আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (51 points)
আমি একজন সাধারণ শিক্ষার শিক্ষার্থী। তাই কুরআন এর হক আদায় এর উদ্দেশ্যে আমি প্রতিদিন অল্প করে পড়লে (৪ পৃষ্ঠার মত) হবে? বা প্রতিদিন কুরআন পাঠ না করলে কি গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ: " «لَمْ يَفْقَهْ مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ فِي أَقَلَّ مِنْ ثَلَاثٍ» " رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ، وَأَبُو دَاوُدَ، وَالدَّارِمِيُّ.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি তিন দিনের কম সময়ে কোরআন পড়লো, সে কুরআন বুঝেনি।
(সুনানু তিরমিযি-২৯৪৯, সুনানু আবি-দাউদ-১৩৯০, সুনানু ইবনি মা'জা-১৩৪৭,মিশকাত-২২০১)

উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় মিশকাতের টিকায় আহমদ আলী সাহরানপুরী (হানাফি) রাহ লিখেন,জনসাধারণের জন্য তিন দিনের কম কুরআন খতম করা মাকরুহ।এবং ৪০দিনের ভিতর কুরআন খতম না দেয়া মাকরুহ।(মিশকাতুল মাসাবিহ-হিন্দি নুসখা) বিস্তারিত জানুন- 1363

কুরআনের তেলাওয়াত কেমন হবে? এ সম্পর্কে একটি হাদীসে এছেসে, ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। 
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ أَنْكَحَنِيْ أَبِي امْرَأَةً ذَاتَ حَسَبٍ فَكَانَ يَتَعَاهَدُ كَنَّتَهُ فَيَسْأَلُهَا عَنْ بَعْلِهَا فَتَقُوْلُ نِعْمَ الرَّجُلُ مِنْ رَجُلٍ لَمْ يَطَأْ لَنَا فِرَاشًا وَلَمْ يُفَتِّشْ لَنَا كَنَفًا مُنْذُ أَتَيْنَاهُ فَلَمَّا طَالَ ذَلِكَ عَلَيْهِ ذَكَرَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ الْقَنِيْ بِهِ فَلَقِيْتُهُ بَعْدُ فَقَالَ كَيْفَ تَصُوْمُ قَالَ كُلَّ يَوْمٍ قَالَ وَكَيْفَ تَخْتِمُ قَالَ كُلَّ لَيْلَةٍ قَالَ صُمْ فِيْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةً وَاقْرَإِ الْقُرْآنَ فِيْ كُلِّ شَهْرٍ قَالَ قُلْتُ أُطِيْقُ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ قَالَ صُمْ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فِي الْجُمُعَةِ قُلْتُ أُطِيْقُ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ قَالَ أَفْطِرْ يَوْمَيْنِ وَصُمْ يَوْمًا قَالَ قُلْتُ أُطِيْقُ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ قَالَ صُمْ أَفْضَلَ الصَّوْمِ صَوْمَ دَاوُدَ صِيَامَ يَوْمٍ وَإِفْطَارَ يَوْمٍ وَاقْرَأْ فِيْ كُلِّ سَبْعِ لَيَالٍ مَرَّةً فَلَيْتَنِيْ قَبِلْتُ رُخْصَةَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَذَاكَ أَنِّيْ كَبِرْتُ وَضَعُفْتُ فَكَانَ يَقْرَأُ عَلَى بَعْضِ أَهْلِهِ السُّبْعَ مِنَ الْقُرْآنِ بِالنَّهَارِ وَالَّذِيْ يَقْرَؤُهُ يَعْرِضُهُ مِنْ النَّهَارِ لِيَكُوْنَ أَخَفَّ عَلَيْهِ بِاللَّيْلِ وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَتَقَوَّى أَفْطَرَ أَيَّامًا وَأَحْصَى وَصَامَ مِثْلَهُنَّ كَرَاهِيَةَ أَنْ يَتْرُكَ شَيْئًا فَارَقَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِ قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ وَقَالَ بَعْضُهُمْ فِيْ ثَلَاثٍ وَفِيْ خَمْسٍ وَأَكْثَرُهُمْ عَلَى سَبْعٍ
তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে এক সম্ভ্রান্ত বংশীয় মহিলার সঙ্গে শাদী দেন এবং প্রায়ই তিনি আমার সম্পর্কে আমার স্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন। আমার স্ত্রী বলত, সে কতইনা ভাল মানুষ যে, সে কখনও আমার বিছানায় আসেনি এবং শাদীর পর থেকে আমার সম্পর্কে খোঁজ খবরও নেয়নি। এ অবস্থা যখন দীর্ঘদিন পর্যন্ত চলতে থাকল তখন আমার পিতা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমার সম্পর্কে জানালেন।তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পিতাকে বললেন, তাকে আমার সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করুন। এরপর আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেমন সওম পালন কর? আমি উত্তর দিলাম, প্রতিদিন সওম পালন করি। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, এ অবস্থায় পূর্ণ কুরআন মাজীদ খতম করতে তোমার কত সময় লাগে? আমি উত্তর দিলাম, প্রত্যেক রাতেই এক খতম করি। তিনি বললেন, প্রত্যেক মাসে তিনদিন সওম পালন করবে এবং কুরআন এক মাসে এক খতম দেবে।’’ আমি বললাম, আমি এর চেয়ে অধিক করার সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে প্রতি সপ্তাহে তিনদিন সওম পালন করবে।আমি বললাম, আমি এর চেয়ে অধিক করার শক্তি রাখি। তিনি বললেন, দু’দিন পর একদিন সওম পালন কর। আমি বললাম, আমি এর চেয়ে অধিক সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে সব চেয়ে উত্তম পদ্ধতির সওম পালন কর। তা হল, দাঊদ (আঃ)-এর সওম। তিনি এক দিন অন্তর একদিন সওম পালন করতেন এবং প্রতি সাত দিনে একবার আল্লাহর কিতাব খতম করতেন। হায়! আমি যদি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দেয়া সুবিধা গ্রহণ করতাম! এখন আমি দুর্বল বৃদ্ধ হয়ে গেছি।‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) প্রত্যেক দিন তার পরিবারের একজন সদস্যের সামনে কুরআনের সপ্তমাংশ পাঠ করে শোনাতেন। দিবা ভাগে পাঠ করে দেখতেন, তার স্মরণশক্তি সঠিক আছে কিনা? যা তিনি রাতে পাঠ করবেন তা যেন সহজ হয় এবং যখনই তিনি শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির ইচ্ছা করতেন তখন কয়েক দিন সওম পালন বন্ধ রাখতেন এবং পরবর্তীতে ঐ ক’দিনের হিসাব করে সওম পালন করতেন। কেননা, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় যে নিয়ম পালন করতেন পরে সে নিয়ম ত্যাগ করা অপছন্দ মনে করতেন। 
আবূ ‘আবদুল্লাহ্ বলেন কেউ তিন দিনে, কেউ পাঁচ দিনে এবং অধিকাংশ লোক সাত দিনে কুরআন খতম করতেন।সহীহ বোখারী-৫০৫২ (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৮৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রতিদিন কুররান পাঠ করা অবশ্যই সওয়াবের কাজ।৪০দিনের ভিতর এক খতম কুরআন পড়া সুন্নত।৩দিনের কম এব ৪০ দিনের বেশী সময়ে কুরআন খতম দেয়া মাকরুহ।
অর্থাৎ তিন দিনের পূর্বে খতম দেয়া যাবে না।এবং চল্লিশ দিন চলে গেল আর কুরআন খতম হলনা।উভয়টাই মাকরুহ।
সুতরাং
আপনি যে প্রতিদন পড়তে পারছেন না সেজন্য গোনাহ হবে না।তবে চল্লিশদিনের ভিতরে আপনাকে এক খতম দিতে হবে।যদি আপনি পড়তে পারেন,এবং আপনার হাতে সময়ও থাকে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...