আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
আমি জেনারেল পড়ুয়া, এইচএসসি ২৪। ভর্তি পরীক্ষার সময় আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে হেদায়েত পেয়েছি।সহশিক্ষা ও ফ্রি মিক্সিং সম্পর্কে জানার পর থেকে মনের ভেতর অশান্তি কাজ করতো। তিন জায়গায় ভর্তি পরীক্ষাও দিয়েছি কিন্তু সেখানে পর্দা লঙ্ঘন করা হয়েছে, পুরুষ শিক্ষক এসে নিকাব খুলতে বাধ্য করেছে এবং পরীক্ষার পুরো সময়টা নিকাব খুলে রাখতে হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে মনের অশান্তি আরো বেড়ে গেছে, আমি যদি ভার্সিটির ফ্রি মিক্সিং এ যাই আমার ভয় হয় ইমান হারা হয়ে যাওয়ার, ফিতনায় জড়িয়ে পড়ার। আমি সহশিক্ষা ছেড়ে দিয়েছি আলহামদুলিল্লাহ এবং আলিম কোর্সে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু বাসায় নারাজ আমার উপর। বিশেষ করে আমার পিতা, উনি এতটাই নারাজ যে আমাকে নিজের সন্তান হিসেবে অস্বীকার করেছেন। আমার সাথে ভালো করে কথা বলেন না। আমার মায়ের সাথেও দূরব্যবহার করেন। এমনকি একদিন আমার মা এসে আমাকে বলেছেন আমি যদি ভার্সিটিতে না পড়ি তাহলে আমার পিতা আমার মাকে তালাক দিবেন।আরেক দিন আমার সামনেই আমার মাকে আমার পিতা বলেছেন, আমি কথা শুনি না, নষ্ট হয়ে গেছি, আমাকে আমার মা মানুষ করতে পারেন নি তাই তালাক দিয়ে দিবেন। বিষয় গুলো মানসিক ভাবে আমাকে খুব পীড়া দিচ্ছে। তবুও ধৈর্য ধরে আছি। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে --

১.আমি ফিতনা থেকে বাঁচতে সহশিক্ষা ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাতে পিতার অবাধ্য হওয়াটা কি জায়েজ হয়েছে?
২.বাসায় কোনো অশান্তি হলেই আমার বড় বোন দোষারোপ করে সব অশান্তি আমার কারণে হচ্ছে। এখন আমার করণীয় কি!  আমি সহশিক্ষায় ফিরতে চাইছি না, কারণ আমার খুব আশঙ্কা যে ওই পরিবেশে গেলে আমার হেদায়েত আমি হারিয়ে ফেলবো। আর মহিলা কলেজেও পুরুষ শিক্ষক, কর্মচারি থাকে, পরীক্ষার সময় নিকাব খুলতে হয়, অনেক ক্ষেত্রেই মহিলা দ্বারা চেহেরা শনাক্ত করেন না অনেক জায়গায়, এসবকারণে মহিলা কলেজে ভর্তির সাহস  ও ইচ্ছা কোনোটিই নেই আমার।
৩.আমি বুঝাতেও পারতেছি না, আমি কিছু বুঝাতে গেলে আমাকে কটুক্তি করে, বলে আমি একাই দ্বীন বুঝি দুনিয়ায় আর কেউ দ্বীন বুঝে না। আমার কথার কোনো মূল্যায়ন নেই। আমি ভালো কথা বললেও রেগে যান। তাই আমি নিজে থেকে কোনো কথা বলি না। অনেক সময় মনের মাঝে বিরক্তি আসে, রাগ হয় প্রকাশ করি না যদিও তবুও আল্লাহ তো অন্তরের বিষয় এ অবগত। আমার মনের মাঝে যে বিরক্তি আসে এর জন্য কি আমি গুনাহগার হবো, এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?

৪.আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের হেদায়েত দেন। আবার এটাও দোয়া করি আল্লাহ যেন আমাকে এমন ব্যবস্থা করে দেন যেন তাদের থেকে দূরে থাকতে পারি। পিতার থেকে দূরে থাকার জন্য দোয়া করা কি উচিত হচ্ছে?
পরামর্শ দিবেন ইনশাআল্লাহ। জাযাকুমুল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (693,030 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
জেনারেল শিক্ষা অর্জন সম্পর্কে আমরা ইতি পূর্বে বলেছিলাম যে, 
বলা যায় মুসলিম দেশের মুসলিম সরকারের জন্য ওয়াজিব যে,অচিরেই পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা।
প্রয়োজনে এ জন্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করা সমস্ত মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য।
কিন্তু যতদিন পর্যন্ত এই পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।
১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।
২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।(ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)(শেষ)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/434


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যদি মনে করেন যে, সহশিক্ষা ব্যবস্থাতে আপনার জন্য দ্বীন পালন কখনো সম্ভবপর হবে না, তাহলে আপনার জন্য সহশিক্ষাতে যাওয়া জায়েয হবে না। আপনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন একাডেমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার। প্রয়োজনে আপনি মহিলা কলেজেও ভর্তি হতে পারেন। যদি শতচেষ্টার পরও আপনার জন্য দ্বীন পালন সম্ভব না হয়, তাহলে আপনার জন্য সহশিক্ষাতে যাওয়া কখনো জায়েয হবে না। এতে যদি আপনার পরিবারের লোকজন নারাজও হয়, তাতেও আপনার কোনো গোনাহ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...