ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
মোটকথাঃ আপনার নামায বিশুদ্ধ হয়েছে।
(ফেকহী বিশ্লেষণ)
নামাযে মুক্বতাদির(মুসাল্লির)জন্য ইমাম সাহেবের অনুসরণ কোন কোন ক্ষেত্রে কতটুকু অত্যাবশ্যকীয়, এ সম্পর্কে ফাতাওয়া শামী১/৫০১-তে সুবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে।
নিম্নে তা প্রদত্ত হল.....
ﻗﻮﻟﻪ : ( ﻭﻣﺘﺎﺑﻌﺔ ﺍﻻﻣﺎﻡ ) ﻭﺍﻟﺤﺎﺻﻞ ﺃﻥ ﻣﺘﺎﺑﻌﺔ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻓﻲ ﺍﻟﻔﺮﺍﺋﺾ ﻭﺍﻟﻮﺍﺟﺒﺎﺕ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺗﺄﺧﻴﺮ ﻭﺍﺟﺒﺔ، ﻓﺈﻥ ﻋﺎﺭﺿﻬﺎ ﻭﺍﺟﺐ ﻻ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﺃﻥ ﻳﻔﻮﺗﻪ ﺑﻞ ﻳﺄﺗﻲ ﺑﻪ ﺛﻢ ﻳﺘﺎﺑﻊ، ﻛﻤﺎ ﻟﻮ ﻗﺎﻡ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻗﺒﻞ ﺃﻥ ﻳﺘﻢ ﺍﻟﻤﻘﺘﺪﻱ ﺍﻟﺘﺸﻬﺪ ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺘﻤﻪ ﺛﻢ ﻳﻘﻮﻡ ﻻﻥ ﺍﻻﺗﻴﺎﻥ ﺑﻪ ﻻ ﻳﻔﻮﺕ ﺍﻟﻤﺘﺎﺑﻌﺔ ﺑﺎﻟﻜﻠﻴﺔ، ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻳﺆﺧﺮﻫﺎ، ﻭﺍﻟﻤﺘﺎﺑﻌﺔ ﻣﻊ ﻗﻄﻌﻪ ﺗﻔﻮﺗﻪ ﺑﺎﻟﻜﻠﻴﺔ، ﻓﻜﺎﻥ ﺗﺄﺧﻴﺮ ﺃﺣﺪ ﺍﻟﻮﺍﺟﺒﻴﻦ ﻣﻊ ﺍﻻﺗﻴﺎﻥ ﺑﻬﻤﺎ ﺃﻭﻟﻰ ﻣﻦ ﺗﺮﻙ ﺃﺣﺪﻫﻤﺎ ﺑﺎﻟﻜﻠﻴﺔ،، ﺑﺨﻼﻑ ﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﻋﺎﺭﺿﻬﺎ ﺳﻨﺔ، ﻛﻤﺎ ﻟﻮ ﺭﻓﻊ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻗﺒﻞ ﺗﺴﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﻘﺘﺪﻱ ﺛﻼﺛﺎ ﻓﺎﻻﺻﺢ ﺃﻧﻪ ﻳﺘﺎﺑﻌﻪ، ﻻﻥ ﺗﺮﻙ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺃﻭﻟﻰ ﻣﻦ ﺗﺄﺧﻴﺮ ﺍﻟﻮﺍﺟﺐ ﺍﻩ ﻣﻠﺨﺼﺎ
তরজমাঃমোটকথা-ফরয এবং ওয়াজিব রুকুন সমূহে কালক্ষেপণ ব্যতীত ইমামের অনুসরণ ওয়াজিব।যদি কোনো ওয়াজিব আদায় করতে মুক্বতাদি ইমাম থেকে পিছনে থেকে যান,তাহলে মুক্বতাদির জন্য উচিৎ তা তরক না করা,বরং তা তারাতারি আদায় করে ইমামের অনুসরণ করা।যেমনঃ-যদি ইমাম সাহেব মুকতাদির তাশাহুদ পড়ার পূর্বে তৃতীয় রাকা'আতের জন্য দাড়িয়ে যান,তখন মুক্বতাদি তাশাহুদ পূর্ণ করে তৃতীয় রাকা'আতের জন্য দাড়াবেন।কেননা ইমাম থেকে পিছিয়ে উক্ত রুকুন আদায় করাতে ইমামের পরিপূর্ণ অনুসরণ বিসর্জিনন হচ্ছে না।বরং এতে ইমামের অনুসরণে একটু দেড়ী হচ্ছে মাত্র।তবে অনুসরণকে পুরোপুরি বিসর্জন দেওয়াটা কখনো উচিৎ হবে না বরং দোষণীয়।কোনো এক ফরয বা ওয়াজিব রুকুনকে পুরোপুরিভাবে পরিত্যাগ করার চেয়ে একটিকে ইমাম থেকে পিছিয়ে আদায় করে দ্বিতীয়টিকে ইমামের সাথে আদায় করা অবশ্যই উত্তম ও প্রশংসনীয় কাজ।তবে যদি কখনো কোনো সুন্নাত আদায় করতে ইমাম থেকে কোনো মুক্বতাদি পিছনে থেকে যায়,যেমনঃ- রুকু বা সেজদাতে মুক্বতাদির তিন তাসবিহ পড়ার পূর্বে ইমাম সাহেব মাথা উত্তোলন করে ফেলেন,তাহলে এক্ষেত্রে বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য অভিমত হল,মুক্বতাদি তাসবিহ না পড়ে ইমাম সাহেবকে অনুসরণ করবে।কেননা সুন্নাতকে পরিত্যাগ করা ওয়াজিবকে ইমাম থেকে পিছিয়ে আদায় করার চেয়ে অনেক উত্তম।(ফাতাওয়া শামী১/৫০১)
এ সম্পর্কে ফাতাওয়া-য়ে আলমগীরিতে বর্ণিত রয়েছে.........
إذَا أَدْرَكَ الْإِمَامَ فِي التَّشَهُّدِ وَقَامَ الْإِمَامُ قَبْلَ أَنْ يُتِمَّ الْمُقْتَدِي أَوْ سَلَّمَ الْإِمَامُ فِي آخِرِ الصَّلَاةِ قَبْلَ أَنْ يُتِمَّ الْمُقْتَدِي التَّشَهُّدَ فَالْمُخْتَارُ أَنْ يُتِمَّ التَّشَهُّدَ. كَذَا فِي الْغِيَاثِيَّةِ وَإِنْ لَمْ يُتِمَّ أَجْزَأَهُ.
তরজমাঃযদি কোনো মুক্বতাদি(মুসল্লি) ইমাম সাহেবকে (প্রথম বৈঠকে) তাশাহুদে পায়, এবং ইমাম সাহেব মুকতাদির তাশাহুদ পড়ার পূর্বে দাড়িয়ে যায়,অথবা শেষ বৈঠকে মুক্বতাদির তাশাহুদ পূর্ণ করার পূর্বে ইমাম সাহেব সালাম ফিরেয়ে নেন,তখন গ্রহণযোগ্য অভিমত হলো মুক্বতাদি তাশাহুদ কে পূর্ণ করবে, এভাবেই গিয়াছিয়্যাহ নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে।তবে যদি পূর্ণ নাও করে তবেও বৈধ রয়েছে,এবংনামায হবে।
وَلَوْ سَلَّمَ الْإِمَامُ قَبْلَ أَنْ يَفْرُغَ الْمُقْتَدِي مِنْ الدُّعَاءِ الَّذِي يَكُونُ بَعْدَ التَّشَهُّدِ أَوْ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ عَلَى النَّبِيِّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَإِنَّهُ يُسَلِّمُ مَعَ الْإِمَامِ1/9
তরজমাঃযদি ইমাম সাহেব মুক্বতাদির তাশাহুদ পরবর্তী দুআ অথবা দুরুদ শরীফ পূর্ণ করার পূর্বে সালাম ফিরিয়ে নেন,তখন মুক্বতাদি ও ইমাম সাহেবের সাথে সালাম ফিরিয়ে নিবেন।(ফাতাওয়া আলমগীরি-১/৯)
আহসানুল ফাতাওয়া ৩/২৯০।
মোটকথাঃ-
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হলো,নামাযের ফরয/ওয়াজিব রুকুন সমুহে কালক্ষেপণ ব্যতীত মুক্বতাদির জন্য ইমামের অনুসরণ করা ওয়াজিব।তবে যদি ঘটনাক্রমে কোনো ফরয/ওয়াজিব রুকুন আদায় করতে মুক্বতাদির দেড়ী হয়ে যায়,তাহলে অবশ্যই মুক্বতাদি এক্ষেত্রে ইমামের অনুসরণ না করে প্রথমে উক্ত রুকুনগুলো আদায় করবে,তারপর ইমামের অনুসরণ করবে।কিন্তু যদি মুক্বতাদি কোনো সুন্নাত রুকুনে ইমাম থেকে পিছনে থেকে যায় তাহলে এক্ষেত্রে মুক্বতাদি উক্ত সুন্নাত রুকুন আদায় না করে ইমামের অনুসরণ করবে।এবং উক্ত সুন্নাত রুকুনকে পরিত্যাগ করাই উত্তম হবে।
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
هذا
ما وجدت ،والله أعلم بحقيفة الحال،