ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
কুরআন তিলাওয়াতে ১০ গুণ সওয়াব : মহানবী
(সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর
তিলাওয়াত করবে, বিনিময়ে সে একটি নেকি পাবে, আর একটি নেকির বদলা হবে দশগুণ, এ কথা বলছি না যে, আলিফ-লাম-মিম, একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মিম একটি অক্ষর (তিরমিজি-২৯১)।
কুরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে-
যেভাবে পড়লে ব্যক্তির একাগ্রতা বাড়ে সেভাবে তেলাওয়াত করা। যদি মুখস্থ থেকে পড়লে
একাগ্রতা বাড়ে তাহলে সেটাই উত্তম। আর যদি মুসহাফ থেকে পড়লে কিংবা মোবাইল থেকে পড়লে
একাগ্রতা বাড়ে তাহলে সেটা করা উত্তম।
মুসহাফ থেকে কুরআন পড়া মুখস্থ থেকে পড়ার
চেয়ে উত্তম। আমাদের মাযহাবের আলেমগণ এমনটি বলেছেন। সলফে সালেহীনদের থেকেও এটাই
প্রসিদ্ধ অভিমত। তবে, এটি সর্বক্ষেত্রে
নয়। বরং মুখস্থ থেকে তেলাওয়াতকারীর তাদাব্বুর, তাফাক্কুর, মন ও দৃষ্টির উপস্থিতি এভাবে একত্রিত হয় যা মুসহাফ থেকে তেলাওয়াতকারীর হয় না।
অতএব, মুখস্থ থেকে
তেলাওয়াত করাই উত্তম। আর যদি উভয় প্রকারের পড়া সম-মানের হয় তাহলে মুসহাফ থেকে পড়াই
উত্তম। সলফে সালেহীনদের এটাই উদ্দেশ্য।
শরিয়তের বিধান হচ্ছে- তাদাব্বুর ও মনোযোগ
দিয়ে পড়া। সেটা মুসহাফ থেকে হোক কিংবা মুখস্থ থেকে হোক। পাঠকারী যদি নিজে শুনে তখন
এটাকে পড়া বলা হবে। শুধু চোখ দিয়ে দেখা যথেষ্ট নয়। অনুরূপভাবে উচ্চারণ না করে মনে
মনে পড়াও যথেষ্ট নয়। সুন্নত হচ্ছে- তেলাওয়াতকারী উচ্চারণ করবে এবং তাদাব্বুর করবে।
যেমনটি আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন:
كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِّيَدَّبَّرُوا
آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُولُو الْأَلْبَابِ
এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ
করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসূহ লক্ষ্য করে এবং
বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে। [সূরা সোয়াদ, আয়াত: ২৯]
তিনি আরও বলেন:
أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ أَمْ عَلَىٰ قُلُوبٍ
أَقْفَالُهَا
তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে
না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? [সূরা মুহাম্মদ ৪৭:২৪]
সুতরাং মুখস্থ থেকে পড়া যদি অন্তরের
একাগ্রতা ও গভীর চিন্তা-ভাবনা করার অধিক উপযুক্ত হয় তাহলে সেটাই উত্তম। আর যদি
মুসহাফ থেকে পড়া অন্তরের একাগ্রতা ও গভীর চিন্তা-ভাবনার অধিক উপযুক্ত হয় তাহলে
সেটাই উত্তম।
এ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্পষ্ট হয়ে গেল
যে, আপনি যদি একাগ্র
চিত্তে ও গভীর চিন্তা-ভাবনাসহ মোবাইল থেকে কুরআন পড়েন তাহলে ইনশাআল্লাহ্ আপনার
সওয়াবে কমতি হবে না। কারণ মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- অন্তরের উপস্থিতি ও কুরআনের মাধ্যমে
উপকৃত হওয়া।