আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
35 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমাতিল্লাহি ওবারাকাতুহ।

উস্তাদ, বিভিন্ন সময় আমাদের দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণের দরকার পরে। তখন যদি আমরা ঐ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য/ঐ কাঙ্ক্ষিত জিনিস পাওয়ার জন্য বিশেষ কোনো আমল করি তাহলে কী ঐ আমলের প্রতিদান আখিরাতেও পাবো নাকি দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণের সাথে সাথে ঐ আমলের প্রতিদান ও শেষ হয়ে যাবে?যেমন :কখনো কখনো আমরা বিপদে পড়লে সেই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য দুরুদ, ইস্তেগফার, তাহাজ্জুদ, আসমাউল হুসনা, দোয়া কবুলের যত গ্রহণযোগ্য আমল আছে সেগুলো করি।কখনো রিজিকের সমস্যা সমাধানের জন্য,কখনো বা উত্তম বিবাহের জন্য বিশেষ আমল করি যেগুলো সর্বাবস্থায় আমরা তেমন ভাবে পড়ি না যেভাবে বিপদে পড়লে/প্রয়োজন পূরণের জন্য পড়ি। যেহেতু আমরা শুধু বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য/কাঙ্ক্ষিত জিনিস পাওয়ার জন্য আমল করছি তাহলে কাঙ্ক্ষিত জিনিস পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের প্রতিদান পাওয়া শেষ হয়ে যাবে নাকি পরকালেও এর পুরষ্কার পাবো।

২.এক হাদিসে দেখেছিলাম যে ব্যক্তি সূরা বাকারা ও সূরা আল ইমরান প্রতিদিন তিলাওয়াত করবে কিয়ামতের দিন তার তাকে ছায়া দিবে।এখন প্রশ্ন হচ্ছে সূরা বাকারা আর সূরা আল ইমরান দুটিই তো বড় বড় সূরা দুটি প্রতিদিন কীভাবে পড়বো?
৩.সূরা বাকারা জীন,যাদু,এসব প্যারা নরমাল সমস্যা সমাধানের জন্য অনেক উপকারী+হতাশা দূর করার ক্ষেত্রেও কাজে লাগে সূরা বাকারা রেখে যখন সূরা আল ইমরান পড়বো তখন কী সূরা বাকারার এই বরকত গুলো থেকে মাহরুম হয়ে যাবো না উস্তাদ?

৪.সূরা আল ইমরান আর সূরা বাকারা যদি একটা শেষ করে আরেকটা ক্রমান্বয়ে পড়তে থাকি তাহলে পুরো কুরআন কখন, কীভাবে পড়বো উস্তাদ?

আমি সূরা বাকারার বরকত থেকে কোনো ভাবেই মাহরুম হতে চাই না। সূরা আল ইমরান আর বাকারার এই দুটির সওয়াব ও পেতে চাই সাথে পুরো কুরআন ও খতম দিয়ে যেতে চাই । কিন্তু সূরা বাকারা তেলাওয়াত করতে গিয়ে অন্যগুলো করতে পারছি না তাই কীভাবে কী করবো বুঝতে পারছি না উস্তাদ!আমাকে একটা গাইডলাইন তৈরি করে দিলে ভালো হতো।

জাজাকিল্লাহু খইরান উস্তাদ

1 Answer

0 votes
by (714,510 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
বুরাইদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন যে, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম, এমতাবস্থায় তাঁকে আমি বলতে শুনেছি যে, “তোমরা সূরা বাক্বারা শিক্ষা কর, কেননা, এ দু’টি মনোহর জ্যোতি; আর তা শিক্ষা করাতে কল্যাণ রয়েছে এবং তা পরিত্যাগ করাতে পরিতাপ রয়েছে। আর বাতিলপন্থীগণ (যাদুকররা) এটি (মোকাবেলা করতে) সক্ষম হবে না।”

এরপর তিনি কিছু সময় চুপ করে থাকলেন। অত:পর তিনি বললেন: “তোমরা সূরা বাক্বারাহ ও আলে ইমরাণ শিক্ষা কর, কেননা, সে দুঁটি যেন সমুজ্জল জ্যোতি। কেননা, এ দুটি কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে তার পাঠকের জন্য যেন সে দুটি ’গামামা’ তথা দু’ খণ্ড মেঘ- কিংবা (তিনি বলেছিলেন) সে দুটি ’গায়ায়া’- তথা মেঘ বা বাদল; কিংবা যেন সে দুটি ডানা বিস্তারকারী পাখীর দুটি ঝাঁক।

কিয়ামতের দিন যখন কবর ফেটে যাবে তখন কুরআন তার পাঠকের নিকট পর্যুদস্ত লোকের অবয়বে উপস্থিত হয়ে বলবে, তুমি কি আমাকে চিনতে পারছ? তখন লোকটি বলবে, নাতো, আমি তো তোমাকে চিনি না। তখন কুরআন বলবে, আমিই তোমার সাথী, কুরআন। এই আমিই তোমাকে দিনে পিপাসার্ত-পরিশ্রান্ত করেছি এবং রাতে বিনিদ্র করেছি। আর প্রত্যেক ব্যবসায়ীর ব্যবসায় মুনাফা লাভ করে, আর আজকে তুমিও তোমার সকল ব্যবসার মুনাফা লাভ করবে। তখন তার ডান হাতে রাজত্ব দান করা হবে, তার বাম হাতে অমরত্ব দান করা হবে, আর তার মাথায় মর্যাদা (এর মুকুট) পরানো হবে। আর তার মাতা-পিতাকে দু’প্রস্থ পোশাক পরিধান করানো হবে, যা দুনিয়াতে তাদের জন্য তৈরী করা হয়নি। তখন তারা উভয়ে বলবে, আমাদেরকে এ পোশাক পরিধান করানো হলো (কেন)? তখন তাদের উভয়কে বলা হবে, তোমাদের উভয়ের সন্তানদের কুরআনকে গ্রহণ করার জন্য। তখন তাকে (কুরআন পাঠককে) বলা হবে: তুমি পাঠ করতে থাকে এবং জান্নাতের সিড়ি ও কামরা বেয়ে উপরে আরোহন করতে থাকো। তার দ্রুত বা ধীর পাঠ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার আরোহন করা চলতেই থাকবে।”[আহমাদ, আল মুসনাদ ৫/৩৪৮; ইবনু আবী শাইবা ১০/৪৯২-৪৯৩ নং ১০০৯৪; ইবনু মাজাহ, দু’আ ৩৭৮১; হাকিম নং ২০৫৭; আব্দুর রাযযাক নং ৬০১৪]


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) দুনিয়াবি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কুরআন তিলাওয়াত করলে আখেরাতেও এর সওয়াব পাওয়া যাবে।
(২) সূরা বাকারা এবং সূরা আল ইমরান দু'টি পড়তে পারলে তো নতুবা নতুবা একেকদিন একেক সূরা পড়ে নিবেন।
(৩) সময়ের অভাবে পড়তে পারেননি, আল্লাহর কাছে বলবেন, তাহলে আর মাহরুম হবেন না।
(৪) একেকদিন একেক সূরা পড়ে নিবেন। বিশেষ করে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের পৃথক ফযিলত হাদীসে এসেছে। সুতরাং সময় সুযোগ না থাকলে শেষ দুই আয়াত পড়ে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...