আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
25 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (17 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু
একটি মাসয়ালা জানার ছিল
মাসয়ালাটি হল:
মাদ্রাসার গোরাবা ফান্ড থেকে সরাসরি কোন হিলা অবলম্বন না করে সরাসরি উস্তাদের বোর্ডিংয়ের খাবার খরচ দেওয়া তা কতটুকু শরিয়ত সম্মত হবে ??
আর গোরাবা ফান্ড থেকে উস্তাদের জন্য খরচ করার অন্য কোনো উপায় আছে কিনা? দলিলসহ উত্তরটি পেলে উপকৃত হতাম।

1 Answer

0 votes
by (616,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/3492/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী যাকাত আদায়ের খাত সর্বমোট ৮ টি।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ 
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ [٩:٦٠]

যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। {সূরা তাওবা-৬০}

মোট ৮ ধরণের ব্যক্তিকে যাকাত ও ফিতরা দেয়ার কথা কুরআনে বর্ণিত। যথা-

১- গরীব। যার সম্পদ আছে কিন্তু নেসাব পরিমাণ মালের মালিক নয়।

২- মিসকিন। যার একদমই কোন সম্পদ নেই।

৩- ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য শরীয়ত নির্দিষ্ট যাকাত আদায়কারী আমেল। এটা ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান দ্বারা নিযুক্ত হতে হবে। নিজে নিজে মনে করে নিলে হবে না। {জাওয়াহিরুল ফিক্বহ-৬/৬৯}

৪- নব মুসলিমদের ইসলামের প্রতি মোহাব্বত বাড়ানোর জন্য উৎসাহমূলক যাকাত প্রদান।

এ বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। তাই বর্তমানে কোন ধনী নওমুসলিমকে যাকাত প্রদান জায়েজ নয়। {হিদায়া-১/১৮৪, মাআরিফুল কুরআন-৪/১৭১, তাফসীরে মাযহারী-৪/২৩৫}

৫- দাসমুক্তির জন্য। যেহেতু বর্তমানে দাসপ্রথা নেই। তাই এ খাতটি বাকি নেই।

৬- ঋণগ্রস্তের জন্য।

৭- ফী সাবিলিল্লাহ। তথা আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য। এখন প্রশ্ন হল আল্লাহর রাস্তায় কারা আছে? ফুক্বাহায়ে কেরাম বলেন এতে রয়েছেন-

জিহাদরত মুজাহিদরা। তাদের জিহাদের অস্ত্র ও পাথেয় ক্রয় করার জন্য যাকাতের টাকা গ্রহণ করবে। হজ্বের সফরে থাকা দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। ইলমে দ্বীন অর্জনকারী দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। {আদ দুররুল মুখতার-৩৪৩, হিদায়া-১/১৮৫, রূহুল মাআনী-৬/৩১৩}

৮- সফর রত ব্যক্তিকে। যার টাকা পয়সা আছে বাড়িতে। কোন সফর অবস্থায় অসহায়। তাকে যাকাতের টাকা দেয়া জায়েজ।
,
★★শরীয়তের বিধান হলো ইমাম মুয়াজ্জিনের বেতন হিসেবে যাকাতের টাকা দেওয়া জায়েয নেই।
হ্যাঁ যদি কোনো ইমাম বা মুয়াজ্জিন গরিব হয়,যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত হয়,তাহলে আর্থিক সহযোগিতা স্বরুপ তাকে যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৭/১১৬)

★হ্যাঁ যদি ইমামের বেতন আলাদা ফান্ড থেকে প্রয়োজন মোতাবেক দেওয়া হয়,এবং ইমাম যদি যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হয়,তাহলে কখনো কখনো যাকাতের টাকা দিয়ে ইমাম কে সহযোগিতা করা যাবে।
তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে যাকাতের টাকা যেনো কোনোভাবেই বেতনের অংশ হিসেবে না দেওয়া হয়।
(ফাতাওয়ায়ে উসমানী ২/১৮৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
গোরাবা ফান্ডে যেহেতু যাকাত,সদকায়ে ফিতর, কুরবানীর চামড়া সহ বিবিধ সদকায়ে ওয়াজিবার টাকা থাকে,তাই মাদ্রাসার গোরাবা ফান্ড থেকে সরাসরি কোন হিলা অবলম্বন না করে সরাসরি উস্তাদদের বোর্ডিংয়ের খাবার খরচ দেওয়া হলে ধনী উস্তাদদের জন্য সেই খাবার খাওয়া জায়েজ হবেনা।

তবে যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত উস্তাদরা সেই খাবার খেতে পারবে।

(০২)
গোরাবা ফান্ড থেকে উস্তাদদের জন্য খরচ করার উপায়ঃ-

এক্ষেত্রে গোরাবা ফান্ডের অর্থ বোর্ডিং এ পাঠানোর আগে বা অন্য কোনোভাবে উস্তাদদের জন্য খরচ করার আগে যাকাত গ্রহনের হকদারকে সেই অর্থের মালিক বানিয়ে দিতে হবে, তারপর সেই হকদার তা মাদরাসায় দিয়ে দিলেই কেবল তা ধনী উস্তাদদের জন্য  ভক্ষণ করা জায়েজ হবে।

যেমন ওয়াজিব সদকার কোন পশু আসলে, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তা কোন  হকদার ছাত্রকে মালিক বানিয়ে দিবেন। তারপর সেই ছাত্র যদি মাদরাসায় পাকিয়ে সকলকে খাওয়ানোর অনুমতি প্রদান করে,  তাহলে তা সকলের জন্য খাওয়া জায়েজ হবে। অন্যথায় সরাসরি পাকানো হলে, শুধুমাত্র যাকাতের হকদারদের জন্য খাওয়া জায়েজ হবে, অন্যদের জন্য খাওয়া জায়েজ হবে না।

হয়তো উক্ত হীলা করে নিবে। নতুবা খাওয়া থেকে বিরত থাকবে।

গোরাবা ফান্ডের টাকা দিয়ে যাকাত গ্রহনের উপযুক্তদের খানা আলাদা ও যাকাত খাওয়ার উপযুক্ত নয়, এমন ব্যক্তিদের খানা সম্পূর্ণ আলাদাভাবে পাকানোই সবচে’ উত্তম ও নিরাপদ পদ্ধতি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ فِي بَرِيرَةَ ثَلَاثُ سُنَنٍ: إِحْدَى السُّنَنِ أَنَّهَا عُتِقَتْ فَخُيِّرَتْ فِي زَوْجِهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْوَلَاءُ لِمَنْ أَعْتَقَ» . وَدَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْبُرْمَةُ تَفُورُ بِلَحْمٍ فَقُرِّبَ إِلَيْهِ خُبْزٌ وَأُدْمٌ مِنْ أُدْمِ الْبَيْتِ فَقَالَ: «أَلَمْ أَرَ بُرْمَةً فِيهَا لَحْمٌ؟» قَالُوا: بَلَى وَلَكِنَّ ذَلِكَ لَحْمٌ تُصُدِّقَ بِهِ عَلَى بَرِيرَةَ وَأَنْتَ لَا تَأْكُلُ الصَّدَقَةَ قَالَ: «هُوَ عَلَيْهَا صَدَقَةٌ وَلنَا هَدِيَّة»

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারীরাহ্ (ক্রীতদাসীর) ব্যাপারে তিনটি নির্দেশনা দেয়া হয়। (প্রথম) সে স্বাধীন হবে, তার স্বামীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক বহাল রাখা বা না রাখার ক্ষেত্রে তার স্বাধীনতা থাকবে। (দ্বিতীয়) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মীরাসের অধিকার তারই থাকবে, যে তাকে আযাদ করেছে। (তৃতীয়) [একদিন] রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে এলেন। তখন গোশত রান্না করা হচ্ছিল। ঘরে বানানো রুটি ও তরকারী তাঁর সামনে আনা হলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি একটি পাতিলে গোশত দেখলাম। বলা হলো, জি হ্যাঁ। তবে এ গোশত বারীরাকে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দেয়া হয়েছে, আপনি তো সদাক্বাহ্ (সাদাকা) খান না। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ গোশত বারীরার জন্য সদাক্বাহ্ (সাদাকা) হলে আমাদের জন্য হাদিয়্যাহ্।

(সহীহ : বুখারী ৫০৯৭, ৫২৭৯, মুসলিম ১০৭৫, নাসায়ী ৩৪৪৭, মুয়াত্ত্বা মালিক ২০৭৩, আহমাদ ২৫৪৫২, ইবনু হিব্বান ৫১১৬, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৬১২।)

وأما بقية الصدقات المفروضة والواجبة (وقوله) فلا يجوز صرفها للغنى…….. خرج النفل عنها، لأن الصدقة على الغنى هبة (البحر الرائق،  زكريا-2/427، دار الفكر-2/245، كويته-2/245)

সারমর্মঃ-
সদকায়ে মাফরুজাহ এবং সদকায়ে ওয়াজিবার টাকা ধনীদের জন্য খরচ করা জায়েজ নেই। তবে এখান থেকে নফল সদকার বিধান বের হয়ে যাবে। কেননা ধনীদের উপর সদকাহ হিবার সমতুল্য।

দারুল উলুম দেওবন্দ এর ১৫৪৬৮ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মসজিদ বা মাদ্রাসা নির্মাণে যাকাতের টাকা ব্যবহার করা জায়েজ নয়। তবে, শরিয়াহ বরাদ্দের পরে অর্থাৎ যাকে যাকাত দেয়া জায়েজ,তাকে উক্ত টাকার মালিক বানিয়ে দেয়ার পর , যাকাতের অর্থ মসজিদ বা মাদ্রাসা নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। শরীয়াহ বরাদ্দের সারাংশ হল দরিদ্র, অভাবী, অথবা অন্য যে কোনও যাকাত গ্রহীতাকে অর্থ প্রদান করা হবে এবং মালিক করা হযবে, এবং তারপর তাকে মাদ্রাসা বা মসজিদে ব্যয় করতে উৎসাহিত করা হবে। এমতাবস্থায় যদি সে স্বেচ্ছায় দান করে, তাহলে এই অর্থ মসজিদ বা মাদ্রাসা নির্মাণের জন্য ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (616,290 points)
سوال:

زکات کی رقم مسجد یا مدرسہ کی تعمیر پر لگائی جاسکتی ہے ؟ اگر ناجائز ہے تو اس رقم کو حیلہ تملیک کرکے تعمیر پر لگانا درست ہے؟ یعنی وہ رقم کسی غریب شخص کو دے کر اس سے کہا جائے کہ وہ دوبارہ مسجد یا مدرسہ کی تعمیر کو ثواب کی نیت سے دے پہلے سے طے کردینے سے اس کا ثواب باقی رہے گا حیلہ تملیک کی شرعی حیثیت کثا ہے؟ دین کی روشنی میں جواب دے کر ممنون فرمائیں۔

جواب نمبر: 15468

بسم الله الرحمن الرحيم

فتوی: 1334=1370/1430/ل

 

زکات کی رقم مسجد یا مدرسہ کی تعمیر پر لگانا جائز نہیں، البتہ تملیک شرعی کے بعد زکات کی رقم مسجد یا مدرسہ کی تعمیر میں لگائی جاسکتی ہے اور تملیک شرعی کا حاصل یہ ہے کہ فقیر مسکین یا کسی اور مصرف زکات کو وہ رقم دے کر مالک بنادیا جائے اور پھر اس کو مدرسہ یا مسجد میں خرچ کرنے کی ترغیب دی جائے اگر وہ بخوشی دیدے تو اس رقم کو مسجد یا مدرسہ کی تعمیر میں استعمال کرنے کی گنجائش ہوگی۔

واللہ تعالیٰ اعلم


دارالافتاء،
دارالعلوم دیوبند



আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...