আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in পবিত্রতা (Purity) by (29 points)
reshown by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম,
আমি একজন ব্যাচেলার স্টুডেন্ট, পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করি। একদিন আগে আমার একটা স্টুডেন্ট এর বাসায় পড়ানোর সময় স্টুডেন্টের ছোট ভাই বয়স আজ থেকে ছয় বছর হবে সে এসে আমার পাশে সোফায় বসে। শারীরিক কিছু সমস্যা থাকার কারণে বাচ্চাটা তার প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না এবং এবং সোফাতে বসে অল্প প্রস্রাব করে ফেলে।
এ সময় সোফাতে প্রস্রাব না লাগলেও অল্প ৬ থেকে ৭ ফোটা প্রস্রাব মেঝেতে পড়ে। এরপর আমি আমার স্টুডেন্ট কে বলি বাসায় যিনি কাজ করেন উনাকে বলতে যাতে প্রস্রাবের জায়গাটা পরিষ্কার করে নিয়ে যায়। কিন্তু বাসায় যিনি কাজ করেন তিনি ওই মুহূর্তে বাসার নিচে থাকায় আমার স্টুডেন্ট তাকে আর ডাকে না। 

অর্থাৎ প্রস্রাব ওই জায়গাতেই শুকিয়ে যায় এবং পরদিন যখন প্রতিদিনের মতো ঘর মোছা হয় তখন ওই জায়গাটা মোছা হয়ে যায় কিন্তু ওই জায়গাটা প্রস্রাব আসে জন্য আলাদা ভাবে মোছা হয় না।
আমি পরদিন স্টুডেন্ট এর বাসায় গিয়ে মেঝের যেখানে প্রস্রাব পড়েছিল ওর একটু পাশে পা রাখি এবং জুতা পরার কারণে পা ও মোজা হালজা ঘেমে গিয়েছিলো তবে তা খুবই হালজা ঘাম। তবে উক্ত আমি প্রস্রাবের কোন রকমের গন্ধ চিহ্ন বা আলামত পাইনা।

প্রশ্ন ১: উক্ত ঘটনার ধরুন কি আমার পা এবং ওই বাড়ির মেঝে ও অন্যান্য আসবাবপত্র নাপাক হবে?

প্রশ্ন ২: স্টুডেন্টের ছোট ভাই দুষ্টামির ছলে প্যান্টের যেখানে প্রস্রাব লাগে ওই জায়গার দিকে হাত দেয়। তবে আমি নিশ্চিত না যে প্রসাব যেখানে লেগেছে সেখানেই হাত দিয়েছে কিনা কারণ উক্ত হাত দিয়ে বাচ্চাটা পড়ার টেবিল, দরজার লক এসব জায়গায় হাত দিলেও আমি সেখানে কোন ভেজা ভাব দেখতে পাইনি। এমন অবস্থায় টেবিল, দরজার লক বা অন্যান্য জিনিসপত্র কি নাপাক হবে? <!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_250408_171605_207.sdocx-->

1 Answer

0 votes
by (73,920 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/71248/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো পাক জিনিসকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।

যা নিম্নোক্ত হাদীস থেকে প্রমানিত হয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح :

আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

,

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا)  যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

,

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

,

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ. লিখেন,

اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ

ভাবার্থঃ তৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন (দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না। [তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]

মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।

হাদীসটি এই, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয় এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়, যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে। (আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/293  

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

,

১-২. শুধু সন্দেহের কারণে কোনো জিনিস নাপাক হয় না বা নাপাকির হুকুম আরোপিত হয় না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পা, সব আসবাব পাক হিসাবে ধরা হবে। তবে কখনো এগুলোতে দৃশ্যমান নাপাকি থাকলে ভিন্ন কথা।  সুতরাং শুধু শুধু এমন সন্দেহ করা থেকে বিরত থাকবেন। আরো জানুন - জরুরতের কারণের অনেক কিছু পাক - https://ifatwa.info/50099/

আপনি সব রকম ওয়াসওয়াসা পরিহার করে চলবেন। কারণ, ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (29 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 
আসসালামু আলাইকুম 
দ্বিতীয় প্রশ্নের ক্ষেত্রে কিভাবে সমাধানে আসব? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...