আসসালামু আলাইকুম।
(১) জামাতে নামাজে মুক্তাদির যে দোয়া গুলো পড়ে (তাশাহুদ,দুরুদ শরিফ,দোয়া মাসুরা) সেইখানে কোন উচ্চারণ/লাইন কিছু ভুল পড়লে কি নামাজ হবে? অর্থাৎ ইমাম যদি সেইসকল দোয়া সঠিকভাবে পড়ে কিন্তু মুক্তাদির যদি ভুল পড়ে তাহলে কি মুক্তাদির নামাজ হয়ে যাবে? (যেহেতু যতটুকু আমি জানি যে, ইমামের নামাজ সঠিক হলে মুক্তাদির নামাজ সঠিক হয়ে যায়।)
(২) আমি নামাজ পড়ার সময় যখন ছানা পড়ি,তখন "ছানা" শব্দটা উচ্চারণ করে তারপর ("সুবহানাকা আল্লাহুম্মা.....") এইভাবে পড়ি। অর্থাৎ ("ছানাঃ সুবহানাকা আল্লহুম্মা.....") এইভাবে পড়ি। "ছানা" কথাটা উচ্চারণ করি। এর কারনে কি সমস্যা হবে? এখন কি ("সুবহানাকা আল্লাহুম্মা.....") এইভাবেই কি শুরু করে পড়তে হবে? নাকি ("ছানাঃ সুবহানাকা আল্লাহুমা....") অর্থাৎ "ছানা" শব্দটা উচ্চারণ করে তারপর ("সুবহানাকা আল্লাহুম্মা.....") এইভাবে পড়লে সমস্যা হবে না?
(৩) নামাজে প্রথম যদি ভুল নিয়ত করি। অর্থাৎ মাগরিব নামাজ পড়ার সময় দাড়ানোর পড় যদি ১ম বার ভুলে উচ্চারণ করি যে, ("আমি কিবলামুখী হয়ে আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ছি") এরপরে আবার সাথে সাথেই নামাজ শুরু করার আগেই যদি আবার সঠিকটা উচ্চারণ করি যে ("আমি কিবলামুখী হয়ে মাগরিবের ৩ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ছি")। তারপর ("আল্লাহু আকবর") বলে হাত তুলে নামাজ শুরু করি। তাহলে কি নামাজ হবে?
(৪) নামাজরত অবস্থায় যদি কোন দোয়া বা সুরা পড়ার সময় হঠাৎ সেই দোয়া বা সুরার কোন লাইনের মাঝখানে আটকে/ভুলে যাই, তাহলে কি আবার প্রথম থেকে সেই সুরা পড়া শুরু করতে পারবো? এবং যেই লাইন ভুলে গেছি সেই লাইন থেকে শুরু করলেই হবে নাকি সুরার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে?
(৪.১) আর, সুরার লাইনের মাঝখানে যদি হঠাৎ আটকে যাই, তাহলে কি সেই লাইন অর্ধেক পড়ার কারনে সেই লাইনের অর্থ নষ্ট/অশুদ্ধ/ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নাই? কারন সেখানে তো লাইনটা অর্ধেক পড়া হচ্ছে। আর সেই লাইনে প্যাঁচ লাগার কারনে/ আটকে যাওয়ার কারনে আবার প্রথম থেকে পড়া লাগছে।
কিন্তু আটকে যাওয়া লাইনটা তো অর্ধেক কিরাত অবস্থায়ই রয়ে গেছে।বাকিটা তো আটকে যাওয়ার কারনে পড়তে পারিনি। তাহলে কি সেই লাইনের অর্থ নষ্ট হয়ে যাবে না? তাহলে লাইনের মাঝখানে ভুলে গেলে করনীয় কি? কারন লাইনের বাকি অংশ তো অসম্পূর্ণ অবস্থায় থাকবে।
(৫) কেউ যদি ইচ্ছার বিরুদ্ধে আল্লাহর কসম কাটে। তাহলে সেটা মনে মনে করলেই কসম হয়ে যাবে? নাকি জোড়ে আল্লাহর কসম উচ্চারণ করে কসম কাটলে কসম হয়ে যাবে?
কারন, আমার একটা সমস্যা হচ্ছে। শয়তান হয়তো আমাকে ওয়াস ওয়াসা দিচ্ছে। কোন কিছু বলতে গেলেই মনে মনে কসম চলে আসছে। আমি নিজ থেকে বলতে না চাইলেও মনে মনে চলে আসছে। কিন্তু আমি জোড়ে সেটা উচ্চারণ করি না। শয়তান হয়তো ভাবাচ্ছে, তাই অনেকবার এইটা মাথায় আসে। যদি আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোড়ে কখনো বলে ফেলি তাহলে কি কসম কার্যকর হয়ে যাবে? যেহেতু, আমাকে হয়তো শয়তান বারবার এইটা মনে করাচ্ছে। এই অবস্থায় করনীয় কি?
(৬) এই প্রশ্নের বর্ণনাটা একটু বড়।বুঝানোর জন্য বড় করে লেখা। যদি সম্ভব হয় তাহলে এই প্রশ্নের উত্তরটা দিয়েন।
প্রশ্নঃ আমাদের এইখানে একটা মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ার সময় এসি (AC) ছাড়া থাকে। AC ছাড়া থাকলে প্রায় সব ফ্যান অফ থাকে। তাই সেইসময় হাল্কা শব্দ করলেই অনেক আওয়াজ হয়। আমি যখন নামাজে ২য় ও ৪র্থ রাকাতে সিজদা করার পর বসে যে দোয়া পড়ি (তাশাহুদ,দুরুদ শরিফ,দোয়া মাসুরা) তখন আমি একদম মনে মনে বা শুধু ঠোঁট নাড়িয়ে পড়ি না। এতে করে সেই দোয়া গুলো পড়ার সময় কিছুটা আস্তে পড়লেও (AC) সেই কিরাতের সাউন্ড অনেক জোড়ে শুনা যায়। কারন আমি সবগুলো আয়াত ভালোভাবে পড়ার চেষ্টা করি।কিন্তু আমি খেয়াল করেছি যে, আমার ধারণা মতে সেই সময় সবচেয়ে বেশি সাউন্ড আমার মুখ থেকেই আসে। আমি চেষ্টা করি যেন শুধু আমার কানেই সেই শব্দ আসুক। কিন্তু তাহলে তো শুধু ঠোঁট নাড়িয়ে পড়তে হবে। বাকি মুক্তাদিরা কিভাবে দোয়া গুলো পড়ে, বুঝতেছি না। আমি অনেক খেয়াল করে দেখেছি, তাদের মুখ থেকে কয়েক টা শব্দ ছাড়া আমি প্রায় কোন শব্দই শুনি না। (যেইখানে শ/স উচ্চারণ হয়,সেইগুলা শুনা যায়,বাকিগুলো আমি প্রায় শুনিই না। যেমনঃ "ইন্না" এই শব্দটা তো শুধু ঠোঁট নাড়ালে শুনাই যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি শব্দ করে পড়বো)। এখন আমি একেবারে শুধু ঠোঁট নাড়িয়ে পড়তে পাড়ি না,কারন আমি যতদুর জানি যে, তাহলে তো সেই নামাজ আবার পড়তে হবে।
এখন তাহলে কি আমি এমনভাবে দোয়াগুলো পড়বো যেন শুধু ঠোঁট নাড়ানো হয় এবং শুধু কয়েকটি শব্দ শুনা যায়। নাকি অতটুকু জোড়ে পড়বো যেন আমি কানে শুনতে পাই।
আমি খেয়াল করেছি, আমি অতটুকু জোড়ে পড়লে আমার পাশের দুইজন শুনতে পায়। কিন্তু তাদের দোয়া কিন্তু আমি শুনতে পাই না,কয়েকটা শব্দ ছাড়া।
নামাজ পড়ার সময় তখন খুব ইতস্তবোধ হয়। যখন প্রায় কারোর শব্দি আমি বেশি শুনি না। কিন্তু আমার নিজের দোয়া পড়ার শব্দ জোড়ে শুনা যায়।
এর সলিউশন কি? কি করবো বুঝতেছি না। সবসময় বাসায় নামাজ পড়াও তো ঠিক হবে না।