আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,150 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
closed by
i m a hanafi.now if i want to follow other madhab for witr prayer can i do that? because many times i forget to give takbir in witr salah and i go to ruku.what should i do?as per i know there are sahih narrations that we can read dua qunut after ruku too.and can we mix up madhab in this type of sohih narrations?or is it an ijma that one should follow a single madhab strictly for all small and big issues?
closed

1 Answer

+3 votes
by (709,320 points)
selected by
 
Best answer
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
 জবাবঃ- 
 তাকলীদ(মুজতাহিদের অনুসরণ) করা ফরয।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
 فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ 
 জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)
 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ 
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯) 
 উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
 انما شفاء العي السوال 
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে। 

এখন প্রশ্ন হল,
জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে? যার তাকলীদ করা হবে, তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েঝেন। শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ, উনার অমর গ্রন্থ আকিদাতুল-জায়্যিদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।মোটকথাঃ এ সমস্ত শর্তসমূহ আজকাল প্রায় বিরল। তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে যথাঃ- 
  1.  (১)তাকলীদে শাখসী বা ব্যক্তি তাকলীদ।অর্থাৎ শরীয়তের প্রত্যেকটি মাস'আলায় নির্দিষ্ট কোনো একজনকে তাকলীদ করা। 
  2.  (২)তাকলীদে গায়রে শাখসী বা স্বাধীন তাকলীদ, অর্থাৎ যেকোনো মাস'আলায় যেকোনো একজনকে তাকলীদ করা।সহজ কথা নিজের ইচ্ছানুযায়ী একেক মাস'আলায় একেকজনের তাকলীদ করা। 
 মুতাওয়াতির পর্যায়ের বর্ণনার মাধ্যমে প্রমাণিত রয়েছে যে, কারো কোনো মাস'আলা জানা না থাকলে না,তিনি বিজ্ঞজনের তাকলীদ করবেন।তাকলীদ করা ফরয।এটা হলো মতলকে তাকলীদ তথা সাধারণ তাকলীদের বিধান।সমস্ত উলামায়ে কেরাম এমনকি আহলে হাদীসের মুহাক্বিক ইমামগনও মতলকে তাকলীদ তথা সাধারণ তাকলীদকে স্বীকার করে থাকেন।অধিকাংশ আহলে হাদীস সাধারণ তাকলীদের ফরযিয়্যাতেরও প্রবক্তা। সুতরাং অজ্ঞদের জন্য বিজ্ঞজনের তাকলীদ করা যে ফরয,এতে কারো দ্বিমত নেই,মতবিরোধ নেই। তাকলীদের পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। তাকলীদে শাখসী করা হবে না গায়রে শাখসী করা হবে ?
 আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত তাকলীদে শাখসী গ্রহণযোগ্য মনে করেন।এবং এ ব্যাপারে তারা ওয়াজিবের বিধান প্রয়োগ করেন।ফরযের বিধান এজন্য আরোপ করেন না। কেননা সাধারণ তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে।
  1. (ক)তাকলীদে শাখসী
  2. (খ)তাকলীদে গায়রে শাখসী।
যেহেতু সর্বসম্মতভাবে মতলকে তাকলীদ ফরয।এবং তার দু'টি শাখা রয়েছে।তাই কোনো একটাকে মেনে নিলেই ফরয বিধান যে তাকলীদ রয়েছে,সেটা পালন হয়ে যাবে। চায় শাখসীকে পালন করা হোক বা গায়রে শাখসীকে পালন করা হোক।সুতরাং তাকলীদে গায়রে শাখসী করা দ্বারা ঠিক সেভাবেই ফরয দায়িত্ব আদায় হবে,যেভাবে তাকলীদে শাখসী দ্বারা ফরয দায়িত্ব আদায় হয়। কেননা মা'মুর বিহি তথা আদেশকৃত জিনিষ তাকলীদ হচ্ছে, মতলক বা ব্যাপক।তাই তার যে কোনো একটি শাখাকে আদায় করে নিলেই মা'মুর বিহি আদায় হয়ে যায়।যেমন কেউ তার খাদেমকে নির্দেশ দিল একজন ব্যক্তি উপস্থিত করার জন্য। তাহলে এক্ষেত্রে খাদেমের স্বাধীনত থাকবে,সে বকর, উমর যে কাউকে উপস্থিত করতে পারবে। এবং সে যাকেই ঢেকে নিয়ে আসবে,তার দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। 

সুতরাং যেহেতু কুরআনের ঘোষনা অনুযায়ী তাকলীদ করা ফরয।এবং এই তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে,যা আমরা ইতিপূর্বে জেনেছি।সাহাবা তাবেঈনদের যুগে উভয়টির উপরই আ'মল ছিলো। তাদের কেউ কেউ তাকলীদে শাখসী করতেন।আবার কেউ তাকলীদে গায়রে শাখসী তথা অনির্দিষ্ট তাকলীদ করতেন।এক্ষেত্রে কেউ কাউকে ভাল মন্দ কিছুই বলতেন না।এবং কেউ কাউকে অস্বীকার বা তিরস্কার কিছুই করতেন না। মোটকথাঃ দুই প্রকার তাকলীদই সাহাবা তাবেঈনদের জমানায় প্রচলিত ছিলো।কিন্তু যখন হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীতে অনেক মাযহাব ও মুজতাহিদের অাবির্ভাব হওয়া শুরু হল।অনেক কম মাস'আলা ই হালাল-হারামের ইখতেলাফ থেকে অবশিষ্ট থাকল।অন্যদিকে মানুষের সামনে প্রবৃত্তি তার ডানা মেলে দাড়াল।যেজন্য লোকজন রুখসতকে তালাশ করতে শুরু করল।যে ইমামের মাস'আলা নিজের প্রবৃত্তি অনুযায়ী হল, লোকজন সেটাকে অনুসরণ করতে শুরু করল।সাথে সাথে অন্য ইমামের মাযহাব কে প্রত্যাখ্যান করতে শুরু করল। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল,এই শ্বাসত দ্বীন একটা প্রবৃত্তির সমষ্টি হয়ে যাচ্ছে।দ্বীন-ইসলামকে অনুসরণ করার স্থলে লোকজন নিজ প্রবৃত্তির পূজা করতে শুরু করে দিল। এহেন পরিস্থিতে সে সময়ের বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম চিন্তা করলেন,যে তাকলীদে গায়রে সাখসী তথা স্বাধীন তাকলীদের ধরুণই যেহেতু এই সমস্যা হচ্ছে এবং ভবিষ্যততে আরো হবে। তাই তারা ভাবলেন, এখনই লোকজনকে স্বাধীন তাকলীদ থেকে বাধা প্রদাণ করতে হবে।এবং সবাইকে তাকলীদে শাখসীর উপর একাট্টা করতে হবে।নতুবা দ্বীন- ইসলাম ধংশ হয়ে যাবে। সুতরাং এই সমস্ত কারণেই তাকলীদে শাখসীর উপরই ইজমা সংঘটিত হয়ে গেলো। 

 নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান আল-ইনসাফ(৯৫) গ্রন্থে লিখেন, হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীর পর থেকে মানুষের মধ্যে তাকলীদে শাখসীর সূচনা হয়।এবং এ সময় এটা ওয়াজিব ছিলো। যেহেতু তাকলীদের দু'টি শাখার মধ্যে তাকলীদে গায়রে শাখসী ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে।এজন্য এখন কুরআন হাদীসে ঘোষিত ফরয তাকলীদ শুধুমাত্র তাকলীদে শাখসীতেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।এবং সবার জন্য এটা ওয়াজিব হয়ে গেছে।(জাওয়াহিরুল ফিকহ-২/২৪) 

 সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
 মুজতাহিদ ফিল মাযহাব তথা বিজ্ঞ আলেম ব্যতীত সবার জন্য তাকলীদে শাখসী করা ওয়াজিব।দৈনন্দিন জীবনের সকল মাস'আলায় কোনো একজন মুজতাহিদ বা মাযহাবের অনুসরণ করা ওয়াজিব। সেহেতু আপনি যদি হানাফি মাযহাবকে ফলো করে থাকেন,তাহলে সর্বক্ষেত্রে হানাফি মাযহাবকেই ফলো করবেন।কোনো একটি মাস'আলায় অন্য কোনো মাযহাবকে অনুসরণ করতে পারবেন না।হ্যা আপনার জন্য এ সুযোগ রয়েছে যে,আপনি মাযহাবকে চেঞ্জ করে নিবেন।অর্থাৎ প্রথমে যদি কোনো এক মাযহাবকে ফলো করে থাকেন,তাহলে পরবর্তীতে সকল মাস'আলা ভিন্ন কোনো মাযহাবকে ফলো করতে পারবেন।এই চেঞ্জ করার একমাত্র উদ্দেশ্য থাকতে হবে কুরআন হাদীসকে সঠিক ভাবে অনুসরণ করে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়া।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 215 views
...