আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,945 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
জোরে জোরে জিকির করা কি জায়েজ আছে?
অনেক বক্তা ওয়াজ মাহফিলে বলেন জোরে জোরে বলেন সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার
বা চা খাওয়ার সময় বলেন একটু জিকির করি, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার,
এটা কতটুকু শরীয়ত সম্মত?

1 Answer

0 votes
by (731,310 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
একাকী যিকির করা বা কয়েকজন একত্রিত হয়ে উঁচু আওয়াজে যিকির করা উভয়টিই শরীয়তে অনুমোদিত। তা মসজিদে হোক বা অন্য কোথাও। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার প্রতি বান্দার ধারণা অনুযায়ী আমি তার সাথে থাকি। সে যদি একাকী আমার যিকির করে তাহলে আমি গোপনে তাকে স্মরণ করি। সে কোনো মজলিসে আমার যিকির করলে আমি তাদের চেয়ে উত্তম মজলিসে তার আলোচনা করি। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৭৪০৫] ইমাম সুয়ূতী রাহ. বলেন, জামাতে যিকির করলে আওয়াজ তো হবেই। [আলহাবী লিলফাতাওয়া ২/১২৯ ]

তবে এক্ষেত্রে বিশেষভাবে কয়েকটি শর্ত পূরণ করা অত্যাবশ্যক। যথা : ১. লোক দেখানোর উদ্দেশ্য থেকে মুক্ত হওয়া। ২. কোনো ব্যক্তির নামাযে বা অন্য কোনো ইবাদতে বিঘ্ন না ঘটানো। ৩. কোনো ব্যক্তির বিশ্রামে সমস্যা না হওয়া। ৪. আওয়াজ স্বাভাবিক হওয়া, চিৎকার করে বা অতিরিক্ত উঁচু আওয়াজে না হওয়া এবং মাইক ব্যবহার না করা। ৫. সাধারণভাবে এবং সহীহ-শুদ্ধ করে যিকির করা। যিকিরের শব্দ উচ্চারণে লাহনে জলী থেকে বেঁচে থাকা। যদি উল্লেখিত শর্তাবলি পাওয়া যায় তবে ইজতিমায়ী যিকির করতে কোনো অসুবিধা নেই। আর যদি কোনো ক্ষেত্রে উল্লেখিত শর্তসমূহ বা তা থেকে কোনো একটি শর্ত না পাওয়া যায় তাহলে সেক্ষেত্রে কাজটি শরীয়তসম্মত হবে না। উল্লেখ্য, বর্তমানে অনেক যিকিরের মজলিসে উল্লেখিত শর্তগুলোর অনেক কিছুই লঙ্ঘিত হতে দেখা যায়, যা সংশোধনযোগ্য। [রদ্দুল মুহতার ১/৬৬০; সিবাহাতুল ফিকরি ফিলজাহরি বিযযিকর, আবদুল হাই লাখনৌভী পৃ. ৩৮; নতীজাতুল ফিকরি ফিলজাহরি বিযযিকর, (আলহাবী লিল ফাতাওয়া ২/১২৮) ইমাম সুয়ূতী; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৫/১৫১ ] 


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কিছু শর্ত সাপেক্ষ্যে সম্মিলিত ভাবে যিকির জায়েয। তবে আল্লাহর যিকিরকে হাতিয়ার বানানো না-জায়েয। সে হিসেবে আমরা বলবো যে, ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য বা চা খাওয়ার সময়ে টাইম পাসের জন্য সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, দ্বারা যিকির করা জায়েয হবে না।


مأخَذُ الفَتوی
«حاشية ابن عابدين = رد المحتار ط الحلبي» (1/ 660):
 قَوْلُهُ وَرَفْعُ صَوْتٍ بِذِكْرٍ إلَخْ) أَقُولُ: اضْطَرَبَ كَلَامُ صَاحِبِ الْبَزَّازِيَّةِ فِي ذَلِكَ؛ فَتَارَةً قَالَ: إنَّهُ حَرَامٌ، وَتَارَةً قَالَ إنَّهُ جَائِزٌ. وَفِي الْفَتَاوَى الْخَيْرِيَّةِ مِنْ الْكَرَاهِيَةِ وَالِاسْتِحْسَانِ: جَاءَ فِي الْحَدِيثِ بِهِ اقْتَضَى طَلَبَ الْجَهْرِ بِهِ نَحْوُ " «وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلَإٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلَإٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ» رَوَاهُ الشَّيْخَانِ. وَهُنَاكَ أَحَادِيثُ اقْتَضَتْ طَلَبَ الْإِسْرَارِ، وَالْجَمْعُ بَيْنَهُمَا بِأَنَّ ذَلِكَ يَخْتَلِفُ بِاخْتِلَافِ الْأَشْخَاصِ وَالْأَحْوَالِ كَمَا جُمِعَ بِذَلِكَ بَيْنَ أَحَادِيثِ الْجَهْرِ وَالْإِخْفَاءِ بِالْقِرَاءَةِ وَلَا يُعَارِضُ ذَلِكَ حَدِيثُ «خَيْرُ الذِّكْرِ الْخَفِيُّ» لِأَنَّهُ حَيْثُ خِيفَ الرِّيَاءُ أَوْ تَأَذِّي الْمُصَلِّينَ أَوْ النِّيَامِ، فَإِنْ خَلَا مِمَّا ذُكِرَ؛ فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ: إنَّ الْجَهْرَ أَفْضَلُ لِأَنَّهُ أَكْثَرُ عَمَلًا وَلِتَعَدِّي فَائِدَتِهِ إلَى السَّامِعِينَ، وَيُوقِظُ قَلْبَ الذَّاكِرِ فَيَجْمَعُ هَمَّهُ إلَى الْفِكْرِ، وَيَصْرِفُ سَمْعَهُ إلَيْهِ، وَيَطْرُدُ النَّوْمَ، وَيَزِيدُ النَّشَاطَ. اهـ. مُلَخَّصًا، وَتَمَامُ الْكَلَامِ هُنَاكَ فَرَاجِعْهُ. وَفِي حَاشِيَةِ الْحَمَوِيِّ عَنْ الْإِمَامِ الشَّعْرَانِيِّ: أَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ سَلَفًا وَخَلَفًا عَلَى اسْتِحْبَابِ ذِكْرِ الْجَمَاعَةِ فِي الْمَسَاجِدِ وَغَيْرِهَا إلَّا أَنْ يُشَوِّشَ جَهْرُهُمْ عَلَى نَائِمٍ أَوْ مُصَلٍّ أَوْ قَارِئٍ إلَخْ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...