ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মাটির মানুষ ছিলেন; নূরের তৈরী নন। আল্লাহ বলেন,
قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَىٰ إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَـٰهُكُمْ إِلَـٰهٌ وَاحِدٌ ۖ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
‘(হে নবী!) ‘তুমি বলে দাও, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মত একজন মানুষ মাত্র। আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে। (কাহ্ফ ১৮/১১০)।
قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ إِن نَّحْنُ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ وَلَـٰكِنَّ اللَّهَ يَمُنُّ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ ۖ وَمَا كَانَ لَنَا أَن نَّأْتِيَكُم بِسُلْطَانٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ ۚ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ
তাদের পয়গম্বর তাদেরকে বলেনঃ আমারাও তোমাদের মত মানুষ, কিন্তু আল্লাহ বান্দাদের মধ্য থেকে যার উপরে ইচ্ছা, অনুগ্রহ করেন। আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত তোমাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসা আমাদের কাজ নয়; ঈমানদারদের আল্লাহর উপর ভরসা করা চাই।(ইবরাহীম ১৪/১১)।
বস্ত্ততঃ ফেরেশতারা হ’ল নূরের তৈরী, জিনেরা আগুনের তৈরী এবং মানুষ হ’ল মাটির তৈরী মুসলিম হা/২৯৯৬; মিশকাত হা/৫৭০১; মুমিনূন ২৩/১২, আন‘আম ৬/২)।
উল্লেখ্য যে, রাসূল (ছাঃ) নূরের তৈরী ছিলেন মর্মে সমাজে কিছু হাদীছ প্রচলিত রয়েছে। যেমন ‘আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেন’। এ মর্মে বর্ণিত সব বর্ণনাই জাল (‘আজলূনী, কাশফুল খাফা হা/৮২৭; ছহীহাহ হা/৪৫৮-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।
সূরা মায়েদাহ ১৫ আয়াতে বলা হয়েছে,
قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللهِ نُوْرٌ وَكِتَابٌ مُبِيْنٌ
‘তোমাদের কাছে এসেছে একটি জ্যোতি এবং একটি সমুজ্জ্বল গ্রন্থ’। উক্ত আয়াতে ‘নূর’ বা জ্যোতি দ্বারা কুরআনকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ কুরআন শিরকের অন্ধকার হ’তে মানুষকে তাওহীদের আলোর পথে বের করে আনে। এখানে ‘ওয়া কিতাবুম মুবীন’ (وَكتابٌ مبيْنٌ)তার পূর্ববর্তী ‘নূর’ (نُوْرٌ)-এর উপর عطف بيان হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ বলছেন, ‘তোমাদের কাছে আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে একটি জ্যোতি ও সমুজ্জ্বল গ্রন্থ’। যেমন ইতিপূর্বে সূরা নিসা ১৭৪-৭৫ আয়াতে بُرْهَانٌ ও نُوْرًا مُبِيْنًا বলে কুরআনকে বুঝানো হয়েছে। অমনিভাবে সূরা আ‘রাফ ১৫৭ আয়াতের কুরআনকে ‘নূর’ বলা হয়েছে।
উক্ত আয়াতের তাফসীরে ‘নূর’-এর ব্যাখ্যায় যাজ্জাজ রাহ বলেন, এখানে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে বুঝানো হয়েছে (কুরতূবী)। তখন আয়াতের অর্থ হবে, মুহাম্মদ সাঃ মানব জাতীর জন্য হেদায়তের আলো বা নূর স্বরূপ। এটা অর্থ নয় যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ নূরের তৈরী।
আল্লাহ তা'আলা সর্বপ্রথম কলম তৈরী করেছেন।
আল্লাহর রাসুল (স.) কে হাজির নাজির না মেনে কিয়াম করা যাবে, তবে কিয়ামকে জরুরী মনে করা যাবে না। এবং সর্বদাও করা যাবে না।