আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
593 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
closed by
ক)ফজরের পরে ইশরাক নামাযে পর্যন্ত এক জায়গায় বসে থাকা বলতে কি বুঝিয়েছে? আমি যিকর রত অবস্থায় বাসায় এসে নামায পড়লে কি কবুল হজ্বের সওয়াব পাবো না?

খ) আমার আগের কাযা নামায বাকি। তো এখন আমি ইশরাক,চাশত,আওয়াবিন,তাহাজ্জুদ বা অন্য নামায এর সময়ে কাযা নামায পড়লে কি ঐসব নফলের সওয়াব পাবো?  যেহেতু আমি নফল পড়ার আগে কাযা নামায পড়া বেশি জরুরী।

গ)  তাহিয়্যাতুল মসজিদ /অযু এর সময়ে কাযা নামায পড়লে  এইসব নফলের সওয়াব পাওয়া যাবে? যেহেতু আমি নফল পড়ার আগে কাযা নামায পড়া বেশি জরুরী।

ঘ) জামাতের পরে বাকি নফল নামায বাসাতে পড়াতে প্রতি কদমে নেকি আছে। তো নফলের বদলে কাযা নামায যদি বাসাতে পড়ি, এই নিয়তে কি আমি প্রতি কদমে সওয়াব পাবো কিনা। যেহেতু আমি নফল পড়ার আগে কাযা নামায পড়া বেশি জরুরী।

ঙ)কুরানের গিলাফ মানে কি কুরানের মলাট?  নাকি যেই কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখি সেটা?
চ) আমি যদি কারো দোষ, যা আলোচনা করলে অন্যেরা সচেতন হবে। তা কি গীবত হবে?

ছ)গীবত আসলে কেমন একটু বলিয়েন

জ) এই সাইটের প্রশ্ন করা জায়গার নিচে পেন্সিল আইকন, বাতিত আইকন আছে, সেফটি পিন আইকন আছে,।
বাতি আইকন এর কাজ কি?

ঝ) ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা মারা কি জাযেয বা মাকরুহ
closed

1 Answer

+1 vote
by (559,140 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(ক)
সুন্নাত নফল নামাজ তো বাড়িতেই পড়া উত্তম। 

কেননা হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حديث زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اتَّخَذَ حُجْزَةً، مِنْ حَصِيرٍ، في رَمَضَانَ، فَصَلَّى فِيهَا لَيَالِيَ، فَصَلَّى بِصَلاَتِهِ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَلَمَّا عَلِمَ بِهِمْ جَعَلَ يَقْعُدُ، فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ، فَقَالَ: قَدْ عَرَفْتُ الَّذِي رَأَيْتُ مِنْ صَنِيعِكُمْ، فَصَلُّوا أَيُّهَا النَّاسُ فِي بُيُوتِكُمْ فَإِنَّ أَفْضَلَ الصَّلاَةِ صَلاَةُ الْمَرْءِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ الْمَكْتُوبَة

যায়দ ইবনু সাবিত (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান মাসে একটি ছোট কামরা বানালেন। তিনি [বুসর ইবনু সা‘ঈদ (রহ.)] বলেন, মনে হয়, [যায়দ ইবনু সাবিত (রাযি.)] কামরাটি চাটাই তৈরি ছিল বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি সেখানে কয়েক রাত সলাত আদায় করেন। আর তাঁর সাহাবীগণের মধ্যে কিছু সাহাবীও তাঁর সঙ্গে সলাত আদায় করেন। তিনি যখন তাঁদের সম্বন্ধে জানতে পারলেন, তখন তিনি বসে থাকলেন। পরে তিনি তাঁদের নিকট এসে বললেন, তোমাদের কার্যকলাপ দেখে আমি বুঝতে পেরেছি। হে লোকেরা! তোমরা তোমাদের ঘরেই সলাত আদায় কর। কেননা, ফারয (ফরয) সলাত ব্যতীত লোকেরা ঘরে যে সলাত আদায় করে তা-ই উত্তম।
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ১০; আযান, অধ্যায় ৮১, হাঃ ৭৩১; মুসলিম, পর্ব ৬; মুসাফির ব্যক্তির সলাত ও তা কসর করার বর্ণনা, অধ্যায় ২৯, ৭৮১
,
বাকী ইশরাক নামাজের ব্যাপারে হাদীসে একটি বিশেষ ফজিলত রয়েছে যে যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করে, তখন সে তার জায়গায় বসে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত মহান আল্লাহপাকের স্মরণ করে, তারপরে সে দুটি রাকাত তিলাওয়াত করে। তাহলে সে কবুল হজ এবং ওমরাহর পুরষ্কার পাবেন। 
,
সুতরাং, যদি তিনি মসজিদে নামাযের জায়গায় বসে যিকির ইত্যাদিতে লিপ্ত হন এবং সেখানে ইশরাকের নামাজ আদায় করেন তবে তার ফজিলত ঘরে ইশরাক আদায় করার চেয়ে বেশি হবে।
,
তাই কবুল হজের ছওয়াবের জন্য হাদীসের হুবহু অর্থের উপর করাই উচিত।

হাদীসটির পূর্ণরুপঃ
 
باب ذِكْرِ مَا يُسْتَحَبُّ مِنَ الْجُلُوسِ فِي الْمَسْجِدِ بَعْدَ صَلاَةِ الصُّبْحِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ 

ফজরের নামায আদায়ের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত মাসজিদে বসে থাকা মুস্তাহাব।

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْجُمَحِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا أَبُو ظِلاَلٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ " . قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ " .

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাআতে আদায় করে, তারপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহ তা'আলার যিকর করে, তারপর দুই রাকাআত নামায আদায় করে- তার জন্য একটি হাজ্জ ও একটি উমরার সাওয়াব রয়েছে। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ণ, পূর্ণ, পূর্ণ (হাজ্জ ও উমরার সাওয়াব)।

-হাসান। তিরমিজি ৫৮৬ তা’লীকুর রাগীব- (১/১৬৪, ১৬৫), মিশকাত- (৯৭১)।

(খ,গ)
এক নফল নামাজে একাধিক নফল নামাজের নিয়ত করা যায়।
যেমন একই নামাজে তাহিয়্যাতুল মসজিদ,তাহিয়্যাতুল অযু,ইশরাক ইত্যাদির নিয়ত করা যাবে।
সবগুলোই আদায় হবে।
,
তবে ফরজ নামাজের সাথে অন্য কোনো নামাজ আদায় হয়না।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শুধু কাজা নামাজই আদায় হবে।
ইশরাক,তাহাজ্জুদ ইত্যাদি  আদায় হবেনা।

দারুল উলুম দেওবন্দ এর 158379 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।

,
(ঘ)
জামাতের পরে বাকি নফল নামায বাসাতে পড়াতে প্রতি কদমে নেকি সংক্রান্ত হাদীস পাইনি।
,
তবে নফল নামাজ বাসাতেই পড়া উত্তম।
★কাজা নামাজ বাসাতেই বা একাকী কোনো জায়গাতেই পড়া উচিত।
কেননা ফুকাহায়ে কেরামগন বলেছেন যে মসজিদে সকলের সামনে কাজা নামাজ পড়লে যদি তারা জেনে যায় যে আপনি কাজা নামাজই পড়ছেন তাহলে এটি গুনাহকে প্রকাশ করা হবে।
যাহা ঠিক নয়। 
,
(ঙ)
এখানে গেলাফ বলতে যেই কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখা হয় সেটাই উদ্দেশ্য। 
অর্থের দিক লক্ষ্য করে মলাটকেও গিলাফ বলা যাবে।
এটি মুত্তাসিল তথা লেগে থাকা গেলাফ।
যাহা অযু ছাড়া স্পর্শ জায়েজ নেই।
,
(চ,ছ)
বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(জ)
সংশ্লিষ্ট কাহারো থেকে জেনে নিলে ভালো হতো।
,
(ঝ)
এই বিষয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। 
,
কেহ কেহ বলেছেন যে জায়েজ নেই। কারণ এতে বিদ্যুৎ তথা আগুন দিয়ে হত্যা করা লাযিম হয়। যা বৈধ নয়। আগুন দিয়ে শাস্তি দেয়া এটা আল্লাহ তাআলা নির্ধারিত শাস্তি। আর আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত শাস্তি কোন বান্দার প্রয়োগ করা জায়েজ নয়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ عِكْرِمَةَ أَنَّ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلاَمُ أَحْرَقَ نَاسًا ارْتَدُّوا عَنِ الإِسْلاَمِ فَبَلَغَ ذَلِكَ ابْنَ عَبَّاسٍ فَقَالَ لَمْ أَكُنْ لأَحْرِقَهُمْ بِالنَّارِ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ « لاَ تُعَذِّبُوا بِعَذَابِ اللَّهِ »

হযরত ইকরিমা রাঃ থেকে বর্ণিত। হযরত আলী রাঃ একদল মুরতাদকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেন। এ সংবাদ ইবনে আব্বাস রাঃ এর কাছে পৌঁছলে তিনি বলেনঃ আমি হলে তাদের আগুন দিয়ে পুড়াতাম না। কারণ, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ “তোমরা আল্লাহর শাস্তি দিয়ে কাউকে শাস্তি দিও না। 
{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৩৫৩, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৬৬৩৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৪৫৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৯০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৩৫২৩, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৬০৬, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৮৫৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৫৫২}

,
অন্যান্য ইসলামী স্কলারদের মতে এটি জায়েজ আছে।  
তারা বলেন যে ইলেকট্রিক ব্যাট ইত্যাদির মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মশা-মাছি মারা জায়েজ আছে ইনশাআল্লাহ।
,
হাদিসে এসেছে, আগুনের মাধ্যমে শাস্তি দিয়ে প্রাণী হত্যা করা হারাম। কিন্তু এ বৈদ্যুতিক মেশিন দ্বারা মশা মারা আর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা এক নয়। কারণ, বৈদ্যুতিক শককে আগুন বলা ঠিক নয়। প্রমাণ হল, এতে যদি একটুকরো কাপড় বা কাগজ রাখা হয় তাতে আগুন লাগবে না। বরং এই যন্ত্রটি মশা-মাছির জীবনীশক্তিকে শুষে নয়। সুতরাং এটা আগুন দিয়ে পোড়ানোর হুকুমের আওতায় আসবে না।

অতএব এভাবে মারতে কোন বাধা নেই।
(ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং-৫১৭৬, উসায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ৫৯/১২)।
,
আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...