আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
988 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
edited by
রাতে ঘুমানোর সময় কি ডিম লাইট (অল্প আলোর বাতি) জালায় রাখা যাবে?
যেমন ভয় না পাওয়ার জন্য জালায় রাখা বা রাতে বৃদ্ধ মানুষ উঠলে যাতে ঝাপসা দেখতে পায় সেজন্য জালিয়ে রাখা জায়েজ?
হাদিসে নাকি আছে লাইট নিভায়ে ঘুমাইতে বলার কথা। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে কি মৃদু আলোর লাইট জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (713,840 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। 
 عن جابر رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ( أَطْفِئُوا الْمَصَابِيحَ إِذَا رَقَدْتُمْ وَغَلِّقُوا الْأَبْوَابَ وَأَوْكُوا الْأَسْقِيَةَ وَخَمِّرُوا الطَّعَامَ وَالشَّرَابَ )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন ঘুমাবে তখন বাতি নিভিয়ে দেবে, দরজাগুলো বন্ধ করবে, মশকের মুখ বন্ধ করবে, খাদ্য ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে।সহীহ বোখারী-শামেলা-৫৬২৪, [৩২৮০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫২১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১০৯) সহীহ মুসলিম-২০২১ 

আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। 
 عَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : " احْتَرَقَ بَيْتٌ بِالْمَدِينَةِ عَلَى أَهْلِهِ مِنْ اللَّيْلِ فَحُدِّثَ بِشَأْنِهِمْ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( إِنَّ هَذِهِ النَّارَ إِنَّمَا هِيَ عَدُوٌّ لَكُمْ فَإِذَا نِمْتُمْ فَأَطْفِئُوهَا عَنْكُمْ ) .
তিনি বলেন, একবার রাত্রি কালে মদিনার এক ঘরে আগুন লেগে ঘরের লোকজনসহ পুড়ে গেল। এদের অবস্থা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবহিত করা হল। তিনি বললেনঃ এ আগুন নিঃসন্দেহে তোমাদের চরম শত্রু। সুতরাং তোমরা যখন ঘুমাতে যাবে, তখন তা নিভিয়ে দিবে।সহীহ বোখারী-শামেলা-৬২৯৪ [মুসলিম ৩৬/১২, হাঃ ১৬, আহমাদ ১৯৫৮৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৪৪)

 ইমাম কুরতুবী রাহ বলেন, 
قَالَ الْقُرْطُبِيّ : " فِي هَذِهِ الْأَحَادِيث أَنَّ الْوَاحِد إِذَا بَاتَ بِبَيْتٍ لَيْسَ فِيهِ غَيْره وَفِيهِ نَار فَعَلَيْهِ أَنْ يُطْفِئهَا قَبْل نَوْمه أَوْ يَفْعَل بِهَا مَا يُؤْمَن مَعَهُ الِاحْتِرَاق " 
যদি কেউ কোনো এক ঘরে থাকে, যেখানে অন্য কেউ না থাকে, এবং সেই ঘরে আগুন থাকে, তাহলে তার উপর ওয়াজিব ঘুমানোর পূর্বে ঐ আগুনকে নিভিয়ে দেয়া। অথবা এমন কোনো ব্যবস্থা করা যাতে আগুন থেকে নিরাপদ থাকা যায়।( ফাতহুল বারী-১১/৮৬)
 
ঘুমানো পূর্বে বাতি নিভানো জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে মুস্তাহাব। 
جاء في الموسوعة الفقهية (3/323) " يُسْتَحَبُّ عِنْدَ جُمْهُورِ الْفُقَهَاءِ إِطْفَاءُ الْمِصْبَاحِ عِنْدَ النَّوْمِ ، خَوْفًا مِنَ الْحَرِيقِ الْمُحْتَمَل بِالْغَفْلَةِ ، فَإِنْ وُجِدَتِ الْغَفْلَةُ حَصَل النَّهْيُ ، وَقَدْ وَرَدَتْ أَحَادِيثُ كَثِيرَةٌ لِلرَّسُول صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَدُل عَلَى هَذَا " انتهى .
আগুন লেগে যেতে পারে,সেই সন্দেহের দরুণ ঘুমানো পূর্বে বাতি নিভানো জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে মুস্তাহাব। যদি কোথাও এভাবে অনিরাপদ পরিবেশের দরুণ আগুন লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তখন বাতি নিভানো ওয়াজিব। রাসূলূল্লাহ সা. এর হাদীস সমূহ দ্বারা এমনটাই বুঝা যাচ্ছে।( আল- মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ- ৩/৩২৩)

ইবনে হাজার আসকালানি রাহ বলেন,
" قَالَ اِبْن دَقِيق الْعِيد : إِذَا كَانَتْ الْعِلَّة فِي إِطْفَاء السِّرَاج الْحَذَر مِنْ جَرّ الْفُوَيْسِقَة الْفَتِيلَة ، فَمُقْتَضَاهُ أَنَّ السِّرَاج إِذَا كَانَ عَلَى هَيْئَة لَا تَصِل إِلَيْهَا الْفَأْرَة : لَا يُمْنَع إِيقَاده , كَمَا لَوْ كَانَ عَلَى مَنَارَة مِنْ نُحَاس أَمْلَس لَا يُمْكِن الْفَأْرَة الصُّعُود إِلَيْهِ , أَوْ يَكُون مَكَانه بَعِيدًا عَنْ مَوْضِع يُمْكِنهَا أَنْ تَثِب مِنْهُ إِلَى السِّرَاج .
إلى أن قَالَ : فَإِذَا اِسْتَوْثَقَ بِحَيْثُ يُؤْمَن مَعَهُ – يعني السراج - الْإِحْرَاق ، فَيَزُول الْحُكْم بِزَوَالِ عِلَّته " انتهى
মর্মার্থ-ইবনে বাতি নিভানোর আদেশ মুস্তাহব পর্যায়ের। (ফাতহুল বারি-১১/৮৭)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাদীসে যে বাতি জালানোর নিষেধ এসেছে, সেটা মূলত মুস্তাহাব পর্যায়ের বিধান। সুতরাং প্রয়োজনে রাতে বাতি জালানো যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (713,840 points)
+1
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...