ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
বুরাইদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন যে, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম, এমতাবস্থায় তাঁকে আমি বলতে শুনেছি যে, “তোমরা সূরা বাক্বারা শিক্ষা কর, কেননা, এ দু’টি মনোহর জ্যোতি; আর তা শিক্ষা করাতে কল্যাণ রয়েছে এবং তা পরিত্যাগ করাতে পরিতাপ রয়েছে। আর বাতিলপন্থীগণ (যাদুকররা) এটি (মোকাবেলা করতে) সক্ষম হবে না।”
এরপর তিনি কিছু সময় চুপ করে থাকলেন। অত:পর তিনি বললেন: “তোমরা সূরা বাক্বারাহ ও আলে ইমরাণ শিক্ষা কর, কেননা, সে দুঁটি যেন সমুজ্জল জ্যোতি। কেননা, এ দুটি কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে তার পাঠকের জন্য যেন সে দুটি ’গামামা’ তথা দু’ খণ্ড মেঘ- কিংবা (তিনি বলেছিলেন) সে দুটি ’গায়ায়া’- তথা মেঘ বা বাদল; কিংবা যেন সে দুটি ডানা বিস্তারকারী পাখীর দুটি ঝাঁক।
কিয়ামতের দিন যখন কবর ফেটে যাবে তখন কুরআন তার পাঠকের নিকট পর্যুদস্ত লোকের অবয়বে উপস্থিত হয়ে বলবে, তুমি কি আমাকে চিনতে পারছ? তখন লোকটি বলবে, নাতো, আমি তো তোমাকে চিনি না। তখন কুরআন বলবে, আমিই তোমার সাথী, কুরআন। এই আমিই তোমাকে দিনে পিপাসার্ত-পরিশ্রান্ত করেছি এবং রাতে বিনিদ্র করেছি। আর প্রত্যেক ব্যবসায়ীর ব্যবসায় মুনাফা লাভ করে, আর আজকে তুমিও তোমার সকল ব্যবসার মুনাফা লাভ করবে। তখন তার ডান হাতে রাজত্ব দান করা হবে, তার বাম হাতে অমরত্ব দান করা হবে, আর তার মাথায় মর্যাদা (এর মুকুট) পরানো হবে। আর তার মাতা-পিতাকে দু’প্রস্থ পোশাক পরিধান করানো হবে, যা দুনিয়াতে তাদের জন্য তৈরী করা হয়নি। তখন তারা উভয়ে বলবে, আমাদেরকে এ পোশাক পরিধান করানো হলো (কেন)? তখন তাদের উভয়কে বলা হবে, তোমাদের উভয়ের সন্তানদের কুরআনকে গ্রহণ করার জন্য। তখন তাকে (কুরআন পাঠককে) বলা হবে: তুমি পাঠ করতে থাকে এবং জান্নাতের সিড়ি ও কামরা বেয়ে উপরে আরোহন করতে থাকো। তার দ্রুত বা ধীর পাঠ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার আরোহন করা চলতেই থাকবে।”[আহমাদ, আল মুসনাদ ৫/৩৪৮; ইবনু আবী শাইবা ১০/৪৯২-৪৯৩ নং ১০০৯৪; ইবনু মাজাহ, দু’আ ৩৭৮১; হাকিম নং ২০৫৭; আব্দুর রাযযাক নং ৬০১৪]
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) দুনিয়াবি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কুরআন তিলাওয়াত করলে আখেরাতেও এর সওয়াব পাওয়া যাবে।
(২) সূরা বাকারা এবং সূরা আল ইমরান দু'টি পড়তে পারলে তো নতুবা নতুবা একেকদিন একেক সূরা পড়ে নিবেন।
(৩) সময়ের অভাবে পড়তে পারেননি, আল্লাহর কাছে বলবেন, তাহলে আর মাহরুম হবেন না।
(৪) একেকদিন একেক সূরা পড়ে নিবেন। বিশেষ করে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের পৃথক ফযিলত হাদীসে এসেছে। সুতরাং সময় সুযোগ না থাকলে শেষ দুই আয়াত পড়ে নিবেন।