আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
মুফতী সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন :

১. আমার বাবা গত ১২ তারিখ ইন্তেকাল করেছেন। যে কোনো সময় বাবার জন্য যদি দুয়া করতে চাই নামাযের বাইরে অজু যদি না থাকে অথবা কাপড় পাক না থাকে কোন কারনে তাহলে কি ' ইয়া আল্লাহ আপনি আমার বাবাকে মাফ করে দিন আমার বাবার কবরের আযাব মাফ করে দিন তাকে বেহেশত নসিব করুন' আমীন। এমন দুয়া কি যে কোন সময় যে কোন অবস্থায় করা যাবে?

২. কোন কিছু দান করার সময় নিয়ত কিভাবে করতে হয় যেমন আমি ১০০ টাকা দান করলাম অন্তরে যদি নিয়ত থাকে অরধেক আমার তরফ থেকে আর বাকি অরধেক মরহুম বাবার তরফ থেকে এভাবে দান করা জায় নাকি পুরাটা একজনের নামেই করতে হয়?

1 Answer

0 votes
by (73,920 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

যে কোনো নেক কাজের ঈসালে সওয়াব করা জায়েয।

,

এক. হজ্ব: হজ্বের ঈসালে সওয়াব করা জায়েয। এটা একাধিক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কিছু হাদীস এই-

 বুরায়দা রা. থেকে বর্ণিত, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এক মহিলা এসে জিজ্ঞেস করল, ...আমার মা হজ্ব না করে ইন্তেকাল করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্ব করতে পারব? তিনি বললেন, (হাঁ), তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব কর। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৪৯

,

দুই. উমরা: উমরা করেও ঈসালে সওয়াব করা জায়েয।

আবু রাযীন উকায়লী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা খুবই বৃদ্ধ। তিনি হজ্ব, উমরা এমনকি সফর করতেও সক্ষম নন। নবীজী বললেন, তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব ও উমরা করো। -সুনানে তিরমিযী, হাদীস ৯৩০

,

তিন. কুরবানী:

বিভিন্ন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, কুরবানীর ঈসালে সওয়াব করা জায়েয। এখানে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করছি।

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর জন্য কালো পা, কালো পেট ও কালো ভ্রু বিশিষ্ট দুম্বা আনার নির্দেশ দিলেন। আনা হলে তিনি আয়েশা রা.-কে বললেন, একটি ছুরি এনে পাথরে ঘষে ধারালো কর। তিনি তা-ই করলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছুরি হাতে নিয়ে দুম্বাকে শুইয়ে যবাহ করার জন্য প্রস্তুত হলেন এবং বললেন,

باسم الله، اللهم تقبل من محمد وآل محمد، ومن أمة محمد.

আল্লাহর নামে যবাহ করছি। হে আল্লাহ! আপনি তা কবুল করুন মুহাম্মদ ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে এবং তার উম্মতের পক্ষ থেকে।’ তারপর কুরবানী করলেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৬৭                                                                                    

,

চার. রোযা:  রোযার সওয়াবরেসানি করা বৈধ। নিম্নে এ সংক্রান্ত কিছু হাদীস উদ্ধৃত করা হল।

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ রোযা জিম্মায় রেখে মারা গেলে তার অভিভাবক যেন তার পক্ষ থেকে রোযা রাখে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯৫২

,

পাঁচ. নামায: নামায পড়ে মৃত ব্যক্তিকে সওয়াব পৌঁছানো জায়েয। আমরা আগে দেখেছি যে, অর্থ ও দেহের সমন্বিত ইবাদত তো বটেই রোযার মত নিখুঁত ইবাদাতে বাদানিয়ারও ঈসালে সওয়াব জায়েয। এ থেকে বোঝা যায় যে, নামাযের ঈসালে সওয়াব করাও জায়েয।

,

ছয়. কুরআন তিলাওয়াত: কুরআন তিলাওয়াতের ঈসালে সওয়াব করা জায়েয। রোযা আর কুরআন তিলাওয়াতের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। দুটোই ইবাদাতে বাদানিয়া এবং নিম্নোক্ত বর্ণনাগুলো থেকেও এর বৈধতা বোঝা যায় :

মাকিল ইবনে ইয়াসার রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের মাইয়িতের জন্য সূরা ইয়াসীন পাঠ কর। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩১২১

,

সাত. যে কোনো নেক আমল: নেক আমলের জগৎ অনেক বিস্তৃত। এগুলো কোথাও ‘আলআমালুস সালিহ’র শিরোনামে বর্ণিত হয়েছে, কোথাও ‘আলবির’র শিরোনামে, কোথাও ‘আলহাসানা’র শিরোনামে, কোথাও ‘আলখাইর’র শিরোনামে। কখনো বা বিশেষ শিরোনাম ছাড়া বর্ণিত হয়েছে। কুরআন-সুন্নাহয় যেসব নেক কাজ সুস্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর তালিকাও বেশ লম্বা।

,

আগের আলোচনা থেকে এ-ও জানা গেছে যে, উপরোক্ত নেক কাজগুলোর বাইরে আরো যে কোনো নেক কাজের ঈসালে সওয়াব করা যাবে। পেছনে এ সংক্রান্ত দলীল আলোচিত হয়েছে। এখানে শুধু ইমামদের কিছু উদ্ধৃতি উল্লেখ করা যেতে পারে।

,

আবু বকর আলখাল্লাল রাহ. ‘আলউকূফ ওয়াত তারাজ্জুল’ গ্রন্থে (পৃ. ৮৫) মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াহইয়া থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইমাম আহমদ রহ.-কে জিজ্ঞেস করেছেন, মানুষ নামায, সদকা ইত্যাদি নেক কাজ করে এর অর্ধেক সওয়াব পিতা বা সন্তানকে দান করে (এ কি তার কাছে পৌঁছবে)? উত্তরে তিনি বলেন, আশা করি। তিনি আরো বলেন, সদকা ইত্যাদি সব মাইয়িতের কাছে পৌঁছে। কপি: মাসিক আল কাউসার

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

,

১. জ্বী হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বাবার জন্য এভাবে দুআ করা জায়েজ আছে।

২. জ্বী হ্যাঁ, এভাবে দান করা জায়েজ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...