আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
edited ago by
আসসালামু আলাইকুম,

আমি অনেক বিপদের মাঝে আছি। একটু পরামর্শের দরকার। অনেকদিন ধরে খেয়াল করতেছি কোনো কাজেই ভাগ্য সুপ্রসন্ন হচ্ছে না। আমি দেশের বাইরে লেখাপড়ার জন্য এসেছি। ৩ বছর আগে আমার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট থাকা অবস্থায় একটা গাড়ি কিনি জুরুরি ভিত্তিতে। কারন আমি যেখানে থাকি এখানে গনপরিবহন/রিকশা নাই। কমিউনিটির মানুষদের রিকুয়েষ্ট করে বউকে ডাক্তারের কাছে নেওয়া লাগে তাদের গাড়িতে/ বাজারে জায়তে গেলেও। এসব কারনে গাড়ীটি কেনা। আমি অনেক ধার দেনা করে গাড়ি টা কিনি। আলহামদুলিল্লাহ ২ বছর পড়ে ধার শোধ করতে পেরেছি। কিন্তু গাড়ি রাখা অনেক খরচের এখানে। আমি আর পারছি না আমার স্বল্প ইনকাম দিয়ে। ঋন থেকে বের হতে পারছি না। এখন ডিসিশন নিছি গাড়ি টা বিক্রি করবো। ২/৩ জন কাস্টমার গাড়ি কিনবে বলে এসে সব ঠিকঠাক নিবে। কিন্তু একদম শেষ মুহুর্তে আর কেনে না৷ একজন সব দাম ঠিক করে, পরের দিন বলে অসুস্থ আসবে না।কয়েকমাস ধরে দেখতেছি আর কোনো কাষ্টমার পাচ্ছি না।

আরেক ঘটনা,  ১ বছর আগে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি (গ্রিন কার্ড) এর জন্য এপ্লাই করি অনেক টাকা দিয়ে। আমার মত প্রোফাইল নিয়ে আাশেপাশের ভাইদের সব এপ্রুভাল হয়ে গেছে। আমার টা হয় নাই। আমি খেয়াল করেছি আমার প্রোফাইল তাদের থেকে ভাল। তাও ভাগ্যে হচ্ছেনা।
আমি মুটামুটি অনেক সময় ব্যয় করি পড়ালেখা / রিসার্চের জন্য, কিন্তু কোনো আউটপুট নাই। আমার থেকে কম পরিশ্রম করে আমার অন্য সাথীরা অনেক পেপার পাবলিশ করতেছে বিভিন্ন জার্নালে।
আরও ছোটো ছোটো ঘটনা, কোনো টাতেই আমি আমার আশানুরূপ ফল পায় না। সব সময় আমার বিপরীত জিনিস হয়। ১ বছর আগে ঝড়ের রাতে আমার গাড়ির সামনের গ্লাসের উপর ডাল ভেঙে পড়ে পুরা গ্লাস সহ, গাড়ীর কিছু বডি ডেমেজ হয়ে যায়। অনেক টাকা দিয়ে ওইটা ঠিক করেছি। আমি বুঝলাম না, এত গাড়ি থাকতে আমার সাথেই কেন। আর কারও তো কিছু হয় নি।

আমি বুঝতেছি না। আল্লাহ কি আমাকে শাস্তি দিচ্ছে নাকি পরীক্ষা নিচ্ছে। নাকি আমি বদ নজর/জাদুটোনার ভুক্ত ভোগী। আমি কিছুই জানি না।  আমি খুবই ডিপ্রেশন এ আছি। গাড়ীটা বিক্রি হলে অনেক লোন শোধ হতো।

হুজুর আামাকে পরামর্শ দিন। কি করা উচিত। রুকাইয়া/মাসনুন দোআ/আমল ইত্যাদি?
আমি পাচ ওয়াক্ত নামাজে পা বন্দী রাখার সর্বদা চেষ্টা রাখি। কিন্তু আমি বুঝতেছি না, কি কারনে আমার সাথে এসব হচ্ছে। প্লিজ হজুর আপনার পরামর্শ চাই।

1 Answer

0 votes
ago by (652,980 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


যাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। এর পদ্ধতি হচ্ছে- যাদুতে আক্রান্ত রোগীর উপর অথবা কোন একটি পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা আরাফ, সূরা ইউনুস, সূরা ত্বহা এর যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো পড়বে। এগুলোর সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে এবং রোগীর জন্য দোয়া করবে। 

বিশেষতঃ যে দুআটি রাসূলুল্লাহ ﷺ  থেকে সাব্যস্ত হয়েছে:
اللَّهُمَّ ربَّ النَّاسِ، أَذْهِب الْبَأسَ، واشْفِ، أَنْتَ الشَّافي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفاءً لاَ يُغَادِرُ سقَماً
(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)
জিব্রাইল আ. নবী ﷺ-কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন সেটাও পড়া যেতে পারে। 

সে দুআটি হচ্ছে-
بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ , مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنٍ أَوْ حَاسِدٍ , اللَّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
(অর্থ- আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।)

এই দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন।
আলেমগণ বলেছেন, এ দোয়াগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি সে পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে প্রয়োজনমত একবার বা একাধিক বার গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে।

https://www.ifatwa.info/10103 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছেঃ- 
সর্বপ্রথম পরামর্শ দিবো,ভালো কোনো বিশুদ্ধ আকিদার মুদাব্বিরের শরণাপন্ন হওয়ার।মুদাব্বির মানে যিনি কুরআন হাদীস থেকে সেহেরের চিকিৎসা করে থাকেন।যাকে রুকইয়ায়ে শরঈয়্যাহ বলা হয়।
তাছাড়া আপনাকে ঘরোয়া ভাবে কিছু রুকইয়ার পরমার্শ দিচ্ছি,
(১)সকল প্রকার ফরয ওয়াজিব ইবাদত যত্নসহকারে পালন করা।এবং সকল প্রকার হারাম ও নাজায়ে কাজ হতে বেঁচে থাকে।
(২) অধিক পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা।
(৩)দু'আ, জায়েয তাবীয ও যিকিরের মাধ্যমে নিজেকে হেফাজতের চেষ্টা করা।

নিম্নোক্ত দু'আকে সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে পড়া।
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ،
দেখুন-http://ifatwa.info/1093
প্রত্যক নামাযের পর ঘুমাইবার সময় এবং সকাল সন্ধ্যা আয়াতুল কুরসী পড়া।এবং ঘুমাইবার সময় ও সকাল সন্ধ্যা তিনবার করে সূরা নাস,সূরা ফালাক্ব ও সূরা ইখলাস তিনবার করে পড়া।এবং প্রতিদিন নিম্নোক্ত দু'আটি একশতবার করে পড়া।
لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيئ قدير،

প্রতিদিন সকাল সাতটা করে খেজুর খাওয়া।মদিনার খেজুর হলে ভালো।https://www.ifatwa.info/1816
(এলাজে কুরআনী-০৩)

★উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো জাদু ও জ্বীনের আসর উভয় বিষয়েই কার্যকর হবে ইনশা'আল্লাহ।

https://ifatwa.info/20919/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
কুরআন সুন্নাহের আলোকে শরীর বা ঘর বন্ধ করার নিয়ম হল, চার কুল ও সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত এবং সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়ে শরীর বা ঘরের দরজাসমূহে ফু দেওয়া। বিশেষ করে সূলা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে ফু দেওয়া। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا الْمُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ ثُمَّ نَفَثَ فِيْهِمَا فَقَرَأَ فِيْهِمَا(قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ)وَ (قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ) وَ (قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ) ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ

‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, প্রতি রাতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে সূরাহ ইখ্লাস, সূরাহ ফালাক ও সূরাহ নাস পাঠ করে দু’হাত একত্র করে হাতে ফুঁক দিয়ে যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে আরম্ভ করে তাঁর দেহের সম্মুখ ভাগের উপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার এরূপ করতেন। 
[বুখারী শরীফ ৫০১৭.৫৭৪৮, ৬৩১৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৪৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রেখে উপরে উল্লেখিত আমল গুলি নিয়মিত করুন,ইনশাআল্লাহ কেউ জাদু করে থাকলে বা নজর দিয়ে থাকলে সমাধান মিলবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...