আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (9 points)
আমি 2  বছর আগে মুসলিম হই। আমি আমার অমুসলিম পরিবারের সাথেই থাকি,,তারা জানে না,,, ,, আমি একজন মেয়ে,,, আগে আপ্রাণ চেষ্টা করতাম ইবাদত যতটুকু পারা যায়,,,করার। এখন ১ মাস ধরে আমার ডাউট আসে বার বার,,,  ইসলাম সত্য আল্লাহ সত্য ববী সত্য,,,কিন্তু ধর্মান্তরিত হওয়া টা কি ঠিক হলো! এমন,, কারন ২ বছর ধরে আমায় এমন এমব সব মানসিক কষ্ট দিয়ে যেতে হইতেছে,,, যা করেছি সব ভুল মনে হয়,,,বার বার প্রতিনিয়ত পরিবারের সন্দেহ র সাথে লড়াই করা,,,ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম,,,এখন ওই পটেনশিয়াল আর নাই। আরও কিছু ডিসিশন যেগুলো মুসলিম হওয়ার পর আমার হেল্প হবে ইমানি দিক দিয়ে এমন ভেবে নিয়েছিলাম,,,কিন্তুু এখন এই ডিসিশন গুলো প্রতিনিয়ত আমায় মানসিক কষ্টে রাখছে,,,,,,আচ্ছা আমি বলতে চাচ্ছি  ধর্মান্তরিত হওয়া ঠিক হলো কিনা এমন চিন্তার কারনে কি আমার ইমান চলে গেছে?  আমি ২ বছর হলেও তেমন কোনো ইসলামিক নলেজ ই পাইতে পারি নি,,,বাড়িতে কোনো প্রাইবেসি নেই যে অনলাইন কোনো কোর্স করবো। আমার জন্য কোনো উপদেশও  দিবেন এমন অবস্থায় কি করা উচিত হুজুর..।

1 Answer

0 votes
by (627,240 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এ ধরনের চিন্তার কারনে আপনার ঈমান চলে যায়নি। তবে ঈমানের উপর মেহনত না হওয়ায় এ ধরনের চিন্তা আপনার মনের মধ্যে আসছে।
আপনি বাসায় গোপনীয়তা রক্ষা করে আপাতত ৫ ওয়াক্ত নামাজ চালিয়ে যাবেন।
সুযোগ মোতাবেক দ্বীন সম্পর্কে জানার ও বুঝার জন্য দ্বীনী বই পড়বেন।

কুরআনের তরজমা পড়বেন।
তাফসিরে মা'আরেফুল কোরআন পড়ার পরামর্শ থাকবে। 

আম্বিয়ায়ে কেরামদের জীবনী, সাহাবায়ে কেরামদের জীবনী, উম্মাহাতুল মু'মিনীনদের জীবনী, এছাড়াও মাসয়ালা জানার জন্য আহকামে জিন্দেগী, আকামুন নিসা,বেহেশতি যেওর ইত্যাদি গ্রন্থ পড়তে পারেন।

বিবাহের পর মাহরাম পুরুষ এর মাধ্যমে চিল্লায় চলে গেলে ইনশাআল্লাহ ঈমানে অনেক উন্নতি হবে।

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, 

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ 

হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আনাস রাযি. বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা আপনার উপর এবং আপনার আনিত শিক্ষার উপর ঈমান এনেছি। এখন আপনার মনে কি আমাদের সম্পর্কে কোনো সন্দেহ আছে? ( যে বেশি বেশি এই দোয়া করেন!) রাসুল ﷺ উত্তর দিলেন হ্যাঁ! সব অন্তর আল্লাহর দুই আঙ্গুলের মধ্যে পড়ে আছে। আল্লাহ যেভাবে চান, এগুলোকে পরিবর্তন করেন। (তিরমিযি ২১৪০ তাকদির অধ্যায়)

★সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে উক্ত দোয়া বেশি বেশি করবেন।

আপনার প্রতি আমাদের উপদেশ হচ্ছে:

এক: সঠিক পথে অটল ও অবিচল থাকার জন্য সার্বক্ষণিক আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করা।

দুই: বুঝে বুঝে বেশি পরিমাণে কুরআনে কারীম তেলাওয়াত করা। বুঝে বুঝে অনুধাবন করে কুরআন পড়লে এ কুরআন মানুষের অন্তরের উপর ব্যাপক প্রভাব তৈরী করে।

তিন: আল্লাহ্র আনুগত্যের পথকে আঁকড়ে থাকার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকা। বিরক্তি ও অলসতা যেন তাকে স্পর্শ না করে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম অক্ষমতা ও অলসতা থেকে আশ্রয় চেয়েছেন।

চার: সৎসঙ্গ গ্রহণে সচেষ্ট থাকা এবং অসৎসঙ্গ থেকে দূরে থাকা।

পাঁচ: যখন নফস তার উপর কুপ্রভাব ফেলতে চাইবে তখনি নফসকে (কুপ্রবৃত্তিকে) নসীহত করা। নফস বলতে পারে: দূরত্বও তো অনেক, রাস্তা অনেক দীর্ঘ। তখন সে নফসকে নসীহত করবে এবং অবিচল থাকবে। কারণ জান্নাত কষ্টক্লেশ দিয়ে পরিবেষ্টিত। আর জাহান্নাম ভোগবিলাস দিয়ে পরিবেষ্টিত।

ছয়: খারাপ সঙ্গি থেকে দূরে থাকা। যদিও তারা ইতিপূর্বে তার বন্ধু ছিল। কেননা খারাপ সঙ্গিরা তাকে প্রভাবিত করতে পারে। 

মানুষ সঙ্গী-সাথীর কর্মকান্ড দ্বারা অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবিত হয়। এজন্য রাসূল (ছাঃ) বলেন,

الرَّجُلُ عَلَى دِيْنِ خَلِيْلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ، 

‘মানুষ তার বন্ধুর রীতিনীতির অনুসারী হয়। কাজেই তোমাদের প্রত্যেকেই যেন লক্ষ্য করে, সে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে’।
(আবূদাঊদ হা/৪৮৩৩; তিরমিযী হা/২৩৭৮; মিশকাত হা/৫০১৯; ছহীহাহ হা/৯২৭।)

সঙ্গী-সাথী তাকে অনেক ক্ষেত্রে সৎপথ থেকে বিচ্যুত করে দেয়। যা সে ইহকালে বুঝতে পারে না। অবশেষে পরকালে যখন সে বুঝতে পারবে তখন শুধু আফসোস ব্যতীত কোন উপায় থাকবে না। 

আল্লাহ বলেন,

 وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُوْلُ يَالَيْتَنِيْ اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُوْلِ سَبِيْلًا، يَاوَيْلَتَا لَيْتَنِيْ لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيْلًا، لَقَدْ أَضَلَّنِيْ عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِيْ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنْسَانِ خَذُوْلًا،

 ‘যালেম সেদিন নিজের দু’হাত কামড়ে বলবে, হায়! যদি (দুনিয়াতে) রাসূলের পথ অবলম্বন করতাম। হায় দুর্ভোগ আমার! যদি আমি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। আমার কাছে উপদেশ (কুরআন) আসার পর সে আমাকে পথভ্রষ্ট করেছিল। বস্ত্ততঃ শয়তান মানুষের জন্য পথভ্রষ্টকারী’ (ফুরক্বান ২৫/২৭-২৯)।

অসৎ বন্ধুর খারাপ পরিণতি সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন, 

مَثَلُ الْجَلِيسِ الصَّالِحِ وَالسَّوْءِ كَحَامِلِ الْمِسْكِ وَنَافِخِ الْكِيرِ، فَحَامِلُ الْمِسْكِ إِمَّا أَنْ يُحْذِيَكَ، وَإِمَّا أَنْ تَبْتَاعَ مِنْهُ، وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ مِنْهُ رِيحًا طَيِّبَةً، وَنَافِخُ الْكِيرِ إِمَّا أَنْ يُحْرِقَ ثِيَابَكَ، وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ رِيحًا خَبِيثَةً. 

‘সৎসঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত হ’ল, কস্ত্তরীওয়ালা ও কামারের হাপরের ন্যায়। কস্ত্তরীওয়ালা হয়তো তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তার নিকট হ’তে তুমি কিছু খরিদ করবে কিংবা তার নিকট হ’তে তুমি সুবাস পাবে। আর কামারের হাপর হয়তো তোমার কাপড় পুড়িয়ে দিবে কিংবা তুমি তার নিকট হ’তে দুর্গন্ধ পাবে’।
(বুখারী হা/৫৫৩৪, ২১০১; মুসলিম হা/২৬২৮; মিশকাত হা/৫০১০।)

★পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে আপনার মাতা পিতার হেদায়াতের জন্য দোয়া করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...