আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
314 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
উস্তাদ,অনলাইন কিছু ক্লাসে হালকা মিউজিক এড করে তারা ক্লাস করায় ঐ ক্লাসটা আবার আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও এখন আমার ঐ ক্লাস করা কী জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামের দৃষ্টিতে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার হারাম। যদি কেউ অনলাইন ক্লাশের সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে বাদ্যযন্ত্রের বিভিন্ন সুর বসিয়ে দেয়, সেটাও গুনাহ হবে।
,
বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত নাফে’ রাহ. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার চলার পথে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বাঁশির আওয়াজ শুনলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুই কানে আঙ্গুল দিলেন। কিছু দূর গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, হে নাফে’! এখনো কি আওয়াজ শুনছ? আমি বললাম হ্যাঁ। অতঃপর আমি যখন বললাম, এখন আর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না তখন তিনি কান থেকে আঙ্গুল সরালেন এবং বললেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলার পথে বাঁশির আওয়াজ শুনে এমনই করেছিলেন। -মুসনাদে আহমদ হাদীস : ৪৫৩৫; সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪৯২৪ বিখ্যাত তাবেয়ী মুজাহিদ রাহ. থেকেও এমন একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।-ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৯০১
,
নাসাঈ ও সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত আছে, একদিন হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বাজনাদার নুপুর পরে কোনো বালিকা আসলে আয়েশা রা. বললেন, খবরদার, তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।-সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪২৩১; সুনানে নাসাঈ হাদীস : ৫২৩৭ সহীহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ঘণ্টি, বাজা, ঘুঙুর হল শয়তানের বাদ্যযন্ত্র।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২১১৪ মৃদু আওয়াজের ঘণ্টি-ঘুঙুরের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আধুনিক সুরেলা বাদ্যযন্ত্র,মিউজিকের বিধান কী হবে তা খুব সহজেই বুঝা যায়। 
,
(ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন) একবার ‘আবদুল ক্বায়িসের প্রতিনিধিদল বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কিসে করে পান করব? তিনি বলেন, তোমরা লাউয়ের খোলের পাত্রে, তৈলাক্ত পাত্রে এবং কাঠের পাত্রে পান করবে না। তোমাদের কলসে ‘নাবিজ’ প্রস্তুত করো। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কলসের নাবিজে যদি তেজি ভাব আসে? তিনি বলেন, তাতে পানি ঢেলে দাও। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! (পূর্বের অনুরূপ)! তিনি তাদের তৃতীয় বা চতুর্থবারে বলেন, তা ঢেলে ফেলে দাও। অতঃপর তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার ওপর হারাম করেছেন অথবা হারাম করা হয়েছে মদ, জুয়া এবং যাবতীয় বাদ্যযন্ত্র। তিনি আরো বলেন, নেশা উদ্রেককারী সব জিনিস হারাম। সুফিয়ান (রহ.) বলেন, আমি আলী ইবনে বাজিমাকে ‘কুবাহ’ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তা হলো তবলা বা ঢোল। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৯৬)
,
কিছু মানুষ দাবি করেন, বাদ্যযন্ত্র,মিউজিক জায়েজ। এর পক্ষে অনেক মনীষী বইপুস্তক লিখে গেছেন। সে হিসেবে তাঁরা হয়তো, প্রশ্নে উল্লেখিত অনলাইন  ক্লাশের ভিডিওতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক লাগানো জায়েজ বলার চেষ্টা করবেন। তাঁদের এই প্রশ্নের জবাব রাসুল (সা.) নিজেই দিয়ে গেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমি কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫৯০)
,
বাদ্য-বাজনা শোনা নাজায়েয। তাই হামদ-নাত,অনলাইন কোনো ক্লাশের সাথে বাদ্য-বাজনা থাকলে ঐ হামদ-নাত,অনলাইন ক্লাশ শোনাও জায়েয হবে না। 

 তাই এ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। তবে হামদ-নাত, গজল,অনলাইন ক্লাশ  যদি সম্পূর্ণ বাজনা ও মিউজিক মুক্ত হয়, শরীয়ত পরিপন্থী যদি কোনো কিছু না হয় তাহলে তা দেখা জায়েয হবে।
-সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৯০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৬৮৫; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৬৯০৮; 

(কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে যদি ঐ হালকা মিউজিক এর আওয়াজ কান পর্যন্ত না আসে,শুধু ক্লাশের আওয়াজ আস্তে হলেও কান পর্যন্ত আসে তাহলে কোনো সমস্যা নেই।)      
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ক্লাশের সাথে উক্ত মিউজিক এড করা থেকে হেকমতের সহিত বুঝাইতে হবে।

প্রয়োজনের ভিত্তিতে এতোদিন মিউজিক যুক্ত যেসব ক্লাশ  করেছেন,এর জন্য আল্লাহর কাছে তওবা ইস্তেগফার করতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিবেন,ইনশাআল্লাহ।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...