আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
4 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
১. আমার মা মারা গেছেন কয়েক মাস হয়েছে৷ উনি বেঁচে থাকতে আমি হিফয করতে শুরু করেছিলাম। ওনারও ইচ্ছে ছিল কুরআনের কিছু সূরা হিফয করতে যা আর সম্ভব হয়নি৷ এখন আমি যদি হিফয করার পূর্বে আমার মায়ের নামে ঈসালে সওয়াবের নিয়ত করি তাহলে কি উনি কুরআন হিফয করার সওয়াব পাবেন? যদি পান, তাহলে আমি যদি ভবিষ্যতে ইনশাআল্লহ সম্পূর্ণ কুরআন হিফয করি তাহলে কি ঈসালে সওয়াবের নিয়তের জন্য আমার মাকেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সম্পূর্ণ কুরআন হিফযের সওয়াব দিবেন, এরকম আশা করতে পারি?

২. ফরজ ইবাদতের ঈসালে সওয়াব তো দেওয়া যাবে না৷ কিন্তু ৫ ওয়াক্ত নামাজের আগে পরে যে সুন্নত নামাজগুলো আছে সেগুলোর আগে কি আমার মায়ের জন্য ঈসালে সওয়াবের নিয়ত করা যাবে?
৩. কুরআন হাফিজদের মা বাবাকে হাশরের দিনে স্বর্ণের মুকুট পরানো হয় - এই হাদিসটি কি সত্যি? কুরআনের হাফিজযের মা বাবাকে কি পুরস্কার দেওয়া হবে?

৪. অতি শীঘ্রই ঋণ পরিশোধের কোনো আমল বা বিশেষ দোয়া আছে?
৫. স্বচ্ছলতার জন্য এবং অধিক আয়ের জন্য কোনো আমল বা দোয়া আছে?

1 Answer

0 votes
ago by (704,100 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْ مُعَاذٍ الْجُهَنِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ وَعَمِلَ بِمَا فِيهِ أُلْبِسَ وَالِدَاهُ تَاجًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ضَوْؤُهُ أَحْسَنُ مِنْ ضَوْءِ الشَّمْسِ فِي بُيُوتِ الدُّنْيَا لَوْ كَانَتْ فِيكُمْ، فَمَا ظَنُّكُمْ بِالَّذِي عَمِلَ بِهَذَا؟» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ.

মু‘আয আল জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে এবং এর মধ্যে তাঁর হুকুম-আহকামের উপর ‘আমল করে, তার মাতাপিতাকে কিয়ামতের দিন একটি মুকুট পরানো হবে। এ মুকুটের কিরণ দুনিয়ার সূর্যের কিরণ হতেও উজ্জ্বল হবে, যদি এ সূর্য তোমাদের মধ্যে থাকত (তবে উপলব্ধি করতে পারতে)। যে ব্যক্তি এ কুরআনের উপর ‘আমল করে তার ব্যাপারে এখন তোমাদের কী ধারণা? (আহমদ, আবূ দাঊদ)(মিশকাত-২১৩৯)

وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ فَاسْتَظْهَرَهُ فَأَحَلَّ حَلَالَهُ، وَحَرَّمَ حَرَامَهُ أَدْخَلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ وَشَفَّعَهُ فِي عَشَرَةٍ مِنْ أَهْلِ بَيْتِهِ كُلِّهِمْ قَدْ وَجَبَتْ لَهُ النَّارُ» " رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ، وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ، وَحَفْصُ بْنُ سَلْمَانَ الرَّاوِي لَيْسَ هُوَ بِالْقَوِيِّ يَضْعُفُ فِي الْحَدِيثِ.

‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পড়ে ও একে মুখস্থ করে, এর হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম মেনে চলে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তার পরিবারের এমন দশ ব্যক্তির জন্য তার সুপারিশ কবূল করবেন, যাদের প্রত্যেকেরই নিশ্চিত ছিল জাহান্নাম। (আহমদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী। (মিশকাত-২১৪১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি হিফজ করেন,সেক্ষেত্রে আপনার মা কুরআনের হাফেজের মা হিসেবে কিয়ামতের ময়দানে উঠবে, একজন হাফেজের মা হওয়ার যে সম্মান আল্লাহ তায়ালা রেখেছেন, সে সম্মান তিনি পাবেন।

আপনি যদি হিফয করার পূর্বে আপনার মায়ের নামে ঈসালে সওয়াবের নিয়ত করেন, তাহলে সেই ছওয়াব পাবেন।

আপনি যদি ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ কুরআন হিফয করেন, তাহলে ঈসালে সওয়াবের নিয়তের জন্য আমার মাকেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ছওয়াব দিবেন।

(০২)
হ্যাঁ, ঈসালে ছওয়াবের নিয়ত করা যাবে।

(০৩)
হ্যাঁ, হাদীসটি সত্য।
উপরে হাদীসটি উল্লেখ রয়েছে।

(০৪)
দোয়া–১,

রাসুল ﷺ এক সাহাবীকে ঋণ ও দারিদ্র্য থেকে মুক্তির জন্য এই দোয়া শিখিয়েছিলেন:

اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাক্ফিনি বিহালালিকা আন হারামিকা, ওয়াগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক্।
অর্থ:

“হে আল্লাহ! আপনার হালাল দ্বারা আমাকে হারাম থেকে বাঁচিয়ে দিন এবং আপনার অনুগ্রহের দ্বারা আমাকে সবার মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে দূরে রাখুন।”

প্রতিদিন উক্ত দোয়া ৩ বার পড়তে পারেন।

---
দোয়া–২

রাসুল ﷺ দুঃখ–ক্লেশ ও ঋণের বোঝা দূর করার জন্য এই দোয়া শিখিয়েছেন:

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ، وَالعَجْزِ وَالكَسَلِ، وَالبُخْلِ وَالجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
(সহীহ বুখারী)

অর্থ: "হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই উদ্বেগ, দুঃখ, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা, ঋণের ভার এবং মানুষের দমন থেকে।"

সকাল-সন্ধ্যায় পড়া উত্তম।
---

দোয়া–৩,

এক ব্যক্তি ঋণে জর্জরিত হলে নবী ﷺ তাকে এই দোয়া পড়তে বলেছিলেন:

اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو، فَلَا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ...
---

(০৫)
রিযিক বৃদ্ধি ও স্বচ্ছলতার জন্য আমলঃ-

আমল–১: বেশি বেশি ইস্তিগফার।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

“তোমরা ইস্তিগফার করো—আল্লাহ তোমাদের রিযিক প্রচুর বৃদ্ধি করবেন।”
(সূরা নূহ ১০–১২)

প্রতিদিন ১০০ বার:
أستغفر الله العظيم
"আস্তাগফিরুল্লাহুল আজীম" পড়বেন।
---

আমল–২: সকাল–সন্ধ্যার দোয়াগুলো পড়া।

বিশেষ করে—

حسبي الله لا إله إلا هو عليه توكلت وهو رب العرش العظيم
সকাল-সন্ধ্যায় ৭ বার।

রিযিক, বিপদ থেকে সুরক্ষা, স্বচ্ছলতা—সবই এতে অন্তর্ভুক্ত।

আমল–৩: সূরা ওয়াকিয়া (রাত)

অনেক সাহাবা বলতেন:
“সূরা ওয়াকিয়া রিযিকের অভাব দূর করে।”

আমল–৪: বাবা-মায়ের সাথে ভালো ব্যবহার

সহীহ হাদীসে এসেছে—
এতে রিযিক বৃদ্ধি ও জীবনে বরকত আসে।

---

আমল–৫: সালাত আদায়

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 
“নামাজ প্রতিষ্ঠা কর; আমি তোমাদের রিযিক দেব।”
(সূরা ত্বাহা ২০:১৩২)

---
★রিযিক বৃদ্ধির দোয়া (হাদীস)

দোয়া–১ (সকালে পড়া উত্তম – আবু দাউদ)

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا، وَرِزْقًا طَيِّبًا، وَعَمَلًا مُتَقَبَّلًا
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে চাই উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিযিক এবং গ্রহণযোগ্য আমল।”
---
দোয়া–২,

رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
(সূরা কাসাস ২৪)
অর্থ: “হে আমার রব! আপনি যা কল্যাণ পাঠান, আমি তারই মুখাপেক্ষী।”


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...