আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
314 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (39 points)
যদিও ইতিপূর্বে প্রশ্নটি করেছিলাম।কিন্তু তখন বিষয়টি ক্লিয়ার করা হয় নি।

ধর্ম নিরপেক্ষতার শাব্দিক অর্থ হলো, ‘কোনো ধর্মের পক্ষ অবলম্বন না করা’।রাষ্ট্র এবং ধর্ম আলাদা।ধর্ম থাকবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের গণ্ডির মধ্যেই।এর বাইরে ধর্মীয় কোনো বিধান থাকলে রাষ্ট্রীয় বিধানকেই প্রাধান্য দিতে হবে।ধর্ম কিছু আচার-কালচারে সীমাবদ্ধ থাকবে, রাষ্ট্র চলবে মানবরচিত বিধান(যা পরিবর্তনশীল) দ্বারা।এরূপ রাষ্ট্র যদিও সব ধর্মের অধিকার রক্ষার কথা বলে যদিও তা স্ববিরোধী একটা আইন।যেমন কাদিয়ানিদের অধিকার রক্ষা করলে ইসলামের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়,ইসলামের অধিকার রক্ষা করলে কাদিয়ানিদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়।তাছাড়া ধর্ম নিরপেক্ষতার জায়গায় এর আগে ইসলামই ছিলো।অর্থাৎ তারা ইসলামের অধিকার ক্ষুণ্ন করে।

স্ববিরোধী হওয়া স্বত্বেও এরূপ রাষ্ট্র তার নীতি রক্ষায় সচেষ্ট।কেউ এটি উৎখাত করতে চাইলে তারা বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।

আমাদের দেশে প্রচলিত যেসব সেক্যুলার(ধর্ম নিরপেক্ষ) দল আছে,তাদেরকে অনেকেই দলগতভাবে তাকফির করে।অর্থাৎ তাদের মধ্যে মুমিনও থাকতে পারে।কিন্তু যারা এই নীতিতে দৃঢ় তারা কাফের।প্রশ্ন হলো এই ফতোয়া কি সঠিক?

1 Answer

0 votes
by (712,400 points)

https://www.ifatwa.info/11844 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
সেক্যুলারিজমঃ
মূলত ধর্মহীনতাকে বাজারজাত করার জন্য ধর্মনিরপেক্ষতাকে প্রচার করা হচ্ছে।সুতরা ধর্মহীনতা ইসলামে নেই।তবে ধর্মনিরপেক্ষতা ইসলামে রয়েছে।তথা কোথাও ইসলামি শাসন চলা অবস্থায় বিজাতীয়রা ও তাদের ধর্মকে নিরাপত্তার সাথে পালন করতে পারবে।

আল্লাহ তা’আলা বলেন,
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ
বলুন, হে কাফেরকূল,
لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর।
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
এবং তোমরাও এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি
وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ
এবং আমি এবাদতকারী নই, যার এবাদত তোমরা কর।
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি।
لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ
তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।(সূরা কাফিরুন)

আল্লাহ তা’আলা অন্যত্র বলেন,
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ
বলুন, তিনি আল্লাহ, এক,
اللَّهُ الصَّمَدُ
আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি
وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।(সূরা ইখলাছ)

এ সম্পর্কে দু-একটি আয়াত লক্ষণীয় যেমনঃ-
ﻭَﻣَﻦ ﻟَّﻢْ ﻳَﺤْﻜُﻢ ﺑِﻤَﺎ ﺃَﻧﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮُﻭﻥ
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।(সূরা মায়েদাঃআয়াতঃ৪৪)

ﻭَﻣَﻦ ﻟَّﻢْ ﻳَﺤْﻜُﻢ ﺑِﻤَﺎ ﺃﻧﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤُﻮﻥَ
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না তারাই জালেম।(সূরা মায়েদাঃআয়াতঃ৪৫)

ﻭَﺃَﻥِ ﺍﺣْﻜُﻢ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢ ﺑِﻤَﺂ ﺃَﻧﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻭَﻻَ ﺗَﺘَّﺒِﻊْ ﺃَﻫْﻮَﺍﺀﻫُﻢْ ﻭَﺍﺣْﺬَﺭْﻫُﻢْ ﺃَﻥ ﻳَﻔْﺘِﻨُﻮﻙَ ﻋَﻦ ﺑَﻌْﺾِ ﻣَﺎ ﺃَﻧﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﺇِﻟَﻴْﻚَ
আর আমি আদেশ করছি যে, আপনি তাদের পারস্পরিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তদনুযায়ী ফয়সালা করুন; তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না এবং তাদের থেকে সতর্ক থাকুন-যেন তারা আপনাকে এমন কোন নির্দেশ থেকে বিচ্যুত না করে, যা আল্লাহ আপনার প্রতি নাযিল করেছেন।(সূরা মায়েদাঃআয়াতঃ৪৯)

 ﻭَﻣَﻦ ﻟَّﻢْ ﻳَﺤْﻜُﻢ ﺑِﻤَﺎ ﺃَﻧﺰَﻝَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻔَﺎﺳِﻘُﻮﻥَ
যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী।(সূরা মায়েদাঃআয়াতঃ৪)

অর্থাৎ যারা আল্লাহর আইনকে অস্বীকার করবে,তারা কাফির। আর আল্লাহর আইনকে অস্বীকার না করলে সে হয়তো জালিম বা ফাসিক হবে। বিস্তারিত জানতে নিকটস্থ কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন। জাযাকাল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ একটি নতুন মতবাদ। এটি একটি ভ্রান্ত আন্দোলন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে- রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে আলাদা করা, দুনিয়া ও দুনিয়ার মজা নিয়ে মেতে থাকা। আখেরাতকে ভুলে গিয়ে, অথবা আখেরাতকে উপেক্ষা করে পার্থিব জীবনকে মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা। পরকালের আমলের প্রতি বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করা ও গুরুত্ব না দেয়া। ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ব্যক্তির ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লামের এ হাদিসটি হুবহু মিলে যায়- “দিনার ও দিরহামের পূজারি ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক কারুকাজের পোশাক ও মখমলের বিলাসী। যদি তাকে কিছু দেওয়া হয় সন্তুষ্ট থাকে; আর না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়। সে মুখ থুবড়ে পড়ুক অথবা মাথা থুবড়ে পড়ুক। সে কাটা বিদ্ধ হলে কেউ তা তুলতে না পারুক।”[সহিহ বুখারি (২৮৮৭]

উল্লেখিত বিশেষণের মধ্যে এমন ব্যক্তিরাও পড়বে যারা ইসলামের কোন একটি কথা বা কাজকে সমালোচনার পাত্র বানায়। যে ব্যক্তি ইসলামী শরিয়াকে বাদ দিয়ে মানবরচিত আইনে শাসন পরিচালনা করে সেই ধর্মনিরপেক্ষ। যে ব্যক্তি ইসলামে নিষিদ্ধ বিষয় যেমন- ব্যভিচার, মদ, গান-বাজনা, সুদী কারবার ইত্যাদিকে বৈধ বিবেচনা করে এবং বিশ্বাস করে যে, এগুলো থেকে বারণ করা মানুষের জন্য ক্ষতিকর ও ব্যক্তিগত স্বার্থে বাধা দেয়ার নামান্তর সে ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষ। যে ব্যক্তি শরয়ি দণ্ডবিধি যেমন- হত্যার শাস্তি, পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুর শাস্তি, ব্যভিচারী ও মদ্যপের উপর বেত্রাঘাতের শাস্তি, চোর ও ডাকাতের হাত কাটার শাস্তি কায়েমে বাধা দেয় অথবা অসম্মতি প্রকাশ করে, অথবা দাবী করে এসব দণ্ডবিধি যুগপোযুগী নয়, এগুলো নিষ্ঠুর ও জঘন্য তাহলে বুঝতে হবে সে ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষ।

তাদের ব্যাপারে ইসলামের হুকুম হচ্ছে: আল্লাহ তাআলা ইহুদীদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন: “তবে কি তোমরা কিতাবের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দুর্গতি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই।” [সূরা বাকারা, আয়াত: ৮৫]

সুতরাং যে ব্যক্তি যে বিধানগুলো তার মনঃপুত হয় যেমন পারিবারিক আইন, কিছু কিছু ইবাদত সেগুলো মানে আর যেগুলো তার মনঃপুত হয় না সেগুলো প্রত্যাখ্যান করে সেও এ আয়াতের বিধানের মধ্যে পড়বে। একই প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা আরো বলেন: “যে ব্যক্তি পার্থিবজীবন ও তার চাকচিক্যই কামনা করে, আমি দুনিয়াতেই তাদেরকে তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং এতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হবে না। এরাই হল সেসব লোক আখেরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া কিছু নেই।” [সূরা হুদ, আয়াত: ১৫-১৬]

ধর্মনিরপেক্ষাবাদীদের টার্গেট হলো- দুনিয়া কামাই করা, দুনিয়ার মজা উপভোগ করা। এমনকি ইসলামে সেটা হারাম হলেও, কোন ফরজ ইবাদত পালনে প্রতিবন্ধক হলেও। তাই তারা এ আয়াতের হুমকির অধীনে পড়বে এবং এই আয়াতের অধীনেও পড়বে “যে কেউ ইহকাল কামনা করে, আমি সেসব লোককে যা ইচ্ছা অতিসত্ত্বর দিয়ে দেই। অতঃপর তাদের জন্যে জাহান্নাম নির্ধারণ করি। ওরা তাতে নিন্দিত-বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে।”[সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ১৮] এ অর্থবোধক অন্যান্য আয়াত ও হাদিসগুলো তাদের ব্যাপারে প্রযোজ্য হবে।

আল্লাহই ভাল জানেন।

by
মুফতী ইমদাদুল হক তো স্ববিরোধী বক্তব্য দিলেন - https://ifatwa.info/14122/

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...