করে যে তার সাথে যেনা করেছে এবং এর দ্বারা যদি তার গর্ভ প্রকাশ পায়, তাহলে সকলের নিকটেই এই বিবাহ বৈধ এবং স্বামীর জন্য জায়েজ আছে যে সে তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে পারবে এবং স্ত্রী ভরণপোষণের হকদার হবেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সে তার স্ত্রীর সাথে সংসার করতে পারবে।

(০২)
তার শালির জন্য উচিত হলো সে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে খালেস দিলে তওবা করে শরীয়তের পথে ফিরে আসবে এবং দ্রুত অন্যত্রে বিবাহ বসবে।

(০৩)
সেটি জারজ সন্তান বলে বিবেচিত হবে।

(০৪)
সে ঐ বাচ্চা পালক নিয়ে আগের স্ত্রীর সাথে সংসার করতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...