আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
অফিস কর্তৃক কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমার সুবিধা নেয়া প্রসঙ্গে
১) আমাদের অফিস তার কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা প্রদান করে থাকে। এই সুবিধা নেয়া কর্মচারীদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। কেউ চাইলে এই সুবিধা নাও নিতে পারে। আর যদি নিতে চায় তাহলে একটা ফর্ম পূরণ করে কোম্পানির কাছে জমা দিতে হয়। এই ফর্মটা কোম্পানির নিজস্ব ফর্ম। ইন্সুরেন্স কোম্পানির ফর্ম নয়।
২) যখন একজন কর্মচারী এই সুবিধা নেবার সম্মতি জানায়, তখন থেকে অফিস সেই কর্মচারির পক্ষ থেকে বীমা কোম্পানিকে প্রিমিয়াম দেওয়া শুরু করে। কর্মচারির নাম, আই ডি নম্বর, পরিবারের সদস্যদের নাম ইত্যাদি বীমা কোম্পানির কাছে জমা দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, যেসব কর্মচারী এই সুবিধা নিতে অস্বীকৃতি জানায় তাদের পক্ষ থেকে অফিস কোন বীমা প্রিমিয়াম প্রদান করে না।
৩) এই সুবিধার আওতায় চিকিৎসার খরচ দাবি করার দুটি প্রক্রিয়া আছে। প্রথমটি নিম্নরূপঃ
কর্মচারী বা তার পরিবারের সদস্যরা যদি কখনো অসুস্থ হয়, তখন সেই অসুস্থতার চিকিৎসা বাবদ যে খরচ হয়েছে সেই খরচের কাগজপত্র (প্রেসক্রিপশন, ওষুধ কেনার রশিদ, টেস্টের কাগজ ইত্যাদি) বীমা কোম্পানির একটি ওয়েবসাইটে আপলোড করে দিতে হয়। পরবর্তীতে বীমা কোম্পানি অফিসের সাথে যোগাযোগ করে, কর্মচারির পরিচয় ভেরিফাই করে নেয়। কর্মচারিকে ভেরিফাই করা হয়ে গেলে এবং বীমা কোম্পানির অন্যান্য শর্তাদি পুরণ হলে, বীমা কোম্পানি সরাসরি কর্মচারীর ব্যাংক একাউন্টে মোট খরচের একটা অংশ (বীমার কভারেজ) পাঠিয়ে দেয়।
৪) দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপঃ
কোন অসুস্থতার কারণে কর্মচারী যদি বীমা কোম্পানির তালিকাভুক্ত কোন হাসপাতালে ভর্তি হতে চায়, তাহলে ভর্তি হবার আগেই কর্মচারিকে বীমা কোম্পানিকে তার ভর্তি হবার পরিকল্পনা জানাতে হবে এবং বীমা কোম্পানি তাকে ই-মেইল/এস এম এস-এর মাধ্যমে একটি সম্মতি প্রদান করবে। ভর্তি হবার সময়েই সম্মতিপত্রটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেখাতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন কর্মচারী থেকে বীমা কভারেজের টাকাটা বাদ দিয়ে বাকি অংশ বিল করবে এবং যে অংশ বাকি থেকে গেল সেটা ইন্সুরেন্স কোম্পানি থেকে আদায় করে নিবে।
৫) কোম্পানি এই বীমা সুবিধা কর্মচারিদেরকে তাদের কাজের বিনিময়ে একটি সুবিধা হিসেবে দিচ্ছে যা অনেকটা পারিশ্রমিকের মতোই। এছাড়া বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, চাকুরিরত থাকাকালীন কোন কর্মচারি দুর্ঘটনা বা মৃত্যুর সম্মুখীন হলে কোম্পানি কিছু ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকে। এই স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে কোম্পানি এই ধরণের ক্ষতিপূরণ দেবার একটা বন্দোবস্ত রেখেছে।
এখন প্রশ্ন হল, উপরে বর্ণিত দুই প্রক্রিয়া অনুযায়ী স্বাস্থ্য বীমা সুবিধাটা গ্রহণ করা কি কর্মচারীদের জন্য জায়েজ হবে? এটা কি তাদের কাজের বিনিময় পারিশ্রমিক হিসেবে গণ্য করার কোন সুযোগ আছে? নাকি কর্মচারি নিজেও এখানে সুদী প্রক্রিয়া এবং সুদের লেনদেনের মধ্যে জড়িত হয়ে যাচ্ছে?

1 Answer

0 votes
by (737,820 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
বীমা নাজায়েয ও হারাম। কেননা কম্পানির পক্ষ্য থেকে মাসিক কিস্তিতে যে টাকা উসূল করা হয়, সেটা মূলত কম্পানির নিকট ঋণ হিসেবে থাকে। এবং পরবর্তীতে এ জমাকৃত টাকা তথা ঋণের বিপরিতে যে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা হয়,সেটা সুদ। আর সুদ হারাম।

দ্বিতীয়ত বীমার বিষয়টা শর্ত তথা গ্রাহকের কোনো অঘটনের সাথে চুক্তিবদ্ধ। আর শর্তের সাথে কোনো ঋণের আদাণ-প্রদাণ জায়েয না বরং হারাম।

তৃতীয়ত,বীমার টাকা দেড়ীতে গ্রাহকের হস্তগত হওয়ার শর্ত থাকে।আর ঋণের মধ্যে শর্তের মাধ্যমে দেড়ীতে লেনদেনের সমাপ্তি বিশুদ্ধ নয়।
তাছাড়া বীমা কম্পানি গ্রাহকের নিকট থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে সেই টাকা দিয়ে সুদি লেনদেনে জড়িয়ে থাকে।

সুতরাং এসমস্ত কারণ বিবেচনায় ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, জীবন বীমা করা এবং বীমা কম্পানিতে চাকুরী করা জায়েয হবে না।(আহসানুল ফাতাওয়া-৭/২৪) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1204

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সরকারি বাধ্যতামূলক বীমা ব্যতিত বাদবাকী সকল প্রকার বীমা নাজায়েয ও হারাম। যদি চাকুরীতে জয়েন হতে হলে, বীমাতে জড়িত হতে হয়, তাহলে বীমাতে আপাতত জয়েন হয়ে যাবেন। কিন্তু বীমা থেকে কোনো প্রকার সুবিধা গ্রহণ করা জায়েয হবে না। যদি বীমা থেকে কোনো প্রকার সুযোগসুবিধা গ্রহণ না করেন, তাহলে আপনার চাকুরী জায়েয হবে, এবং চাকুরী করার পর যে বেতন পাবেন, সেটা হারাম হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...