আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+3 votes
1,571 views
in সালাত(Prayer) by
নামাযে আ'মলে কাছির সম্পর্কে জানতে চাই।

1 Answer

+2 votes
by (696,320 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

সমাধানঃ- 
 মুসাল্লির এমন নড়াচড়া যা নামায পরিপন্থী, তা দু-ভাগে বিভক্ত- 
  1. (ক)পরিমাণে সামান্য, যাকে শরয়ী পরিভাষায় 'আ'মলে ক্বালীল' বলা হয়ে থাকে। 
  2. (খ)পরিমাণে বেশী যাকে শরয়ী পরিভাষায় 'আ'মলে কাসির' বলা হয়ে থাকে। 
 নামাযরত অবস্থায় মুসাল্লির কোনো প্রকার হারকাত/নড়াচড়া 'আ'মলে কাছির' বলে প্রমাণিত হলে,উক্ত মুসাল্লির নামায সর্বসম্মতিক্রমে ফাসিদ হয়ে যাবে। 

 আ'মলে কাছির নির্ণয়ে ফুকাহায়ে কেরামের মধ্য যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে।যথা- 
  1.  (১) সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতানুযানী 'আ'মলে কাছির' বলা হয়,এরূপ নড়াচড়া-কে যে, নড়াচড়ায় কর্মরতকে মুসাল্লি সম্পর্কে নামাযের বাহির থেকে অবলোকনকারীর নিশ্চিত ধারণা জন্মে যে,সে এখন আর নামাযে নেই। এ ধরনের কাজ দ্বারা তার নামায নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু যদি উক্ত মুসাল্লি সম্পর্কে নামাযরত বলে ধারণা করা যায়,তাহলে এমতাবস্থায় সে কাজকে 'আ'মলে কাছীর' বলা যাবে না।বরং একে 'আ'মলে ক্বালিল'-ই বলা হবে, এবং তখন নামায নষ্ট হবে না। 
  2.  (২) যে সমস্ত কাজে সাধারণত দু'হাত ব্যবহৃত হয়,সেটাকে আ'মলে কাছির বলে,যেমন লুঙ্গী বাঁধা ও পাগড়ী বাঁধা।ঐ সমস্ত কাজ যদি একহাত দ্বারাও করা হয় তবে ও তা আ'মলে কাসির বলে গণ্য হবে। এবং যেই সমস্ত কাজ সাধারণত একহাত দ্বারা করা হয়,সেই সমস্ত কাজকে যদি তখন দুই হাত দ্বারাও করা হয়, তবে তাকে আ'মলে কাছির বলা যাবে না বরং তাকে আ'মলে ক্বালিল-ই বলা হবে, যতক্ষণ না তা তিন হরকত পরিমাণ হয়। যেমন লুঙ্গী খোলা,ও টুপি পরিধান করা,ইত্যাদি। 
  3. (৩) ধারাবাহিক তিনবার হারকাত (নড়াচড়া, চুলকানো,কাপড় বা অঙ্গ নিয়ে খেলায় মত্ত হওয়া) অর্থাৎ এই তিন হারকাত ধারাবাহিক ভাবে কোনো এক রুকুনের মধ্যে না হওয়া।যদি এমন হয় তাহলে এটা 'আ'মলে কাছির'।নতুবা সেটা আ'মলে ক্বালীল। 
  4.  (৪) কর্তার ইচ্ছাকৃত এমন কাজ যেটাকে সাধারণত কোনো স্বতন্ত্রস্থানে করা হয়।যেমনঃ নামাযের মধ্যে বাচ্ছা কর্তৃক মহিলার দুধ পান করানো,এবং উত্তেজনার সাথে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে চুমু দেওয়া বা স্পর্শ করা।ইত্যাদি। 
  5.  (৫) নামাযির রায়ের উপর নির্ভরশীল।সে যে কাজকে কাছির মনে করবে,সেটা আ'মলে কাছির,অন্যথায় আ'মলে ক্বালীল। 
দ্বিতীয়,তৃতীয়,চতুর্থ প্রকার মূলত প্রথম প্রকারের ব্যখ্যা।এভাবে যে,দ্বিতীয়,তৃতীয় ও চতুর্থ প্রকারগুলির মধ্যে উল্লেখিত কাজের কর্তাকে নামাযের বাহির থেকে অবলোকন কারীর নিশ্চিত ধারণা জন্মিবে যে, সে এখন আর! নামাযে নেই। 

মুদ্দাকথা: 
প্রথম চার প্রকারই 'আ'মলে কাছির' হওয়ার বেলায় গ্রহণযোগ্য। পঞ্চম প্রকার 'আ'মলে কাছির বলে ধর্তব্য হবে না।কেননা সব মানুষের অনুভূতি সমান নয়।কেউ একটা কাজকে 'আ'মলে কাছির' মনে করলে অন্যজন এটাকে 'আ'মলে ক্বালিল' মনে করবে।এক্ষেত্রে মতানৈক্য সৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থেকে যায়। যেমন,এক ইমামের পিছনে একি কাজে জড়িত মুসাল্লিদের মধ্য থেকে ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গের নামায ফাসিদ হবে,যাদের ধারণা হবে যে,এটা 'আ'মলে কাছির'।আর ঐ সমস্ত মুসাল্লিদের নামায ফাসিদ হবে না যাদের ধারণা হবে যে, এটা 'আ'মলে ক্বালিল'। 

(প্রামাণ্যগ্রন্থঃ ফাতাওয়ায়ে শামী-২/৩৮৫(মাকতাবায়ে যাকারিয়া) ফাতাওয়ায়ে কাযিখান-১/৬৩ আল-ফিকহুল হানাফি ফি ছাওবিহিল জাদীদ-১/২৪৮ ফাতাওয়া আন-নাওয়াযিল(আবুল লেইছ সামারকন্দি)-৮৯ আল-ফিকহু আলাল মাযাহিবিল আরবা'আহ-১/৩০৫ তাবয়ীনুল হাক্বাইক্ব-১/১৬৫ খুলাসাতুল ফাতাওয়া-১/১৩০)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...