আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
7 views
ago in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
যে ঘরে আয়াতুল কুরসি, কালিমায়ে তায়্যেবা বা আল্লাহর ৯৯ নাম লেখা থাকে, সে ঘরের কোনো ক্ষতি হয় না; এই বিশ্বাস থেকে এগুলো লিখে ঘরে টানিয়ে রাখা ঈমান ও আকিদার দৃষ্টিতে কেমন? যতক্ষণ টানানো না হচ্ছে, ততক্ষণ অনিশ্চয়তা, শঙ্কা অনুভব করা আর টানানো মাত্রই নিশ্চিন্ত হয়ে যাওয়া; এটা কি আল্লাহর উপর নির্ভরতার চেয়ে এই লেখাগুলোর উপর বেশি নির্ভরতা বুঝাচ্ছে?

1 Answer

0 votes
ago by (704,310 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم 

কোরআন মহান আল্লাহর কালাম বা বাণী। 
হাদীস রাসুলুল্লাহ সাঃ এর বানী।

এটি প্রদর্শনের বস্তু নয়। তাই শুধু প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কোরআন-হাদিস লিখিত বা ক্যালিগ্রাফি করা ওয়ালম্যাট বা শোপিস ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে কেউ যদি এ উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করে যে এর দ্বারা আল্লাহ তাআলার কথা স্মরণ হবে, এতে লিখিত বাণীর হিদায়াত ও শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে, তাহলে শর্ত সাপেক্ষে তা করা যেতে পারে। 
,
সেই শর্তগুলো হলো—
আয়াত ও হাদিসের মর্যাদার প্রতি খেয়াল রাখা, যেন তা নিচে পড়ে না যায় বা নাপাক কিছুর সঙ্গে স্পর্শ না হয়, আর ধুলাবালি থেকে নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও একই বিধান। কোরআন-হাদিসের মর্যাদার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। বাতাসে যাতে ওড়াউড়ি না করে, সে ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন।

তবে ক্যালেন্ডারে কোরআনের আয়াত বা হাদিস না লেখাই উত্তম। কারণ মানুষ এটি সেভাবে মর্যাদা দিয়ে ব্যবহার করে না এবং মাস ও বছর শেষে তা হেফাজত করে না; যেখানে-সেখানে তা ফেলে দেয়।

وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهٰذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِه اٰخَرِينَ

উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাব কুরআনের মাধ্যমে কোন কোন জাতিকে উন্নতি দান করেন। আবার অন্যদেরকে করেন অবনত।
(মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩২, দারিমী ৩৪০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১২৫, শু‘আবূল ঈমান ২৪২৮, সহীহাহ্ ২২৩৯।)
,
কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডার দ্বারা কিতাব বা বই-পুস্তক বাঁধাই করা মাকরুহ। এটা কোরআন-হাদিসের মর্যাদার পরিপন্থী। এ ধরনের ক্যালেন্ডার প্রয়োজন শেষে হেফাজত করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে পুড়িয়ে ছাইগুলো কোনো পবিত্র স্থানে দাফন করে দেবে। (ফতোয়ায়ে খানিয়া : ৩/৪২৪; আল বাহরুর রায়েক : ২/৩৭; ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া : ১৮/৬৭, ৬৯; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/১০৯, ৫/৩২২; দুররুল মুখতার : ৪/১৩০)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻳﻨﻬﻰ ﺃﻥ ﻳﺴﺎﻓﺮ ﺑﺎﻟﻘﺮﺁﻥ ﺇﻟﻰ ﺃﺭﺽ ﺍﻟﻌﺪﻭ؛ ﻣﺨﺎﻓﺔ ﺃﻥ ﻳﻨﺎﻟﻪ ﺍﻟﻌﺪﻭ )

রাসূলুল্লাহ সাঃ কুরআন সাথে নিয়ে শত্রু দেশে সফর করতে নিষেধ করেছেন।যাতেকরে শত্রুরা কুরআনকে নিয়ে গিয়ে কোনোপ্রকার অসম্মান না করতে পারে।(মুয়াত্তা মালিক-৫/২,মুসনাদু আহমাদ-২/৬,৬৩, সুনানু নাসাঈ-৮৫,সুনানু ইবনি মা'জাহ২৮৮০)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হাদীসে আয়াতুল কুরসির ফজিলত আছে—

পড়লে সুরক্ষা পাওয়া যায়,

ঘুমানোর আগে পড়লে শয়তান থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ইত্যাদি।

কিন্তু লেখা ঝুলিয়ে রাখলেই সুরক্ষা হবে—এই বিশ্বাসের কোনো প্রমাণ নেই।

তবে যেহেতু আল্লাহর কালাম থেকে বরকত চাওয়া বৈধ।

তাই এভাবে আয়াতুল কুরসি কালেমায়ে তাইয়্যেবা চার কুল সূরা ইয়াসিন ইত্যাদি কালিওগ্রাফি ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখলে অনেক বুযুর্গানে দ্বীনগণ বলেছেন যে এতে বরকত হবে।

তবে কেউ কেউ বলেন, লেখাকে “তাবিজের মতো” ঝুলিয়ে সুরক্ষার আশা করা অনেক আলেমের মতে বর্জনীয় বা বিদআত,এমনকি আকিদা দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

কিন্তু যদি উদ্দেশ্য হয়
ঘরে আল্লাহর কালাম স্মরণ করিয়ে দেওয়া,
আধ্যাত্মিক পরিবেশ সৃষ্টি,
ইবাদতের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো —
তাহলে এটা বৈধ ও অনুমোদিত।

কিন্তু যদি উদ্দেশ্য হয়

“এই ফ্রেমই আমাদের ঘরকে রক্ষা করছে”
“এটা না থাকলে বিপদ হবে”—
তাহলে তা শিরকের দিকে নিয়ে যেতে পারে, অন্ততপক্ষে আকিদাগত ভুল।

★আয়াতুল কুরসি পড়লে সুরক্ষা হয়—এটা সহিহ হাদিসে প্রমাণিত।
★ ঘরে কোরআন তিলাওয়াত করলে শয়তান দূরে থাকে—সহিহ দলিল আছে।
লেখা ঝুলানো নয়; পড়া ও আমল-ই প্রধান।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...