আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
https://ifatwa.info/118519/

আসসালামু আলাইকুম
১।।।।এই পোষ্ট বলছিলেন যিহার হয়েছে।। আমার স্বামী আমার কথা বিশ্বাস করেনি তা সে  জামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসা থেকে ফতোয়া নিয়েছে।।ওনারা বলছে যে স্বামী যেহেতু  সম্পকে জানে না, বা মাহরাম কারো সাথে সম্পর্ক হারাম করার  উদ্দেশ্য বলে,, কথার কথায় বলেছে নি তাই যিহার হয় নি।।।

এইন হুজুর প্রশ্ন হলো সে ওই হুজুরের কথা মেনে কাফফার আদায় করে নি।।তাই এখন যদি আমি আমার স্বামীকে না জানিয়ে ৬০ জন মিসকিনকে ১১৫ টাকা করে দিয়ে দেই তাহলে কি কাফফার আদায় হবে।।।আর  ৬০ জন যদি না পাই তাহলে একি ব্যক্তিকে যদি ১ দিন পর পর তাকে ২_ ৩ বার দেওয়া হলে এরকম কয়েকজনকে দিলে কি কাফফারা আদায় হবে।।।

২।।।।আর আমার  স্বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী  বিভিন্ন সময়  কেনায়া কথা নিয়ে আমার খুব অস্খির লাগে।।সে বলে তালাকের নিয়তে বলে নি।।তাও আমি সন্দেহের ভিত্তিতে যদি কাফফারা আদায়ের আগে তাকে  বিয়ে করি তাহলে কি বিয়েটা সহিহ হবে।।।সন্দেহে থেকে বিয়েটা দোহরানো।।।

1 Answer

0 votes
by (634,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের পরিভাষায় যিহার’বলা হয় নিজের স্ত্রীর কোনো অঙ্গ কে ‘মা’ অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার এমন কোনো অঙ্গ যেটা দেখা হারাম,এমন অঙ্গের সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করে  (যেমনঃপৃষ্ঠদেশের সমতুল্যবলে আখ্যায়িত করে) তাহাকে আরবীতে ‘যিহার’ বলা হয়।
এতে তার নিয়ত যাই থাকুক না কেনো,
যিহার হয়ে যাবে।
উদাহরণঃ স্বামী স্ত্রীকে বলবে, তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের সমতুল্য। আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম। তোমার শরীরের এক চতুর্থ অংশ আমার জন্য আমার ধাত্রীমায়ের মত হারাম ইত্যাদি। 

আর যদি স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন মহিলার কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা না করে এই ভাবে বলে যে তুমি আমার তার (মা বা অন্য কেউ) মতো,তাহলে তার নিয়ত দেখতে হবে।
যদি সে  মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে  উদ্দেশ্য নেয়,তাহলে কোনো কিছুই হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।
(নাজমুল ফাতওয়া ৬/৩১৭)
,
আর যিহার করলে কাফফারা আদায় ব্যতীত স্বামীর জন্য স্ত্রীকে স্পর্শ করা বা তার সঙ্গে একত্রে সংসার করা হারাম।

যিহার করলে কাফ্ফারা আদায় করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَالَّذِيْنَ يُظٰهِرُوْنَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُوْدُوْنَ لِمَا قَالُوْا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مِّنْ قَبْلِ أَن يَّتَمَاسَّا ذٰلِكُمْ تُوْعَظُوْنَ بِهِ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ"(سورۃ المجادلۃ:۲،۳،۴)

“যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।

আরো জানুনঃ  

★মাহরামের যেসব অঙ্গ দেখা জায়েজ,স্ত্রীর অঙ্গকে মাহরামের সেসব অঙ্গের সাথে সাদৃশ্যতা দিলে যিহার হবেনা।

মহিলাদের স্তন মাহরামের সামনে সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়,তাই এক্ষেত্রে যিহার হবেনা।

الظِّهَارُ هُوَ تَشْبِيهُ الزَّوْجَةِ أَوْ جُزْءٍ مِنْهَا شَائِعٍ أَوْ مُعَبَّرٍ بِهِ عَنْ الْكُلِّ بِمَا لَا يَحِلُّ النَّظَرُ إلَيْهِ مِنْ الْمُحَرَّمَةِ عَلَى التَّأْبِيدِ وَلَوْ بِرَضَاعٍ أَوْ صِهْرِيَّةٍ كَذَا فِي فَتْحِ الْقَدِيرِ سَوَاءٌ كَانَتْ الزَّوْجَةُ حُرَّةً أَوْ أَمَةً أَوْ مُكَاتَبَةً أَوْ مُدَبَّرَةً أَوْ أُمَّ وَلَدٍ أَوْ كِتَابِيَّةً

স্ত্রীকে মাহরামে আবদি যেমন মা,বোন ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গের উল্লেখযোগ্য কোনো অঙ্গের দিকে বা এমন কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা করা যেই অঙ্গের দিকে তাকানো হারাম।মাহরামে আবদি দুধ সম্পর্কের কারণে হোক বা বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে হোক। এবং স্ত্রী চায় আযাদ হোক বা বাদি হোক কিংবা মুকাতাব বা উম্মে ওলাদ হোক।জিহার হবে।ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৫০৬)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/60982

رد المحتار: (کتاب الصلاة، مطلب في ستر العورة، 405/1)
إن الصدر وما قابلہ من الخلف لیس من العورة وأن الثدی أیضا غیر عورة وسیأتی فی الحظر والإباحة أنہ یجوز أن ینظر من أمة غیرہ ما ینظر من محرمہ، ولا شبہة أنہ یجوز النظر إلی صدر محرمہ وثدیہا، فلا یکون عورة منہا ولا من الأمة۔

বুক এবং পিছন দিক থেকে এর বিপরীত অংশ আওরার অংশ নয় এবং স্তনও আওরার অংশ নয়।  একজন পুরুষের জন্য তার মাহরাম মহিলার বুক এবং স্তনের দিকে তাকানো জায়েয, তাই এটি তার বা দাসীর আওরাতের অংশ নয়।

و فیہ ایضاً: (کتاب الحظر و الإباحة، فصل في النظر و المسّ، 367/6)
ومن محرمہ ۔۔۔ إلی الرأس والوجہ، والصدر والساق والعضدین أمن شہوتہ وشہوتہا أیضًا- وإلا لا-

আর তার হারাম জিনিস থেকে... মাথা, মুখ, বুক, পা এবং বাহু পর্যন্ত, যখন উভয়ে শাহওয়াত ও কামনা থেকে নিরাপদ থাকে- অন্যথায় নয়।

وفي بدائع الصنائع : وأما ثدي الحرة فيجوز لمحارمها النظر إليه

আযাদ নারীর স্তনের দিকে তার মাহরাম নজর দিতে পারবে।

وَمِنْهَا أَنْ يَكُونَ عُضْوًا لَا يَحِلُّ لَهُ النَّظَرُ إلَيْهِ مِنْ الظَّهْرِ وَالْبَطْنِ وَالْفَخِذِ وَالْفَرْجِ حَتَّى لَوْ شَبَّهَهَا بِرَأْسِ أُمِّهِ أَوْ بِوَجْهِهَا أَوْ يَدِهَا أَوْ رِجْلِهَا لَا يَصِيرُ مُظَاهِرًا؛ لِأَنَّ هَذِهِ الْأَعْضَاءَ مِنْ أُمِّهِ يَحِلُّ لَهُ النَّظَرُ إلَيْهَا. (بدائع الصنائع، كتاب الظهار، فَصْلٌ فِي بَيَان الشَّرَائِط الَّتِي تُرْجَعُ إلَى الْمُظَاهَرِ بِهِ-3\233، دار الكتب العلمية)

এর মধ্যে রয়েছে যে, এটি এমন একটি অঙ্গ যা তার জন্য দেখা জায়েজ নয়, যেমন পিঠ, পেট, উরু, অথবা যোনি। সে যদি তার স্ত্রীএক তার মায়ের মাথা, মুখ, হাত বা পায়ের সাথে তুলনা করে, তাহলে সে যিহারকারী ব্যক্তিতে পরিণত হবে না। যেহেতু তার মায়ের এসব অঙ্গ তার জন্য দেখা জায়েজ,তাই এতে যিহার হবেনা।

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে আছে,
وأما نظره إلى ذوات محارمه فنقول: يباح له أن ينظر منها إلى موضع زينتها الظاهرة والباطنة وهي الرأس والشعر والعنق والصدر والأذن والعضد والساعد والكف والساق والرجل والوجه،

যৌন উত্তেজিত হওয়ার আশংকা না থাকলে পুরুষ তার মাহরামে আবদিয়্যাহ মহিলার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সৌন্দর্যময় স্থানের দিকে দৃষ্টি দিতে পারবে। সে স্থানগুলো হল- মাথা, চুল,গর্দনা,বুক,কান,বাহু,হাতের কবজি,পায়ের গোড়ালি,পা ও চেহারা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে যিহার হবেনা।
সুতরাং কাফফারা আবশ্যক হবেনা।

(০২)
এক্ষেত্রে তালাক হবেনা,তাই বিবাহ দোহরানোর কোনো আবশ্যকীয়তা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (8 points)
edited by
আপনি বলছেন যিহার হয়নি।।

https://ifatwa.info/118519/ কিন্তু এই লিংকে ইমদাদুল হুজুর বলেছিল যেহেতু নানীর স্তনের সাথে তুলনা করেছে তাই জিহার হবে।।। লিংকে দেওয়া  ফতোয়াটা কি তাহলে ভুল।।

জামীয়া আল ইউনুসিয়া মাদ্রাসা থেকেও বলা হয়েছে জিহার হয়নি।।

তবে আমার স্বামী কথাটা বলার সময় জিহার কি তা জানতো না,,,আমার মেয়েক দুধ খাওয়ানোর সময় আমার  স্তন  আমার স্বামী দেখে হঠাৎ বলে ফেলছিল  তোমার দুধ গুলা আমার নানাীর দুধের মত হুডা (হুডা মানে জমে জমে যাওয়া) হয়ে গেছে।।এতটুকুই বলছিল।। এসব বললে যে কিছু হবে সে সেটাও জানতো না।আর হারাম করার উদ্দেশ্য ও নাকি বলেনি

তাহলে আমি কোনটা মানবো
by (634,530 points)
এখানে যতগুলো দলিল দেওয়া হয়েছে সমস্ত দলিলের আলোকে এটি প্রমাণিত হয় যে প্রশ্ন উল্লেখিত ছুরতে যিহার হয়নি।


আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...