বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
(২)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
(৩)
এ বিষয়ে আল্লাহ ব্যতীত কেউ সঠিক জিনিষ জানেন।
(৪)
শায়েখ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ দাঃবাঃ এ সম্পর্কে বলেন এবং তিনি যথার্থই লিখেছেন,
‘উযাইর’ বনী ইসরাইলের একজন নেককার ব্যক্তি। তিনি নবী কিনা- তা নিয়ে মতবেদ রয়েছে। যদিও প্রসিদ্ধ অভিমত হচ্ছে- তিনি নবী। ইবনে কাছীর ‘বিদায়া নিহায়া’ গ্রন্থে (২/২৮৯) এটাই ব্যক্ত করেছেন।
সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “আমি জানি না-তুব্বা কি লানতপ্রাপ্ত; নাকি নয়। আমি জানি না- উযাইর কি নবী; না কি নবী নয়।” [আলবানি হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
তবে তাঁর ক্ষেত্রে ‘আলাইহিস সালাম’ বলতে কোন সমস্যা নেই। যেহেতু তিনি নেককার মানুষ ছিলেন। তাঁর ঘটনা কুরআনে এসেছে। আলেমদের অনেকে তাঁকে নবী হিসেবে গণ্য করেছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন: “অথবা সে ব্যক্তির মত, যে এমন এক জনপদ অতিক্রম করছিল যা তার ছাদের উপর থেকে বিধ্বস্ত ছিল। সে বলল, মৃত্যুর পর কিভাবে আল্লাহ একে পুনর্জীবিত করবেন? অতঃপর আল্লাহ তাকে একশ বছর মৃত অবস্থায় রাখলেন। তারপর তাকে পুনর্জীবিত করলেন। আল্লাহ বললেন, ‘তুমি কতকাল এভাবে ছিলে?’ সে বলল, একদিন বা একদিনেরও কিছু কম সময়। তিনি বললেন, বরং তুমি একশত বছর অবস্থান করেছ। এবার চেয়ে দেখ নিজের খাবার ও পানীয়ের দিকে সেগুলো অবিকৃত রয়েছে এবং দেখ নিজের গাধাটির দিকে। আমি তোমাকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানাতে চেয়েছি। হাড়গুলোর দিকে চেয়ে দেখ, আমি কিভাবে সেগুলোকে সংযুক্ত করি এবং গোশত দ্বারা ঢেকে দেই। অতঃপর যখন তার নিকট স্পষ্ট হলো তখন সে বলে উঠল- ‘আমি জানি, নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান’।[সূরা বাকারা, আয়াত: ২৫৯]
প্রসিদ্ধ মতানুযায়ী এই ব্যক্তি হচ্ছেন- উযাইর। ইবনে জারির ও ইবনে আবু হাতিম ইবনে আব্বাস, হাসান, কাতাদা, সুদ্দি ও সুলাইমান বিন বুরাইদা থেকে এ অভিমতটি বর্ণনা করেছেন। ইবনে কাছির বলেন: এই উক্তিটি প্রসিদ্ধ।[তাফসিরে ইবনে কাছির (১/৬৮৭) থেকে সমাপ্ত]
এ সংক্রান্ত মতভেদ জানতে দেখুন ইবনুল জাওযি (১/২৩৩) এর ‘যাদুল মাসির’।
‘বুখতানাসসার’নামক ব্যক্তি উল্লেখিত গ্রামটিকে ধ্বংস করে ফেলার পর ও গ্রামবাসীকে হত্যা করার পর উযাইর সে গ্রাম দিয়ে -প্রসিদ্ধ মতে সেটি বাইতুল মুকাদ্দাস- অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন। তখন সে গ্রামটি ছিল বিরান; তাতে কেউ ছিল না। এ গ্রামটি জনবহুল থাকার পর এখন এর যে অবস্থা তা নিয়ে তিনি ভাবতে ভাবতে বললেন: “মৃত্যুর (ধ্বংসের) পর কিভাবে আল্লাহ একে পুনর্জীবিত করবেন?” ধ্বংস ও বিরানতার ভয়াবহতা এবং পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসাকে দুরহ দেখে তিনি এ কথা বলেছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন: “অতঃপর আল্লাহ তাকে একশ বছর মৃত অবস্থায় রাখলেন।” এর মধ্যে শহরটি আবার পুনর্জীবিত হয়ে উঠেছে, লোকে লোকারণ্য হয়েছে, বনী ইসরাইলগণ এ শহরে ফিরে এসেছে। এরপর আল্লাহ যখন তাকে পুনর্জীবিত করলেন তখন সর্বপ্রথম তার চোখ দুইটিকে জীবিত করলেন যাতে করে সে আল্লাহর সৃজন ক্ষমতাকে দেখতে পায়, কিভাবে আল্লাহ তার দেহকে পুনর্জীবিত করেন। যখন তার গঠন পূর্ণ হল তখন আল্লাহ তাকে বললেন -অর্থাৎ ফেরেশতার মাধ্যমে- ‘তুমি কতকাল এভাবে ছিলে?’ সে বলল, একদিন বা একদিনেরও কিছু কম সময়। তাফসিরকারগণ বলেন: যেহেতু সে মারা গিয়েছিল দিনের প্রথমাংশে; আর তাকে পুনর্জীবিত করা হয়েছে দিনের শেষাংশে। যখন সে দেখল এখনো সূর্য আছে সে ভেবেছে এটি সে দিনেরই সূর্য। তাই সে বলেছে: “একদিনেরও কিছু কম সময়”“তিনি বললেন, বরং তুমি একশত বছর অবস্থান করেছ। এবার চেয়ে দেখ নিজের খাবার ও পানীয়ের দিকে সেগুলো অবিকৃত রয়েছে”। বর্ণিত আছে তার সাথে আঙ্গুর, ত্বীন ফল ও শরবত ছিল। সে এগুলোকে যেমন রেখে মারা গিয়েছিল ঠিক তেমনি পেল। কোন পরিবর্তন হয়নি। শরবত নষ্ট হয়নি, আঙ্গুর পচেনি, ত্বীন গন্ধ হয়নি। “এবং দেখ নিজের গাধাটির দিকে”। অর্থাৎ তাকিয়ে দেখ তোমার চোখের সামনে আল্লাহ কিভাবে সেটিকে পুনর্জীবিত করেন। “আমি তোমাকে মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত বানাতে চেয়েছি”। অর্থাৎ পুনর্জীবিত করার পক্ষে প্রমাণ বানাতে চেয়েছি। “হাড়গুলোর দিকে চেয়ে দেখ, আমি কিভাবে সেগুলোকে সংযুক্ত করি” অর্থাৎ একটি হাড্ডির সাথে অন্য হাড্ডিটি জুড়ে দেই। প্রত্যেকটি হাড্ডিকে স্ব স্থানে স্থাপন করে একটি ঘোড়ার কংকাল বানান; তাতে কোন গোশত ছিল না। এরপর এ হাড্ডির উপর গোশত, স্নায়ু, রগ ও চামড়া পরিয়ে দেন। এ সবকিছু করেছেন উযাইর এর চোখের সামনে। এভাবে যখন তার সামনে সবকিছু পরিষ্কার হলো তখন সে বলে উঠল- ‘আমি জানি, নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান’। অর্থাৎ এটি জানি। আমি তা সচক্ষে দেখেছি। আমার যামানার লোকদের মধ্যে আমি এ বিষয়ে সবচেয়ে ভাল জানি।[দেখুন: তাফসিরে ইবনে কাছির (১/৬৮৭-৬৮৯)]