আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
12,595 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (8 points)
edited by
একজন নাস্তিক এর প্রশ্নঃ

আওতাস যুদ্ধে কাফিরদের স্ত্রী রা ক্রীতদাসী হিসেবে উপস্তিত হলে মুসলিম রা তাদের সাথে সংগমের ব্যাপারে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় কারণ তারা পরস্ত্রী। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুরা আন নিসা এর ২৪ নং আয়াত নাজিল হয় যেখানে তাদের সাথে সংগম কে বৈধ করা হয়। কিন্তু তারা যদি বিবাহিত হয় তাহলে ব্যাপারটা কত জঘন্য হয়,ধরুন আপনি
যুদ্ধে আপনার স্ত্রীকে নিয়ে গেলেন এবং আপনাকে হত্যা  আপনার স্ত্রী কে দাসী বানিয়ে নিয়ে যায় এবং রাত কাটায় তাহলে ব্যাপারটা কত জঘন্য হয়ে যায়। ততকালীন সময়ে নারীরা যুদ্ধের সময় সেজেগুজে থাকত যাতে যুদ্ধে হারলে তাদের কপালে ভালো মুনিব জুটে। অনেকে বলে থাকেন এটা সেসব নারীদের যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য কিন্তু সেটা তো ছেলেদের ও আছে। সুতরাং এখানে যুদ্ধ বন্দীনী দের সাথে ধর্ষণ করা হলো না?

1 Answer

+1 vote
by (682,440 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


দাসপ্রথা ইসলাম প্রবর্তিত কোন ব্যবস্থা নয়। আজ হতে প্রায় পৌনে ৪০০০ বছর আগের ব্যবলনিয় Code of Hammurabi-তেও দাসপ্রথার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। কিন্তু কেন যেন ইসলামের সমালোচনায় দাসপ্রথা একটি বেশ মুখরোচক বিষয়বস্তুতে পরিণয় হয়, আর আলোচনার ভঙ্গিটাও এমন থাকে যাতে পাঠকের কাছে মনে হতে থাকবে দাসপ্রথার মত ঘৃণ্য একটি ব্যবস্থাকে ইসলাম জন্ম দিয়েছে বা উন্নীত করেছে। অথচ আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ইসলাম দাসপ্রথার মতো একটি বর্বর প্রথার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নিয়েছিল, ক্রীতদাসকে ভাতৃত্বের যে মর্যাদা দিয়েছিল, নেতৃত্বের যে সুযোগ দিয়েছিল, যে কোন নিরপেক্ষ বিশ্লেষক তার প্রশংসা না করে পারবে না।
,
মুহতারাম সাদাত দাঃবাঃ লিখেছেন যে,
যুদ্ধবন্দীদের ক্রীতদাস বানানো সেই সময় একটি স্বাভাবিক রীতি ছিল। কোন মুসলিম যদি যুদ্ধে অমুসলিমদের হাতে বন্দী হতো তাকেও এই পরিণতি বরণ করতে হতো। ইসলামে যুদ্ধবন্দীদের ক্রীতদাস বানানো কোন জরুরী বিষয় নয়। ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান যুদ্ধবন্দীদের মুক্তিপণ নিয়ে মুক্ত করতে পারে, বিনা মুক্তিপণেও মুক্ত করতে পারে, যুদ্ধবন্দি বিনিময় করতে পারে বা প্রয়োজনবোধে অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহের রীতি অনুসারে দাস-দাসীও বানাতে পারে। তবে কোন রাষ্ট্রের সাথে মুসলিমদের যদি এমন কোন চুক্তি থাকে যে তারা তাদের যুদ্ধবন্দীদের দাস বানাতে পারবে না, তবে সেই চুক্তি রক্ষা করা মুসলিমদের জন্য জরুরি।
,
ইসলাম একটি বাস্তব ধর্ম। ইসলাম এমন কোন ধর্ম না যে কেউ এক গালে চড় মারলে আরেকটা গাল পেতে দিতে বলবে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নিজ অনুসারিদের বিপদ বা অস্তিত্ব সংকটের মুখে ফেলে দেবার ধর্ম ইসলাম নয়। যেখানে মুসলিমরা অমুসলিমদের হাতে যুদ্ধবন্দী হলে তাদেরকেও দাসত্ব বরণ করতে হতো, সেখানে ইসলাম যদি একই সুযোগ না রাখতো তবে তা হতো শত্রুর হাতে এক বিরাট মারণাস্ত্র তুলে দেওয়ার নামান্তর। কাজেই যতদিন মুসলিমদের জন্য এই নিশ্চয়তা না আসে যে তাদের যুদ্ধবন্দীদের দাসদাসী বানানো হবে না, ততদিন পর্যন্ত মুসলিমদের জন্যও এই সুযোগ রহিত করার কোন যুক্তি থাকতে পারে না।
,
যুদ্ধবন্দীদেরকে দাসে পরিণত করার বিধান কেবল বৈধতা পর্যন্ত সীমিত।অর্থাৎ ইসলামী র্রাষ্ট যদি উপযুক্ত বিবেচনা করে,তবে তাদেরকে দাসে পরিণত করতে পারে।এরূপ করা মোস্তাহাব বা ওয়াজিব নয়।বরং কোরআন ও হাদীসের সমষ্টিগত বাণী থেকে মুক্ত করাই উত্তম বোঝা যায়।দাসে পরিণত করার অনুমতিও ততক্ষণ যতক্ষণ শত্রুপক্ষের সাথে এর বিপরীত কোন চুক্তি না থাকে।যদি শত্রুপক্ষের সাথে চুক্তি হয়ে যায় যে,তারা আমাদের বন্দীদেরকে দাসে পরিণত করবে না এবং আমরাও তাদের বন্দীদেরকে দাসে পরিণত করব না,তবে এই চুক্তি মেনে চলা অপরিহার্য হবে।বর্তমান যুগে বিশ্বের অনেক দেশ এরূপ চুক্তিতে আবদ্ধ আছে।কাজেই যেসব মুসলিম দেশ এই চুক্তিতে সাক্ষর করেছে তাদের জন্য চুক্তি বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত কোন বন্দীকে দাসে পরিণত করা বৈধ হবে না।তাফসীর মা'রেফুল কোরআন -পৃষ্টা১২৫৪(বাংলা বার্সন-মুহাউদ্দিন খান অনূদিত - সউদী সরকার কর্তৃক প্রকাশিত)

ইসলাম ও দাসত্ব সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 
,
দাসদের অনেক অধিকার ইসলাম দিয়েছেঃ
★এক সাহাবী এসে বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি আমার গোলামকে প্রতিদিন কয়বার মাফ করবো?
উত্তরে আসল প্রতিদিন ৭০ টি ভুল মাফ করবে।
(বুখারী ২৩৮৪)

★ তাদেরকে আমার দাস হিসেবে সম্বোধন করা নিষেধ। 
ডাকার সময় এভাবে ডাকবে আমার বালক, আমার খাদিম। 
(তিরমিজি ১৯৪৯)

★★ পান থেকে চুন খসলেই ইসলামে দাসমুক্তির বিধান দেওয়া হয়েছেঃঃ

★ যদি দাসকে মারো,তো প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে তাকে মুক্ত কর।
(মুসলিম শরীফ ৪১৫২)

★ কাউকে অনিচ্ছাকৃত মেরে ফেলেছ,তো এর কাফফারা স্বরুপ দাস মুক্তি কর। 
(কুরআন সুরা নিসা /৯২)

★ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেছ,দাস মুক্তি কর। 
(কুরআন সুরা মায়েদাহ/৮৯)

★ রমজান মাসে রোযা রেখে (দিনের বেলা) স্ত্রী সহবাস করেছ,দাস মুক্তি কর।
(আবু দাউদ ২২০৭)

★ ঝগড়ার সময় স্ত্রীকে বলেছ তোমার পিঠ,, আমার মায়ের মতো,তো গোলাম আযাদ কর।
(আবু দাউদ ২২০৮)

★যাকাতের ৮ টি খাতের ১ টি খাতই আছে,যাকাতের টাকা দিয়ে গোলাম ক্রয় করে তাকে আযাদ করে দেওয়া।
(কুরআন সুরা তওবাহ/৬০)

সূর্য গ্রহনের সময় দাস মুক্ত কর।
(বুখারী শরীফ ৯৯৬)

★ পরকালের সওয়াবের আশায় দাস মুক্ত কর।
(বুখারী শরীফ ৫২৪৬)              

বিস্তারিত জানুনঃ 

★দাসিকে বিবাহে উৎসাহ প্রদান
আবু মুসা(রা.) হতে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
যার একটি ক্রীসদাসি আছে আর সে তাকে শিক্ষাদীক্ষা দান করে, তার সাথে সদয় ব্যবহার করে, অত:পর তাকে মুক্ত করে বিবাহ করে সে দ্বিগুণ সওয়াব পাবে। [সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ২৫৮৪; ইংরেজি অনুবাদ: ভলি. ৩, বুক ৪৬, নম্বর ৭২০;
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আরো জানতে মুহতারাম ডাঃ শামছুল আরেফিন শক্তি দাঃবাঃ এর লিখিত ""ডাবল স্ট্যান্ডার্ড"" পড়ুন।     
.
মুহতারাম মুহাম্মাদ সাইফুর রহমান লিখেছেনঃ
ইসলাম পূর্বে, দাসীর বিয়ের পরেও দাসী মালিকের চাহিদা মেটাতে বাধ্য ছিলো। তাদের সম্পর্কের কারনে জন্ম নেওয়া বাচ্চার পিতৃত্ব ও তারা স্বীকার করত না।
দাসীর সন্তান ও দাস হিসেবেই বিবেচিত হত। আর মালিক পিতৃত্ব স্বীকার করত না আর তার পক্ষেই দেশের প্রশাসন থাকত।
,
ইহুদী সমাজে দাসীদেরকে পরিবারের ভিতরেই অথবা বাহিরে পতিতা হিসেবে ব্যবহার করা পূর্বে সাধারন ব্যাপার বলে গন্য করা হত।

রোমান সমাজে বড় বড় ব্যবসায়ীদের দাসীদেরকে জোর করে পতিতা বানিয়ে রাখা হত অন্য পুরুষের খায়েশ পুরনের জন্যে।

★ইসলামে দাসীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের যৌক্তিকতা ও লুকায়িত সৌন্দর্য ও হিকমাহ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

(১) পূর্বে দাসীদেরকে যে কেউই ব্যবহার করতে পারত এমনকি একই পরিবারের অনেক সদস্য তাদেরকে ভোগ করতে পারত। তবে ইসলাম শুধুমাত্র মালিকের জন্যই বৈধ করেছে। এতে প্রাচীনকালে যেমন যুদ্ধ শেষে নারীদেরকে ধর্ষন করা হত, বা তাদেরকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হত। ইসলাম সেই সুযোগকে মিটিয়ে দিয়েছে। ইসলামে বৈধভাবে মালিকানাপ্রাপ্ত মালিকের সাথে দাসীর শারীরিক সম্পর্কের সুযোগ রেখে নারীকে বেইজ্জতি থেকে বাচিয়েছে, তাদেরকে সম্মানিত করেছে, তাদেরকে নতুন একটি পরিবার দিয়েছে, তাদেরকে অন্ন-বস্ত্র,বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়েছে।
,
(২) মালিক ও দাসীর সম্পর্ক অবশ্যই ঘোষনা করতে হবে। যাতে লোকমনে তাদের দুইজনের ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ ও সংশয় না থাকে। এতে করে নারীটি পায় যথার্থ সম্মান ও মর্যাদা।
,
(৩) এর ফলে দাসীটির শারীরিক চাহিদা পূরনের একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থা হয়, এতে একদিকে দাসীটির স্বাভাবিক চাহিদা পূরন হয় অন্যদিকে দাসীটি চাহিদা পূরন না করতে পেরে অবৈধ কোনো পন্থা বেছে নিবেনা এতে রাষ্ট্রে চারিত্রিক পবিত্রতা ও শৃংখলা বজায় থাকব।
,
(৪) মালিকের জন্য দাসীকে বিয়ে করা জায়েজ।
সূরা নিসা ৪ঃ২৫।

যেমন হাদীছে এসেছে, যে ব্যক্তি দাসীকে উত্তম রুপে লালন-পালন, প্রতিপালন করে, তার প্রতি ইহসান করে, তাকে মুক্ত করে বিবাহ করে তার জন্যে আছে দ্বিগুন সওয়াব;
সহীহ বুখারী, ইফা, হা-২৩৭৬, ২৩৭৯।
,
(৫) দাসীকে কোনোমতেই সহবাসে জোর করা যাবেনা যেমনটা রোমান সমাজে প্রচলন ছিলো।

(৬) দাসীকে অন্ন-বস্ত্রের নিশ্চয়তা দিতে হবে, সাথে উত্তম আচরন করতে হবে।

(৭) দাসী যদি উম্মুল ওয়ালাদ অর্থ ওই মালিকের সন্তানের জননী হয় তবে ওই দাসী বিক্রি হারাম হয়ে যাবে। হাদীছে এসেছে, তোমরা উম্মুল ওয়ালাদ বিক্রি করোনা। 
সিলসিলাহ সহীহাহ, ৫/৫৪০, হা-২৪১৭

আর ওই দাসী মালিকের মৃত্যুর পরে মুক্ত হয়ে যাবে।

এতে যেমন দাসীর মুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে, তেমনি সন্তানের পিতৃপরিচয়ের নিশ্চয়তা আছে। আর সন্তান ও মুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
,
(৮) দাসীর জন্য এ সুযোগ ও রয়েছে সে মালিকের কাছে দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে এবং দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারে। 
,
(৯) সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে দাসী খুব কাছ থেকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে, বুঝতে, উপলব্ধি করতে পারে। এতে হয়ত সে ইসলাম গ্রহন করে নিতে পারে, যা তার জন্যে চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে মুক্তি আর চিরশান্তির জান্নাতের নিশ্চয়তা দিতে পারে।
,
নিজ স্ত্রীর সাথে যেমন, ঠিক তেমনি যুদ্ধবন্দি দাসীদের সাথে সহবাস করা ইসলামে বৈধ। তবে সেক্ষেত্রেও প্রচুর নিয়ম বিধি রয়েছে।
মহানবির মৃত্যুর ১০০ বৎসরের মধ্যে ইবনে ইসহাকের লেখা সীরাতগ্রন্থ, হাদীসগ্রন্থ এবং পরবর্তী কোন গ্রন্থেও এমন এটি কথাও নেই যে, যুদ্ধ বন্দিদের ধর্ষন করা হয়েছে। হ্যা এটা ঠিক যে যুদ্ধবন্দিদের দাসীতে পরিণত করা হতো। কেননা তৎকালে কোন কারাগার ছিল না। নারী যুদ্ধবন্দিদের দাসীতে পরিণত করে তাদের সাথে সেক্স করা বৈধ ছিল। বিয়ের প্রয়োজন হতো না, কেননা দাসীর সাথে সেটা করা একটা অলিখিত কন্ট্রাক্টই বলা যায়। আজকের যুগে যেমনটা কল্পনা করা হয়, সে যুগটা আদপেই সেরকম ছিল না। তৎকালে নারীরাও যোদ্ধা ছিল। তারা এটাও জানতো যুদ্ধে হারলে বা বন্দি হলে দাসীতে পরিণত হতে হবে।
,
ইতিহাসবিদ স্যামুয়েল বার্ডার লেখেন- প্রাচীনকালে যেসব নারীরা তাদের পিতা কিংবা স্বামীর সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে যেতো, তারা খুব সুন্দর জামা আর অলঙ্কার পড়তো। যাতে বন্দী হলে তারা বিজিতের দৃষ্টি খুব সহজেই কাড়তে পারে।[Oriental Customs Or, an Illustration of the Sacred Scripture, Williams and Smith, London, 1807 vol.2 p.79, no. 753]
,

১) দাসির সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে বিবাহ শর্ত নয়ঃ
ইসলামের বিধান অনুযায়ী ক্রয়কৃত দাসি কিংবা বন্টনকৃত যুদ্ধ বন্দিনীদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা মুসলিমদের জন্য আল্লাহ তায়ালা হালাল ঘোষণা করেছেন। এ ক্ষেত্রে দাসীকে বিয়ে করা শর্ত হিসাবে গণ্য করা হয় নি। বিয়ে ছাড়াই দাসীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ। তবে কেউ যদি তার দাসীকে ইসলাম শিক্ষা দেয়, অতঃপর তাকে মুক্ত করে দিয়ে তাকে বিয়ে করে তাহলে উক্ত মুনিবের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব।
,
২) বণ্টন হবার আগে কোন যুদ্ধ বন্দিনীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধঃ
যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বন্টন হবার আগে কোন যুদ্ধ বন্দিনীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ যদি এ ধরণের কোন কার্যে লিপ্ত হয় তাহলে তা ব্যভিচার হিসেবে গণ্য হবে এবং উক্ত ব্যক্তির ওপর ব্যভিচারের শাস্তি প্রয়োগ করা হবে।

৩) যুদ্ধক্ষেত্রে স্বামী সহ ধৃত যুদ্ধ বন্দিনীদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধঃ
বন্দি হবার পর সাধারণভাবে বিবাহিত যুদ্ধ বন্দিনীর পূর্বেকার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হিসেবে গণ্য করা হয়। ফলে তাদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ বিবেচিত হয়। কিন্তু যদি যুদ্ধক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই একসাথে অথবা একজনকে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিধির বাইরে নিয়ে যাবার আগেই অন্যজন যুদ্ধবন্দি/বন্দিনী হিসেবে ধৃত হয়, সেক্ষেত্রে তাদের বিবাহ বন্ধন অক্ষুন্ন থাকবে। ফলে উক্ত যুদ্ধ বন্দিনীর সাথে স্বামী ভিন্ন অন্য কারো দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন অবৈধ হবে। যদি শুধুমাত্র একজন যুদ্ধক্ষেত্রে ধৃত হয়ে ইসলামী সীমানায় পৌঁছে যায়, সে ক্ষেত্রে তাদের বিবাহ বন্ধন বিচ্ছিন্ন হিসেবে গণ্য হবে।
,
৪) ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগে দাসীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধঃ
ক্রীতদাসি ক্রয় করলেই বা বন্টনকৃত যুদ্ধ বন্দিনী লাভ করার সাথে সাথেই একজন মুসলিমদের জন্য তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন বৈধ হয়ে যায় না, বরং এক ইদ্দতকাল (তথা একটি মাসিক চক্র) অতিবাহিত হবার আগে তাদের সাথে মিলিত হওয়া নিষিদ্ধ। এই নিয়ম সে সকল ক্রীতদাসি বা যুদ্ধ বন্দিনীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যারা গর্ভবতী নন।
,
৫) গর্ভবতী দাসীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞাঃ
ক্রয়কৃত দাসী বা বন্টনকৃত যুদ্ধ বন্দিনী যদি গর্ভবতী হয় তাহলে সন্তান প্রসবের আগে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা নিষিদ্ধ। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা জায়েজ।
,
৬) বিবাহিত দাসির সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞাঃ
যদি মুনিবের অনুমতিক্রমে কোন দাসি অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, সে ক্ষেত্রে মুনিবের জন্য উক্ত দাসির সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা হারাম। এমনকি দাসির যৌনাঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করাও নিষিদ্ধ।

৭) যে দাসির সাথে মুনিবের দৈহিক সম্পর্ক রয়েছে তার বোনের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞাঃ
যদি সহোদর দুই বোন কোন ব্যক্তির দাসি হিসেবে থাকে তাহলে মুনিব কোন একজনের সাথে দৈহিক সম্পর্কে জড়িত থাকা অবস্থায় অন্য জনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। তবে যার সাথে দৈহিক সম্পর্ক রয়েছে তাকে যদি মুনিব মুক্ত করে দেয় কিংবা অন্য কোন পুরুষের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়, সে ক্ষেত্রে তার বোনের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা জায়েজ হবে।

৮) নিজ মালিকাধীন নয় এমন ক্রীতদাসির সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিষিদ্ধঃ
নিজের মালিকাধীন দাসি ছাড়া অন্য কারো দাসির সাথে বিবাহ বহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ। এমনকি নিজের স্ত্রীর অধিকারভুক্ত দাসির সাথেও দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা জায়েজ নয়।

৯) মুনিবের সন্তান গর্ভে ধারণ করার বিধানঃ
কোন দাসি যদি তার মুনিবের সন্তান গর্ভে ধারণ করে তাহলে মুনিবের জন্য উক্ত দাসিকে বিক্রয় করা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ফলে উক্ত দাসি মুনিবের পরিবারের স্থায়ী সদস্যে পরিণত হয়। প্রসবকৃত উক্ত সন্তানকে মুনিবের স্বাধীন বৈধ সন্তান হিসাবে গণ্য করা হয় এবং তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়। আর মুনিব মারা যাবার সাথে সাথে উক্ত দাসি স্বাধীন হয়ে যায়।
,
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
দাসীদের সাথে সহবাসের ক্ষেত্রে ইসলাম অন্য কিছু ধর্মের ন্যায়  জোড় করার অনুমতি দেয়না। 
এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হলো দাসীদের সাথে সহবাস কেবল তাদের সন্তুষ্টি চিত্তেই হবে।
জোড়পূর্বক নয়।
,
যেটা পূর্বেই আলোচনা হয়েছে 
,
★আর ছেলে (দাস) যদি তাদের যৌন খায়েশ মিটাতে চায়,তাহলে মালিকের অনুমতি স্বাপেক্ষে ইসলাম তাদেরও বিবাহের অনুমতি প্রদান করেছে।
যাতে তাদেরও হক পরিপূর্ণ আদায় হয়।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...