আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওস্তাদ। একটি অনলাইন কোর্সে থাকাকালীন একজন ব্যাচমেট আমাকে পছন্দ করেন এবং বিয়ের প্রস্তাব দেন।(উল্লেখ্য সে আমাকে কখনো দেখেননি) এমতাবস্থায় আমার মনে হয়েছে আমার পরিবার রাজি হবেননা,বেশ কিছু কারণে। (যদিও ইসলামিক প্রেক্ষিতে কারণগুলো ভিত্তিহীন মনে হয়েছে )।
আমি তাকে বলি,উনি যেন কথা না বাড়ায় কারণ এতে গুনাহ বাড়ার আশংকা সৃষ্টি হচ্ছিল সাথে আমার পরিবার ও বিষয়টি ভালোভাবে নিবেননা এবং এরপর উনি চুপ থেকে যান। এরপর একবছরে আর কোনো কথাই হয়নি। তবে,একদিন আমি জানতে পারি অন্য মাধ্যমে যে,সে এখনো অপেক্ষায় আছে আল্লাহর উপর ভরসা করে। আমি তাকে জানাই, যেন সে এ বিষয় থেকে বের হয়ে আসে। এবারও সে সম্মতি দিয়ে বলে যে, সে চাচ্ছেনা গুনাহ বাড়ুক তাই সে এ বিষয়টি এখানেই শেষ করছে। এর মাঝে আমি ৩ বার ইস্তিখারা করি।

প্রথমদিন,আমি দেখলাম পরিবার নিয়ে কোথাও যাচ্ছি।

২য়দিন,আমি কনফিউজড।
৩য়দিন, আমি ইস্তিখারা করে, ঘুমানোর প্রথম দিকে আমি কী দেখলাম মনে করতে পারছিলামনা,শুধু মনে হচ্ছিল আম্মুকে নিয়ে ভয়ের কিছু দেখেছি। এরপর, সেহরি খেয়ে আবার ঘুমালে আমি সেই ব্যক্তিকে দেখতে পাই, যা কে নিয়ে ইস্তিখারা করছিলাম।

আমি দেখলাম যে,আমি একটি ক্লাসরুমে এবং উনি আমার পাশে বসেছেন। একটু পর সে আবার কোনো ব্যাপারে রাগ/কষ্ট পেয়ে পিছনে বসলেন। আমারও স্বপ্নে কিছুটা খারাপ লাগলো। একটু পর আবার উনি পাশে এসে বসলেন এবং আমাকে আমার পছন্দের একটি খাবার খেতে দিলেন এবং আমি "না" করে দিলাম এবং না খাওয়ার কারণ বুঝিয়ে বললাম। এরপর আমি নিজেই খাবারটি খেতে নিলাম এবং একপর্যায়ে আমার স্কুল লাইফের কিছু পরিচিত মুখ(মেয়ে) দেখলাম,যাদের সাথে এমনিই পরিচয় ছিল। তারা তাকিয়ে মুচকি হাসল এবং আমিও মুখের খাবার শেষ না করেই হেসে দেই সাথে পাশের উনিও। এভাবেই স্বপ্ন শেষ হয়।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমি এক্ষেত্রে কী বুঝবো?

ইস্তিখারা এর উত্তর কি এই স্বপ্নে আছে? সেটি পজিটিভ নাকি নেগেটিভ? আমার এখানে কী কী ভুল হয়েছে,যা আমার শুধরে নেওয়া জরুরি?
আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যমে সকল সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছিলাম তাই ইস্তুিখারা করি এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত গুলোও আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যমেই নিতে চাচ্ছি।

এমতাবস্থায় উত্তর পেলে উপকৃত হবো,ইন্ শা আল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (653,610 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/13381/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
ইস্তেখারা অর্থ হল, ভালোকে তালাশ করা। অর্থাৎ যখন কারো সামনে দু’টি রাস্তা থাকে, সে জানেনা কোন রাস্তাটি তার জন্য মঙ্গলজনক, তাহলে এমতাবস্থায় সে ইস্তেখারা করে একটি রাস্তাকে নির্দিষ্ট করবে। সুতরাং কারো অসুখ মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে কি না? সেটা জানার জন্য ইস্তেখারা করার কোনো নিয়ম নাই। হ্যা এ বিষয়ে আল্লাহর মদদ ও সাহায্য কামনার স্বার্থে ইস্তেখারা করা যেতে পারে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
হযরত জাবির রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا الِاسْتِخَارَةَ فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ القُرْآنِ، يَقُولُ: " إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ، فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ لِيَقُلْ: 

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সব কাজে ইস্তিখারাহ্* শিক্ষা দিতেন। যেমন পবিত্র কুরআনের সূরাহ্ আমাদের শিখাতেন। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করলে সে যেন ফরজ নয় এমন দু’রাক‘আত সালাত আদায় করার পর এ দু’আ পড়েঃ 

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلَّامُ الغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي " قَالَ: «وَيُسَمِّي حَاجَتَهُ»

ভাবার্থঃ‘‘প্রভু হে! আমি তোমার জ্ঞানের ওয়াসিলাহ্তে তোমার অনুমতি কামনা করছি; তোমার কুদরতের ওয়াসিলায় শক্তি চাচ্ছি আর তোমার অপার করুণা ভিক্ষা করছি। কারণ তুমিই সর্বশক্তিমান আর আমি দুর্বল। তুমিই জ্ঞানী আর আমি অজ্ঞ এবং তুমিই সর্বজ্ঞ। প্রভু হে! তুমি যদি মনে কর যে, এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায়, ইহকালে ও পরকালে সত্বর কিংবা বিলম্বে আমার পক্ষে মঙ্গলজনক হবে তা হলে আমার জন্য তা নির্ধারিত করে দাও এবং তার প্রাপ্তি আমার জন্য সহজতর করে দাও। অতঃপর তুমি তাতে বারাকাত দাও। আর যদি তুমি মনে কর এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায় ইহকালে ও পরকালে আমার জন্য ক্ষতিকর হবে শীঘ্র কিংবা বিলম্বে তাহলে তুমি তাকে আমা হতে দূর করে দাও এবং আমাকে তা হতে দূরে রাখো; অতঃপর তুমি আমার জন্য যা মঙ্গলজনক তা ব্যবস্থা কর- সেটা যেখান থেকেই হোক না কেন এবং আমাকে তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্ত করে তোল।’’তিনি ইরশাদ করেন هَذَا الْأَمْرَ  তার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে।(সহীহ বুখারী- (শামেলা);২/৫৭,হাদীস নং১১৬২,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৪/৬২৯) 

বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/1472

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপনার ইস্তেখারায় সেই ছেলেটি সম্পর্কে কোনো পজিটিভ বা নেগেটিভ দিক আছে বলে মনে হচ্ছেনা

এখানে লক্ষনীয় বিষয় হলো,সেই ছেলেটি তো পারিবারিক ভাবে আপনার পরিবারে বিবাহের প্রস্তাব দেয়নি,সুতরাং তাকে নিয়ে ইস্তেখারা করছেন কেনো?
তাকে নিয়ে এভাবে অন্তরে অন্তরে ভাবা কোনোভাবেই জায়েজ নেই।

সেই ছেলেটি যদি পারিবারিক ভাবে আপনার পরিবারে বিবাহের প্রস্তাব দেয়,তখন আপনি ইস্তেখারা করবেন। তার আগে নয়।

বিষয়টিকে কোনোভাবেই আর পাত্তা না দেয়ার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...