আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
আমি একজন বিবাহিত নারী। আমার স্বামীর আচরণ প্রায়ই এতটা কঠোর হৃদয় হয়ে যায় যে তা সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। তার পক্ষ থেকে অসম্মান জনক ব্যবহার পাওয়ার পর কোনো রকম মানসিক সাপোর্ট ও পাই না।
আমি অনেক চেষ্টা করি ধৈর্য ধরতে, ইসলামি আদর্শ অনুযায়ী চলতে। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন মানসিক কষ্ট হয় যে মনে হয় দম বন্ধ হয়ে আসছে, কাঁদতে থাকি, ঘুম হয় না, খাওয়া হয় না — মানসিকরোগীর মত হয়ে যাচ্ছি। পাগল হয়ে যাবো লাগে মাঝে মাঝে। তখন আমিও রিপ্লাইয়ে খারাপ আচরণ করে ফেলি,আমিও অসম্মান জনক কথা বলে ফেলি। যার জন্য ও আবার মানসিক কষ্ট পাই যে কেনো আরো ধৈর্য ধরতে পারলাম না।
.
আমি এমন অবস্থায় আমার মা-বাবার সাথে বা কোনো কাছের মানুষের সাথে একটু কষ্টের কথা শেয়ার করতে চাই। কিন্তু আবার ভয় হয়, এটা কি গীবত হয়ে যাবে?
আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, কিন্তু আমার অবস্থা এমন হয়ে যায় যে কাউকে না বললে নিজের মধ্যে পুষে রাখতে আর পারছি না নিজের মানসিক অবস্থার জন্য।
.
প্রশ্ন হলো:
১. এ অবস্থায় মা-বাবার সাথে কষ্ট শেয়ার করলে সেটা কি গীবত হবে?
২. ইসলামে এই পরিস্থিতিতে আমার কী করণীয় বলে?
৩. আমি কি এ অবস্থায় ইসলাম অনুযায়ী আলাদা থাকার বা মানসিক সাহায্য নেওয়ার অনুমতি পাব?
.
আশা করি, আল্লাহর হুকুম ও রাসূল (সাঃ)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী আপনি সঠিক দিকনির্দেশনা দিবেন।
.
জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে,

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ " . قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ قَالَ " إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ " .

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি জান, গীবত কী জিনিস? তারা বললেন, আল্লাহ ও তার রসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন, (গীবাত হলো) তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলো, আমি যা বলছি তা যদি আমার ভাই এর মধ্যে বাস্তবিকই থেকে থাকে তবে আপনি কি বলেন? তিনি বললেন, তুমি তার সম্পর্কে যা বলছ তা যদি তার মধ্যে প্রকৃতই থেকে থাকে তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। (সহীহ মুসলিম-৬৩৫৭)


https://ifatwa.info/1715 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
যে সমস্ত কারণ যাতে গিবত করা বৈধ।
أمور تباح فيها الغيبة:
الأصل في الغيبة التحريم للأدلة الثابتة في ذلك، ومع هذا فقد ذكر النووي وغيره من العلماء أمورا ستة تباح فيها الغيبة لما فيها من المصلحة؛ ولأن المجوز في ذلك غرض شرعي لا يمكن الوصول إليه إلا بها وتلك الأمور هي:
কুরআন-হাদীসের অসংখ্য দলীল প্রমাণ থাকায় গীবত মূলত হারাম।তবে ইমাম নববী রাহ সহ অনেক উলামায়ে কেরাম ছয়টি বিষয়ে গীবতের অনুমোদন দিয়ে থাকেন।বিভিন্ন মুসলিহত ও হেকমত থাকর ধরুণই উলামায়ে কেরাম মূলত এ অনুমতি দিয়ে থাকেন।শরীয়য়ত অনুমোদিত কিছু উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই রুখসত প্রদান করা হচ্ছে, কেননা গীবত ব্যতীত এই উদ্দেশ্য হাসিল হওয়া প্রায়-ই অসম্ভব।

الأول: التظلم. يجوز للمظلوم أن يتظلم إلى السلطان والقاضي وغيرهما ممن له ولاية أو له قدرة على إنصافه من ظالمه، فيذكر أن فلانا ظلمني وفعل بي كذا وأخذ لي كذا ونحو ذلك. 
(এক) জালিমের জুলুম থেকে বাঁচতে বিচারকের নিকট জালিমের বিরুদ্ধে নালিশ/গিবত করা বৈধ।যেমন মজলুম ব্যক্তি বিচারকের নিকট গিয়ে বলল,অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম-নির্যাতন করেছে।এবং আমার সাথে সে এমন এমন ব্যবহার করেছে।আমার অমুক অমুক জিনিষ সে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

الثاني: الاستعانة على تغيير المنكر ورد العاصي إلى الصواب. وبيانه أن يقول لمن يرجو قدرته على إزالة المنكر: فلان يعمل كذا فازجره عنه ونحو ذلك، ويكون مقصوده إزالة المنكر، فإن لم يقصد ذلك كان حراما.
(দুই) মন্দকে পরিবর্তন করতে এবং গোনাহগারকে নেকির দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে কারো গীবত করা।যেমন এমন কারো কাছে গিয়ে গিবত করা,যে ব্যক্তি ঐ মন্দকাজ সম্পাদনকারীকে ধমক দিতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি।শর্ত এই যে, মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যই থাকতে হবে।উদ্দেশ্য যদি অন্য কিছু হয় তখন কিন্তু গীবত করা জায়েয হবে না বরং হারাম হবে।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1715

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মা বাবা যদি আপনার স্বামীকে এসব বিষয় বুঝিয়ে তাকে ভালোর পথে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে চায়,সেক্ষেত্রে মা বাবাকে উক্ত জুলুমের কথা বলা বৈধ হবে।

(০২)
পারিবারিকভাবে মুরব্বিদের মাধ্যমে মিটিং করে আপনার স্বামীকে জুলুমের রাস্তা হতে ফিরিয়ে যেতে আহবান করবেন।

ইনশাআল্লাহ সমাধান মিলবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে জুলুম অব্যাহত থাকলে আপনি খোলা তালাক নিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...