আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
92 views
in পবিত্রতা (Purity) by (22 points)
edited by
আমি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। নাপাকি নিয়ে প্রচুর সন্দেহ কাজ করে। আমি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। নাপাকি নিয়ে প্রচুর সন্দেহ কাজ করে। আমি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। নাপাকি নিয়ে প্রচুর সন্দেহ কাজ করে। আমি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। নাপাকি নিয়ে প্রচুর সন্দেহ কাজ করে। আমি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। নাপাকি নিয়ে প্রচুর সন্দেহ কাজ করে। আমি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। নাপাকি নিয়ে প্রচুর সন্দেহ কাজ করে।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

কাপড়ে অপবিত্র জিনিষ লেগে উক্ত কাপড়কে অপবিত্র করে ফেলে। যাকে আরবীতে নাজাসত বলে।

 

নাজাসত দুই প্রকার যথা: . নাজাসাতে গালিজাহ খ. নাজাসাতে খাফিফাহ

 

প্রথম প্রকারঃ নাজাসতে গালিজাহ

যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে,

وَهِيَ نَوْعَانِ (الْأَوَّلُ) الْمُغَلَّظَةُ وَعُفِيَ مِنْهَا قَدْرُ الدِّرْهَمِ

নাজসতে গালিজাহ যা এক দিরহাম পরিমাণ হলে ক্ষমাযোগ্য।

 

(নাজাসতে গালিজাহ কি কি?)

সে সম্পর্কে বলা হয়,

كل ما يخرج من بدن الإنسان مما يوجب خروجه الوضوء أو الغسل فهو مغلظ كالغائط والبول والمني والمذي والودي والقيح والصديد والقيء إذا ملأ الفم…... كذا في الظهيرية فإذا أصاب الثوب أكثر من قدر الدرهم يمنع جواز الصلاة. كذا في المحيط.

ভাবার্থঃ-ঐ সমস্ত জিনিষ যা মানুষের শরীর থেকে বের হয়ে ওজু গোসলকে ওয়াজিব করে দেয়। তা হল নাজাসতে গালিজাহ,যেমনঃ- পায়খানা,পেশাব,বীর্য, মযি(বীর্যের পূর্বে যা বাহির হয়),ওদি(প্রস্রাবের সময় যা বাহির হয়)ফুঁজ,বমি যখন তা মুখ ভরে হয়,(বাহরুর রায়েক)এবং আরো ও নাজাসতে গালিজাহ হল যথাক্রমে-হায়েয ও নেফাসের রক্ত,ছোট্ট বালক/বালিকার প্রস্রাব তারা আহার করুক বা না করুক। মদ,প্রবাহিত রক্ত,মৃত জানোয়ারের গোসত,ঐ সমস্ত প্রাণীর প্রস্রাব ও গোবর যাদের গোস্ত ভক্ষণ হারাম।গরুর গোবর,কুকুরের বিষ্টা, মোরগ এবং হাস ও পানী হাসের বিষ্ঠা। হিংস প্রাণীর বিষ্টা,বিড়ালের বিষ্টা,ইদুরের বিষ্টা। বিড়াল এবং ইদুরের প্রস্রাব যদি কাপড়ে লাগে তবে কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরামগণ মনে করেন যে,যদি তা এক দিরহামের বেশী হয় তবে নাপাক। আর কিছুসংখ্যক না করেন। সাপের বিষ্টা,ও প্রস্রাব। জোকের বিষ্টা। আঠালো ও টিকটিকির রক্ত যদি তা প্রবাহিত হয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/৪৬)

 

নাজাসতে গালিজাহ কাপড় বা শরীরে লাগলে, এক দিরহাম (তথা বর্তমান সময়ের পাঁচ টাকার সিকি)পরিমাণ বা তার চেয়ে কম হলে, উক্ত কাপড়ের সাথে নামায বিশুদ্ধ হবে। যদিও তা ধৌত করা উত্তম যদি সময়-সুযোগ থাকে।

 

দ্বিতীয় প্রকারঃ নাজাসতে খাফিফাহ

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে

(والثاني المخففة) وعفي منها ما دون ربع الثوب…...وفي الحقائق وعليه الفتوى. كذا في البحر الرائق وبول ما يؤكل لحمه والفرس وخرء طير لا يؤكل مخفف هكذا في الكنز.

ভাবার্থঃ নাজাসতে খাফিফাহ, যা এক চতুর্থাংশের কম হলে ক্ষমাযোগ্য। চতুর্থাংশ কিসের? সেটা নিয়ে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেন,কাপড় বা শরীরের যে অংশে নাজাসত লাগবে তার চতুর্থাংশ উদ্দেশ্য যেমন,আস্তিন,হাতা,এবং হাত পাঁ ইত্যাদি। এটাই বিশুদ্ধ মত।ঐ সমস্ত প্রাণীর প্রস্রাব যেগুলোর গোস্ত ভক্ষণ করা হালাল,এবং ঐ সমস্ত পাখীর বিষ্টা যেগুলোর গোসত ভক্ষণ করা হারাম। এগুলা হল নাজাসতে খাফিফাহ। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/৪৬)

 

নাজাসতে খাফিফাহ কাপড় বা শরীরে লাগলে এক চতু্র্থাংশ পর্যন্ত মাফ। তথা ঐ কাপড় পরিধান করে নামাজ পড়লে নামায বিশুদ্ধ হবে। যদিও তা ধৌত করা উত্তম যদি হাতে সময়-সুযোগ থাকে।

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ

আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}

 

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/53602/

কাপড় ধৌত করার ক্ষেত্রে ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে জানুন - https://ifatwa.info/54884/

নাপাক বিছানাতে ঘুমাতে ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে জানুন - https://ifatwa.info/54888/

 

ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ

ইবনে হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم

অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে পৌঁছাবে।

 

এর সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্ পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।

 

রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ عَلَى الْوَسْوَسَة

সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)

 

ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,

له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان

ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...