আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (22 points)
প্রশ্ন ০১ঃ অনেকে বলে ব্যবসায় ১০% এর বেশি লাভ করা যাবে না এর কুরআন হাদিসের আলোকে এর ব্যাক্ষা জানতে চাই?

প্রশ্ন ০২ঃ  হালাল ভাবে ব্যবসা করার নীতিমালা কি কি?

প্রশ্ন ০৩ঃ সৎ ব্যবসায়ীর মর্যাদা এবং অসৎ ব্যবসায়ীদের পরিনতি সম্পর্কে জানতে চাই?

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এ কথাটি সহীহ নয়।

ব্যবসায় কতটুকু লাভ করা যায়,এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
ব্যবসায়-ব্যবসায়ীদের জন্য ইসলামের মৌলিক কতগুলো নীতিমালা রয়েছে। 
সেগুলো হলো-

★ব্যবসায় কারো ক্ষতি করা যাবে না :
ব্যবসার মাধ্যমে মানুষের উপকার করার মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কারো ক্ষতি যেন না হয় সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। রাসূল সা: বলেন, ‘নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও অন্যের ক্ষতি করা কোনোটিই উচিত নয়’ (ইবন মাজাহ-২৩৪১)।

★ধোঁকা-প্রতারণা করা যাবে না : এ ধরনের অপকর্ম ইসলামে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত। মন্দ জিনিস ভালো বলে চালিয়ে দেয়া, ভালোর সাথে মন্দের মিশ্রণ ঘটিয়ে ধোঁকা দেয়া ইত্যাদি সম্পূর্ণ হারাম। 

হাদিসে বিবৃত হয়েছে, আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, একদিন রাসূল সা: একজন খাদ্য বিক্রেতার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, তিনি খাদ্যের ভেতরে হাত প্রবেশ করিয়ে দেখলেন খাদ্যগুলো ভেজা বা নিন্মমানের। এ দেখে রাসূল সা: বললেন, ‘হে পণ্যের মালিক এটি কী? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল, এতে বৃষ্টি পড়েছিল। রাসূল সা: বললেন, তুমি সেটিকে খাবারের ওপরে রাখলে না কেন; তাহলে লোকেরা দেখতে পেত? যে ধোঁকা দেয় সে আমার উম্মত নয়’ (মুসলিম-১০২)।

★মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যাবে না : মিথ্যা অবশ্যই একটি নিন্দনীয় বড় অপরাধ। ব্যবসার সাথে মিথ্যার সংমিশ্রণ আরো বেশি মারাত্মক ও ক্ষতিকর। কোনো মুসলমান সত্যের সাথে মিথ্যার সংমিশ্রণ করতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তোমরা সত্যের সাথে অসত্যের মিশ্রণ ঘটাবে না। জেনেশুনে সত্য গোপন করো না’ (সূরা আল-বাকারা-৪২)।

★ওজনে কমবেশি করা যাবে না : অন্যকে ওজনে কম দেয়া আর নিজে বেশি নেয়া জঘন্য অপরাধ। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘ধ্বংস যারা পরিমাপে কম দেয় তাদের জন্য। যারা লোকদের কাছ থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে। আর যখন তাদের মেপে দেয় অথবা ওজন করে দেয় তখন কম দেয়’ (সূরা আল-মুতাফফিফিন : ১-৩)

★সুদকে মেশানো যাবে না : সুদ একটি মারাত্মক অপরাধ। সুদ থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। ব্যবসার নামে কোনো প্রকার সুদ চালু করা যাবে না। সুদের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যারা সুদ খায় তারা কিয়ামতের দিন দণ্ডায়মান হবে শয়তানের আসরে মোহাবিষ্টদের মতো। কারণ, তারা বলে ব্যবসায় তো সুদের মতো, অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন’ (সূরা আল-বাকারা-২৭৫)।

★অনুমানভিত্তিক ব্যবসায় থেকে বিরত থাকা : বৃক্ষস্থিত ফলকে বৃক্ষ থেকে আহরিত ফলের বিনিময়ে অনুমান করে বিক্রি করাকে মুজাবানা বলে। বিভিন্ন ধরনের মুজাবানা বর্তমানেও প্রচলিত আছে। ক্ষেতে অকর্তিত খাদ্যশস্য যথা- গম, বুট ইত্যাদিকে শুকনা পরিষ্কার করা খাদ্য যথা- গম, বুট ইত্যাদির বিনিময়ে অনুমান করে বিক্রি করাকে মুহাকালা বলে। 

★অপরের মাল হননের চেষ্টা করা যাবে না : ব্যবসার জটিল মারপ্যাঁচে অন্যের মাল হরণ করা হারাম। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা একে অপরের মাল অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবল তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসায় করা হয় তা বৈধ’ (সূরা আন-নিসা-২৯)।

★কাউকে ঠকানো যাবে না : এক ব্যক্তি রাসূল সা:-এর কাছে এসে অভিযোগ করল যে, সে বেচাকেনাতে প্রতারিত হয় বা ঠকে। রাসূল সা: বললেন, ‘যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে, তখন তুমি বলে দেবে যে, কোনো প্রতারণা বা ঠকানোর দায়িত্ব আমি নেবো না। তোমার জন্য তিন দিন পর্যন্ত পণ্য ফেরত দেয়ার অধিকার রয়েছে’ (বুখারি-৬৯৬৪)

★পণ্য বিক্রির জন্য মিথ্যা শপথ করা যাবে না।

★খাদ্যে ভেজাল মেশানো থেকে বিরত থাকা।

(০৩)
★যাঁরা সৎভাবে ব্যবসা করেন, ইসলামের দৃষ্টিতে তাঁদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘সৎ ও আমানতদার ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সত্যবাদী ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে।
(তিরমিজি, হাদিস : ১২০৯)

★অসৎ ব্যাবসায়ীরা কিয়ামতের দিন ফাজের (অপরাধী) লোকদের সাথে হাশরের মাঠে তাদের পূণরুত্থান হবে। 

রাসূল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “অবশ্যই ব্যবসায়ীদের কিয়ামতের দিন ফাজের হিসেবেই উপস্থিত করা হবে। তবে যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে, সৎ কর্ম করে ও সত্য কথা বলে, তাকে ছাড়া।” [তিরমিযী : ১২১০]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...