আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
204 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারহকাতুহ।গত একটি পোস্ট এ আমি আমার বিড়ালের কিছু সমস্যা উল্লেখ করে প্রশ্ন করেছিলাম।,সেখানে উত্তর এসেছিলো আমার উল্লেখ ও কারনে নিউটার জায়েজ হবে না। আমার বিড়াল টাকে আমি ছোট বেলা থেকে লালন পালন করি,বাহিরের বিড়াল যেমন অন্য বিড়ালের সাথে লড়াই করতে পারে আমার বিড়াল তা পারে না, আমি ও কে ওর মত ছেড়ে দেই বাহিরে আবার একা চলে আসে, কিন্তু ও যেহেতু পালিত বিড়াল বাহিরের পরিবেশ টা ওর জন্য অনেক ক্ষতিকর, আজকেও মরতে মরতে ফিড়ে আসছে, ৩টা কুকুরের হাত থেকে,বাহিরে গেলে একটা বাহিরের বিড়াল ওকে দেখলেই মারে,। ২য় তো আমার বিড়াল এখন প্রাপ্ত বয়স্ক ও হিটে আসলে যেখানে সেখানে প্রসাব করে দেয়, মানুষের শরিরেও করে দেয়,। ওর খাবার ধরন ও আলাদা ও শুধু মুরগি খায় অন্য কিছু খায় না,  আগের প্রশ্নের উত্তর অনুযায়ী যদি ওকে তাড়িয়ে দেই তাহলে তো ও কে বিপদের মুখে ফেলে দেয়া হলো, ২য় তো এত মাসে লালল পালন করে ও কে তাড়িয়ে দেয়ার ফলে ওর প্রতি অবিচার করা হলো,

১/আমার প্রশ্ন হলো উক্ত কারনগুলোর জন্য কি ওকে নিউটার করানো জায়েজ হবে??

২/যেই বিড়ালটা ওকে উক্ত করে, ওকে মারে সেই বিড়ালকে অন্য এলাকায় ছেড়ে দিয়ে আসা ঠিক হবে? যাতে ও আমার বিড়ালকে না মারে

1 Answer

0 votes
by (58,260 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/51979/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

□ হযরত ইবনে উমর থেকে বর্ণিত,

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال : قال النبي صلى الله عليه وسلم : ( دخلتِ امرأةٌ النارَ في هِرَّة حبَسَتْها، لا هي أطعَمَتْها ولا هي ترَكَتْها تأكُلُ مِن خَشَاش الأرض حتى ماتَتْ )

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনএক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিলসে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নিছেড়েও দেয়নিযাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে। (সহীহ বোখারী-৩৩১৮,সহীহ মুসলিম-২২৪২)

হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেনকুরতুবি (রহ.) বলেছেনএ হাদিস থেকে বিড়াল পালা ও বিড়ালকে বেধে রাখা জায়েজ বলে প্রমাণিত হয়যদি তাকে খানাপিনা দেওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি না করা হয়।  (ফাতহুল বারি : ৬/৪১২)

□ পশু-পাখিকে নিয়মিত খাবার - পানি ও চিকিৎসা দিয়ে খাচায় বন্দী করে সুন্দরভাবে পরিচর্যা করে লালন-পালন করা জায়েয। কিন্তু এক্ষেত্রে যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে। পরিচর্যা করতে না পারলে অথবা বন্দি করে রাখার কারণে কষ্ট পেলে খাচায় আটকে রাখা জায়েয হবে না। বরং ছেড়ে দিতে হবে। ( রদ্দুল মুহতার ৬/৪০১)

কিছু সাহাবী থেকে খাচায় পাখি লালন-পালন করা প্রমাণিত রয়েছে। হযরত হিশাম ইবনে উরওয়া রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেন,

كَانَ ابْنُ الزّبَيْرِ بِمَكّةَ وَأَصْحَابُ النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَحْمِلُونَ الطّيْرَ فِي الْأَقْفَاصِ.

আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রা. মক্কায় ছিলেন। তখন সাহাবীগণ খাচায় পাখি রাখতেন। (আল আদাবুল মুফরাদহাদীস ৩৮৩)

 

অন্য এক হাদীসে রয়েছে-

عن أَنَسٍ: قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَحْسَنَ النَّاسِ خُلُقًا وَكَانَ لِي أَخٌ يُقَالُ لَهُ أَبُو عُمَيْر، وقال أحبه فَطِيمٌ وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَالَ: يَا أَبَا عُمَيْرٍ، مَا فَعَلَ النُّغيْرُ نُغَرٌ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সবার চেয়ে অধিক সদাচারী ছিলেন। আমার একজন ভাই ছিলতাকে আবূ ‘উমায়র’ বলে ডাকা হতো। আমার অনুমান যেসে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে তাঁর নিকট আসতোতিনি বলতেনঃ হে আবূ ‘উমায়র! তোমার নুগায়র কি করছেসে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলতো। (বুখারী হাদীস নং ৬২০৩মুসলিম ,২১৫০)

 

□ হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। সাহাবায়ে কেরাম রাঃ রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করেন-

قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَإِنَّ لَنَا فِي البَهَائِمِ أَجْرًا؟ قَالَ: «فِي كُلِّ كَبِدٍ رَطْبَةٍ أَجْرٌ

হে আল্লাহর রাসূল! জীব জন্তুর জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছেতিনি বললেনহ্যাঁপ্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীদের জন্য পুরস্কার আছে। {বুখারীহাদীস নং-২৩৬৩}

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিড়ালকে নিউটার বানানো জায়েজ হবে না। আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/56183/

 

নিয়মিত খাবার - পানি ও চিকিৎসা দিয়ে সুন্দরভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে বিড়াল পোষা জায়েজ এবং বিড়ালকে টাকা-পয়সা দিয়ে খাবার কিনে খাওয়ালেও সওয়াব হবে ইনশাআল্লাহ। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার জন্য বিড়াল পোষা জায়েজ এবং বিড়ালকে নিয়মিত খাবার খাওয়ানোর কারণে আপনি সওয়াবও পাবেন ইনশাআল্লাহ। তবে যদি আপনার বিড়াল  প্রতিবেশীদের কোনো ক্ষতি করতে থাকে। ফলে প্রতিবেশীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়বেতাই এই ছুরতে আপনার জন্য করনীয় হবে সেই বিড়ালকে অন্য দূরা এলাকায় ছেড়ে আসা। অথবা বড় খাচার মধ্যে বন্দি করে রাখা এবং নিয়মিত খাবার-পানি দেওয়া। একান্ত কখনও ছেড়ে দিলে তার দিকে দৃষ্টি রাখা। যাতে করে অন্যের কোনো ক্ষতি করতে না পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...