ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
কুফরীর চিন্তা করার দ্বারাই কাফের হয়ে যায় না। যদি না তা কার্যে তথা কথায় ও ঘোষণায় তা প্রতিফলিত না করা হয়। তাই এসব চিন্তা আসার সাথে সাথেই ইস্তিগফার করে নিবে। আর মন থেকে এসব বাজে চিন্তা দূর করে ফেলতে হবে।
আবার খেলাচ্ছলেও কুফরী কথা না বলতে সচেষ্ট থাকা উচিত। কারণ কার মৃত্যু কখন হয়, তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই এমন ভয়ানক শব্দ বলা থেকে সর্বদাই সতর্ক থাকা উচিত।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
مَن كَفَرَ بِاللَّهِ مِن بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَٰكِن مَّن شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِّنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ [١٦:١٠٦]
যার উপর জবরদস্তি করা হয় এবং তার অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে সে ব্যতীত যে কেউ বিশ্বাসী হওয়ার পর আল্লাহতে অবিশ্বাসী হয় এবং কুফরীর জন্য মন উম্মুক্ত করে দেয় তাদের উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে শাস্তি। [সূরা নাহল-১০৬]
* শুধু অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন।
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)
অপর এক হাদীসে এসেছে-
عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ২০৪৩]
আল বাহরুর রায়েক কিতাবে উল্লেখ আছে-
ومن تكلم بها (كلمة الكفر) مخطئا، أو مكرها لا يكفر عند الكل (البحر الرائق، كتاب السير، باب أحكام المرتدين-5/210)
অর্থাৎ যে ব্যক্তি ভুলবশত অথবা তাকে বাধ্য করাই কুফরী কথা বললো, সকলের মতে তাকে কাফের বলা হবে না।
আর আল মুহিতুল বুরহানী কিতাবে উল্লেখ আছে-
ولكن يؤمر بالاستغفار والرجوع عن ذلك والله أعلم (المحيط البرهانى، كتاب السير، الفصل الثانى والأبربعون-7/399، رقم-9183، الفتاوى التاتارخانية-7/283، رقم-10496)
অর্থাৎ কিন্তু তাকে ইস্তেগফার ও তা থেকে ফিরে আসার নির্দেশ করা হবে।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ঈমানের কোনো সমস্যা হবে না৷ তবু আল্লাহ তায়ালার কাছে মাফ চেয়ে নিবেন এবং এ ধরণের কাজ থেকে পরবর্তীতে বিরত থাকবেন৷