জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(ক)
যে সমস্ত বাচ্চারা ভালো মন্দের পার্থক্য করতে পারে,তাদের বাবার অনুমতিক্রমে তাদের ক্রয় বিক্রয় জায়েজ আছে।
অনুমতি স্পষ্ট হতে পারে,দালালাতান (ঈঙ্গিত সূচক) হতে পারে।
যেমন তার ক্রয় বিক্রয়ের উপর পিতার চুপ থাকা,নিষেধ না করা,এগুলোও অনুমতি প্রদানের অন্তর্ভুক্ত।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানীয়াহ ৬/৩)
আর যে সমস্ত বাচ্চারা আরো ছোট,তাদের ক্রয় বিক্রয় জায়েজ নেই।
হ্যাঁ সামান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে জায়েজ আছে।
যেমন লজেন্স ইত্যাদি।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত লজেন্স বা ছোট্র কোনো কিছুর বিক্রয় জায়েজ আছে।
,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ ابۡتَلُوا الۡیَتٰمٰی حَتّٰۤی اِذَا بَلَغُوا النِّکَاحَ ۚ فَاِنۡ اٰنَسۡتُمۡ مِّنۡہُمۡ رُشۡدًا فَادۡفَعُوۡۤا اِلَیۡہِمۡ اَمۡوَالَہُمۡ
আর ইয়াতিমদেরকে যাচাই করবে যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের যোগ্য হয়; অতঃপর তাদের মধ্যে ভাল–মন্দ বিচারের জ্ঞান দেখতে পেলে তাদের সম্পদ তাদেরকে ফিরিয়ে দাও।
(সুরা নিসা ০৬)
এই আয়াতকে সামনে রেখে ফুকাহায়ে কেরামগন বলেছেনঃ
ومعناه ; اختبروهم لتعلموا رشدهم . وإنما يتحقق اختبارهم بتفويض التصرف إليهم من البيع والشراء ; ليعلم هل يُغبن أو لا . ولأنه عاقل مميز , محجور عليه , فصح تصرفه بإذن وليه , كالعبد . وفارق غير المميز , فإنه لا تحصل المصلحة بتصرفه ; لعدم تمييزه ومعرفته , ولا حاجة إلى اختباره ; لأنه قد علم حاله .
সারমর্মঃ
আয়াতের ব্যাখ্যা হলো বিবাহের যোগ্য বুঝার জন্য তাদের পরিক্ষা করো,যাতে তাদের যোগ্যতা সম্পর্কে জানা যায়।
আর তাদের পরিক্ষা নেওয়া তখনই সম্ভব হবে,যখন তাদেরকে ক্রয় বিক্রয় করার দায়িত্ব অর্পন করবে,,,,,
قال العلامۃ المرغینانیؒ: ثم الاذن کما یثبت بالصریح یثبت بالدلالۃ کما اذا رأی عبدہ یبیع ویشتری فسکت یصیر مَا ذُوْنًا عندنا۔ (الھدایۃ:ج؍۳،ص؍۳۶۲، کتاب الماذون)
সারমর্মঃ
অনুমতি এটি স্পষ্ট ভাবেও হতে হতে পারে,ঈঙ্গিত সূচকও হতে পারে।
যেমন কেহ দেখলো তার গোলাম ক্রয় বিক্রয় করতেছে,সেটা দেখে সে চুপ থাকলো,সুতরাং সে অনুমতি প্রাপ্ত হবে।
قال فی الھندیۃ:اذااِذن لصبیٍّ یعقل البیع والشراء یجوزیریدبہٖ انہ یعقل معنی البیع والشراء بان عرف ان البیع سالب للملک والشراء جالب عرف الغبن الیسیر من الفاحش لانفس العبارۃ کذافی الصُغرٰی۔(الفتاوٰی الھندیۃ:ج؍۵،ص؍۱۱۰،الباب الثانی عشر فی الصبیّ اوالمعتوہ۔۔۔۔۔الخ)
সারমর্মঃ
যখন কোনো বাচ্চাকে ক্রয় বিক্রয়ের অনুমতি দেওয়া হয়,(যে বাচ্চা ক্রয় বিক্রয় বুঝে) তাহলে জায়েজ হবে।
قال ابن قدامة في "المغني" (4/168) : " ويصح تصرف الصبي المميز بالبيع والشراء , فيما أذن له الولي فيه ، في إحدى الروايتين . وهو قول أبي حنيفة .
والثانية : لا يصح حتى يبلغ . وهو قول الشافعي ; لأنه غير مكلف
সারমর্মঃ
ইবনে কুদামাহ রহঃ বলেন, ভালো মন্দের পার্থক্য কারীর ক্রয় বিক্রয় জায়েজ আছে,যদি তার অভিভাবক তাকে অনুমতি দেয়।
আবু হানিফা রহঃ এর মতে,তবে শাফেয়ী রহঃ এর মতে বালেগ হওয়ার আগ পর্যন্ত জায়েজ নেই।
قال ابن قدامة في المغني: وأما غير المميز، فلا يصح تصرفه، وإن أذن له الولي فيه، إلا في الشيء اليسير، كما روي عن أبي الدرداء أنه اشترى من صبي عصفوراً فأرسله. انتهى.
أما الصبي المميز، فيصح تصرفه باذن الولي.
সারমর্মঃ
যেই বাচ্চা ভালো মন্দের পার্থক্য করতে পারেনা,তার অভিভাবক তাকে ক্রয় বিক্রয়ের অনুমতি দিলেও তার ক্রয় বিক্রয় জায়েজ নেই।
হ্যাঁ সামান্য বস্তুর ক্ষেত্রে জায়েজ আছে।
যেমন বর্ণিত আছে,হযরত আবু দারদা রাঃ শিশু থেকে একটি চড়ুই পাখি ক্রয় করেছেন।
.
(খ)
বাইয়ুল ঈনাহ এর সংজ্ঞাঃ
في رد المحتار وهو حنفي: هي بيع العين بثمن زائد نسيئة ليبيعها المستقرض بثمن حاضر أقل ليقضي دينه. انتهى
সারমর্মঃ
বাকিতে বেশি টাকা মূল্য ধরে কোনো কিছু বিক্রয় করা,যাতে করজ গ্রহন কারী উপস্থিত কম মুল্য দিয়ে তার কাছে বিক্রয় করতে পারে নিজের ঋন শোধের জন্য।
ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতেঃ
- وعرفها الرافعي من الشافعية: بأن يبيع شيئاً من غيره بثمن مؤجل ويسلمه إلى المشتري، ثم يشتريه بائعه قبل قبض الثمن بثمن نقد أقل من ذلك القدر. انتهى
সারমর্মঃ
কাহারো কাছে বাকিতে কোনো কিছু বিক্রয় করা,সেটিকে ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করা, অতঃপর বিক্রেতা মূল্য গ্রহনের পূর্বেই আগের মূল্য থেকে কম মূল্য দিয়ে যাহা নগদে তার কাছ থেকে সেটি ক্রয় করে নেওয়া।
এখানে সূদের সংশ্লিষ্টতা আছে,তাই জায়েজ নেই।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْمَهْرِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، ح وَحَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ مُسَافِرٍ التِّنِّيسِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَحْيَى الْبُرُلُّسِيُّ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، عَنْ إِسْحَاقَ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، - قَالَ سُلَيْمَانُ عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْخُرَاسَانِيِّ، - أَنَّ عَطَاءً الْخُرَاسَانِيَّ، حَدَّثَهُ أَنَّ نَافِعًا حَدَّثَهُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا تَبَايَعْتُمْ بِالْعِينَةِ وَأَخَذْتُمْ أَذْنَابَ الْبَقَرِ وَرَضِيتُمْ بِالزَّرْعِ وَتَرَكْتُمُ الْجِهَادَ سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ ذُلاًّ لاَ يَنْزِعُهُ حَتَّى تَرْجِعُوا إِلَى دِينِكُمْ "
সুলায়মান ইবন দাঊদ (রহঃ) ......... ইবন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এরূপ বলতে শুনেছিঃ যদি তোমরা ঈনা বিক্রি কর, ষাড়ের লেজ ধরে থাক এবং কৃষিকাজে লিপ্ত থাকার কারণে জিহাদ পরিত্যাগ কর, তবে আল্লাহ তোমাদের উপর এমন অপমান প্রবল করে দেবেন যে, যতক্ষণ না তোমরা দীনের উপর পূর্ণরুপে প্রত্যাবর্তন করবে, ততক্ষণ আল্লাহ তোমাদের থেকে ঐ অপমান দূর করবেন না।
(আবু দাউদ ৩৪২৬)
(গ)
হ্যাঁ সুর দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত জায়েজ আছে।
এটি প্রশংসনীয়।
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
«مَا أَذِنَ اللهُ لشيءٍ كما أذن لِنَبِيٍّ حَسَنِ الصَّوْتِ يَتَغَنَّى بِالْقُرْآنِ يَجْهَرُ بِهِ»
‘আল্লাহ তা‘আলা কোনো কিছুর প্রতি এরকমভাবে শ্রবণ করেন না যেভাবে তিনি সুন্দর স্বরবিশিষ্ট নবীর পড়াকে শ্রবণ করেন। যিনি তাকে প্রদত্ত কুরআন তথা কিতাবকে উচ্চসুরে সুর দিয়ে পড়েন।’
বুখারী: ৫০২৩, ৫০২৪; মুসলিম: ৭৯২।
কিছু ক্বারী সাহেবের নামঃ
শায়েখ মাশারী রাশীদ আল আফাসী দাঃবাঃ
শায়েখ আবদুর রহমান আস সুদায়সি
শায়েখ সাউদ আশ শুরাইম
শায়েখ সাদ আল গামিদি
শায়খ আবু বকর সাতরী
(ঘ)
জায়েজ আছে।
(ঙ)
বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে স্পষ্ট করুন।
,
(চ)
অন্যান্য অছিয়তের ন্যায় মান্নতের অছিয়তেরও একই বিধান।
অন্যান্য অছিয়ত সাধারণত মারা যাওয়ার আগেই করা হয়।
তাই এখানেও মারা যাওয়ার আগেই অছিয়ত করবে।
অক্ষমতার কারনে আগে করলেও হবে।
(ছ)
ইচ্ছাপূর্বক ভাবে বিনা ওযরে ডাস্টবিন বা টয়লেটে ফেলে দেওয়া মাকরুহে তাহরিমি।
وإن ألقاه في الکنیف أو في المغتسل یکره ذلك؛ لأن ذلك یورث داء، کذا في فتاوی قاضي خان". (الفتاوی الهندية، ج۵ ص ۳۵۸ کتاب الکراهية، الباب التاسع عشر في الحنان والخصآء وقلم الأظفار ...الخ)
সারমর্মঃ
যদি তাহা টয়লেট,বা গোসল খানাতে ফেলে দেওয়া হয়,তাহলে তাহা মাকরুহ হবে।
কেননা সেটি অসুস্থ হওয়ার কারন,,,,
,
(জ)
ক্রেতা আর বিক্রেতা বা তাদের প্রতিনিধি ব্যাতিত অন্য যেকোনো ব্যাক্তি এখানে ৩য় ব্যাক্তি হতে পারে।
,
আপনি সম্পূর্ণ মাসয়ালা স্পষ্ট করুন।
(ঝ)
উক্ত ব্যাক্তির দামাদামি করা শেষ হলে বা সে তাহা থেক্র বিরত থাকলে আপনি দামাদামি করতে পারবেন।
(ঞ)
(!)
না,তাহা হালাল সম্পদ নয়,তবে স্ত্রী মেয়ে সন্তান,ছেলে যে উপার্জন করতে পারেনা,সে তাহা থেকে খেতে পারবে।
বিশেষ প্রয়োজনীয় কাজে সেটি গ্রহন করতে পারবে।
তবে বেশি নিতে পারবেনা।
(!!)
সেই সম্পদ বন্টন করা যাবেনা,তাহা দান করে দিতে হবে,বা তাহা বন্টন করে নিতে চাইলে তার সমমূল্য টাকা দান করে দিতে হবে।